শনিবার, ১২ Jul ২০২৫, ১১:০১ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক নিউজ ডেস্ক :: পাকিস্তানে চলন্ত ট্রেনে এক বিস্ফোরণ থেকে আগুন লেগে নিহত হয়েছেন অন্তত ৭৩ জন। আহত হয়েছেন আরো ৪০ জন। হতাহতদের মধ্যে বেশকিছু নারী ও শিশুও রয়েছে। অনেকের অবস্থা গুরুতর। ফলে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ট্রেনের মধ্যেই তাবলীগের এক লোক নিজের বহন করা গ্যাস সিলিন্ডারে নাস্তা তৈরি করতে গেলে এই বিস্ফোরণ ঘটে। পাকিস্তানের ট্রেনে গ্যাস সিলিন্ডার বহন সমপূর্ণ নিষিদ্ধ। যাত্রীদের একটা বড় অংশই ছিলেন পাকিস্তানের তাবলীগ জামাতের সদস্য।
তারা তাদের এক বার্ষিক সমাবেশে যোগ দিতে ট্রেনে করে লাহোর যাচ্ছিলেন। রেল কর্মকর্তা নাবিলা আসলাম জানান, সিলিন্ডারটি লুকিয়ে ট্রেনে ঢোকানো হয়েছে।
পাঞ্জাবের রহিম ইয়ার খান জেলার ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় লিয়াকতপুর শহরের কাছে বৃহসপতিবার সকালে তেজগাম এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটিতে ওই সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পাকিস্তানের রেলমন্ত্রী শেখ রশিদ জানান, বৃহসপতিবার সকালে ট্রেনের মধ্যে নিজস্ব গ্যাস সিলিন্ডারে নাস্তা তৈরির সময় সেটি বিস্ফোরিত হয়ে আগুনে অন্তত তিনটি বগি পুড়ে যায়। ওই গ্যাস সিলিন্ডারটি ট্রেনের ছিল না। রশিদ জানান, অনেকে জ্বলন্ত ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। ঘটনায় আহতদের অনেকের অবস্থা গুরুতর। তাদের নিকটবর্তী স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এক ভিডিও বার্তায় রশিদ জানান, মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৫ লাখ পাকিস্তানি রুপি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া আহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার পাকিস্তানি রুপি করে দেয়ার কথাও জানান তিনি। রেল মন্ত্রণালয় হতাহতদের নাম তালিকাভুক্ত করেছে। তিনি বলেন, এই দুর্ঘটনার দায় রেল কর্তৃপক্ষের। কেননা, তারা যাত্রীদের ব্যাগ যথাযথভাবে তল্লাশি করতে ব্যর্থ হয়েছে।
রহিম ইয়ার খান শহরের ডেপুটি কমিশনার জামিল আহমেদ জানান, ঘটনায় পুড়ে যাওয়া বগিগুলোয় তাবলীগ জামাতের যাত্রীরা ভ্রমণ করছিলেন। স্থানীয় উদ্ধারকর্মীরা আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও মোতায়েন করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে আহতদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার নির্দেশনা দিয়েছেন। ঘটনাটি নিয়ে একটি তদন্ত চালু হয়েছে।
পাকিস্তানে প্রায়ই রেল দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। তিন মাস আগে সাদিকাবাদে এক যাত্রীবাহী ট্রেন ও মালগাড়ির মধ্যে সংঘর্ষে ২০ জনের বেশি নিহত হয়। আহত হন আরো ৮০ জন। এর আগে, জুন মাসে হায়দ্রাবাদে অপর এক ট্রেন ও মালগাড়ির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দুইজন প্রাণ হারান।
Leave a Reply