শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক::
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী দুই মাসের মধ্যে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সব অপশক্তিকে পরাজিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে এবং দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘স্বাস্থ্য খাতের বিগত ১০ বছরের সাফল্য উদযাপন ও ভবিষ্যৎ উন্নয়নে রোডম্যাপ এর কর্মপরিকল্পনা’ বিষয়ক জাতীয় কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের সম্পদ সীমিত। সেই স্বল্প সম্পদের মাধ্যমে বর্তমান সরকার ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। এর কারণ বর্তমান সরকার টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকতে পেরেছে। তাই সব সেক্টরেই দৃশ্যমান উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজমান। দেশের মানুষের সামনে আবারও সুযোগ এসেছে। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে পুনরায় সরকার গঠন করার সুযোগ করে দিতে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এখন সারা বিশ্বে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবীরা সে দেশে সমৃদ্ধি অর্জন করতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে বলেছেন। যে কোনো দেশ একদিনে সমৃদ্ধ হয় না। এর জন্য সময়ের প্রয়োজন। ভারতে নেহেরু দুই দশক সময় পেয়েছেন, সম্পদহীন সিঙ্গাপুরকে সমৃদ্ধ করতে লিকুয়াং ২৩ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। মাহাথির মোহাম্মদ প্রায় ২২ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছেন।
নাসিম বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রায় পাঁচ বছর সম্পন্ন করতে যাচ্ছি। এ সময় দেশের স্বাস্থ্য খাতকে উন্নত করতে, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে যেতে চেষ্টা করেছি। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে কাজ করেছি। বিগত সময়ে দেশে পর্যাপ্ত ডাক্তার, নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে আরও ৭ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে গ্রামে পদায়ন করা হবে। তাদের অবশ্যই কমপক্ষে ৩ বছর গ্রামে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আগামী ৮ তারিখে আরও সাড়ে ৫ হাজার নার্স নিয়োগ দেয়া হবে। দেশে এখন প্রয়োজনীয় চিকিৎসা অবকাঠামো ও জনবল রয়েছে। নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে মিডওয়াইফ নিয়োগ করা হয়েছে। মেডিকেল চিকিৎসার মান উন্নত করা হয়েছে। শুধুমাত্র আদালতের কারণে কিছু বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ঠিক করতে পারিনি। চেষ্টা করেছি এবং চেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, দেশের স্বাস্থ্য সেক্টরে যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। তবে এতে সন্তুষ্ট হলে চলবে না। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মরত সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। যাতে দেশের মানুষ সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়। দেশের মানুষ যেন চিকিৎসার জন্য অন্য কোথাও না গিয়ে বলে এদেশেই সর্বোচ্চ চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব জি এম সালেউদ্দিন, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
এছাড়া কনফারেন্সে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, ইউএনএফপিও, আইএমও’র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কনফারেন্সের একপর্যায়ে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ বগুড়া এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের পরিচালকের হাতে পুরস্কার তুলে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এ সময় শ্রেষ্ঠ জেলা হাসপাতাল হিসেবে পাবনা, টাঙ্গাইল এবং ফেনী জেলা হাসপাতালকে পুরস্কৃত করা হয়।আটটি বিভাগের শ্রেষ্ঠ হাসপাতাল হিসেবে নেত্রকোনা, ঝিনাইদহ, হবিগঞ্জ, জয়পুরহাট, খাগড়াছড়ি, রাজবাড়ী, ঠাকুরগাঁও এবং ভোলার ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালকেও পুরস্কৃত করা হয়।
এছাড়া উপজেলা পর্যায়ের কয়েকটি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকর্মীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ জাতীয় কিডনি হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।
Leave a Reply