মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক::
রাজশাহীতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিভাগীয় জনসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: যুগান্তর
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা দাবি না মানলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।
শুক্রবার বিকালে রাজশাহীর মাদ্রাসামাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিভাগীয় জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সরকার কারাগারে আটক করে রেখেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রেখেছে। অমানুষিক কষ্ট দিয়ে রেখেছে।
তিনি বলেন,আমাদের দাবি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। তা না হলে নির্বাচন হবে না।
ফখরুল বলেন, সব জাতীয় নেতারা আমরা এক হয়েছি। গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করার জন্য। কারণ গণতন্ত্র মানে দেশনেত্রী, দেশনেত্রী মানে গণতন্ত্র।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য, এই দেশের জন্য নিজের সারাটা জীবন উজার করে দিয়েছেন খালেদা জিয়া। অল্প বয়সে নিজের স্বামীকে হারিয়েছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্যাতিত হয়েছেন। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন।
জনসভার প্রধান বক্তা মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কথা খুব স্পষ্ট- নির্বাচনের সমান মাঠ তৈরি করতে হবে, সব দলকে সমান অধিকার দিতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে কাজ করতে দিতে হবে। অন্যথায় তফসিল, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।
সরকারের সব মন্ত্রীদের পদ ও সুযোগ-সুবিধা ত্যাগ করতে হবে। সব রাজনৈতিক দলকে সমতাভিত্তিক সুযোগ দিতে হবে। তবেই দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে। তবেই আমরা সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।
তিনি বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সারা দেশের বন্দি দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় নির্বাচনী এই তফসিল গ্রহণযোগ্য হবে না। আমরা আগেই এই তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে পারি না।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া। সরকার পুলিশ দিয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে। জনগণকে সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এদেশের মানুষ একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ও মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চায়।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্ত খালেদা জিয়া ছাড়া কোনো নির্বাচনেই অংশ নেবে না জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সামনে আরও ভয়াবহ সঙ্কট আসছে। দেশে গণতন্ত্র থাকবে কি থাকবে না এই সিদ্ধান্ত এবার দেশের জনগণকে নিতে হবে। আসন্ন সঙ্কটে দেশের অবস্থা কোথায় যাবে সেটাও নিয়ে তাদের ভাবতে হবে।
ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আমাদের এ লড়াই। দেশের জনগণকে মুক্ত করার এই লড়াইয়ে দেশের জনগণই আমাদের সঙ্গে রয়েছে।
এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা কি খালেদা জিয়ার মুক্তি চান? আপনারা কি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার চান? আপনারা কি ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চান? এ সময় সবাই হাত তুলে ফখরুলের সঙ্গে চাই চাই বলে আওয়াজ তুলেন।
এর আগে দুপুর ২টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভা শুরু হয়।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে জনসভায় যোগ দিতে পারেননি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তবে ঢাকা থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জনসভায় ব্ক্তব্য দেন তিনি।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুর সভাপতিত্বে জনসভায় যোগ দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, বিজেপির সভাপতি আন্দালিব রহমান পার্থ, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।
Leave a Reply