সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ অপরাহ্ন
মোঃ সানোয়ার হাসান সুনু: দীর্ঘ ১৮ বছর পর পূর্ণ মন্ত্রী পেয়ে খুশি জগন্নাথপুর দক্ষিণ সুনামগঞ্জবাসী তবে তারা নির্বাচনের পূর্বে মন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তাবায়ন চান। সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান কে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেব পরিকল্পনা মন্ত্রাণালয়ের দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসী আশা করছেন পূর্ন মন্ত্রী হিসেবে তিনি সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন সেই সাথে নির্বাচনে দেওয়া প্রতিশ্রুতির দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন। মন্ত্রী নির্বাচনের পূর্বে উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ বাসীকে দিয়েছিলেন। উল্লেখ্যযোগ্য প্রতিশ্রুতিগুলো হচ্ছে, জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় ১টি করে মহিলা কলেজ, একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, কৃষি ইনউস্টিউট, হারুনুর রশীদ হিরন মিয়া স্টেডিয়াম নির্মাণ, জগন্নাথপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ কে বিশ্ব বিদ্যালয় কলেজে রুপান্তর, জগন্নাথপুর সরকারি গার্লস হাই স্কুল ও স্বরূপচন্দ্র সরকরি বয়েজ হাই স্কুল এর শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ করে শিক্ষক সংকট দূর করে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা পড়ার মান উন্নয়ন করা, যোগযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, অত্র এলাকার হাওর রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সহ এলাকাবাসীর জীবন মান উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
এব্যাপারে পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান এর সাথে আলাপ হলে তিনি জগন্নাথপুর নিউজ ডটকমকে বলেন, প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে প্রতিশ্রুতি দেন সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন। আমার দেওয়া প্রতিটা প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো। আমি জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ কে একটি উন্নত ও আদর্শ উপজেলায় রূপান্তর করবো। এব্যাপারে সকলের দোয়া ও সহযোগিতা চাই।
জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-৩ নির্বাচনী আসন থেকে জয়ী হয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর পর আবার পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিলেন এম এ মান্নান।
এর আগে সর্বশেষ ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন এ নির্বাচনী এলাকার সাংসদ আওয়ামীলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুস সামাদ আজাদ। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় না আসায় বিরোধী দলের সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে তিনি মারা গেলে তাঁর এই শুণ্য আসনে উপনির্বাচনে চারদলীয় জোটের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী সাংসদ নির্বাচিত হন। নির্বাচনে চারদলীয় জোট প্রার্থী শাহিনুর পাশার নিকট সামান্য ভোটে পরাজিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এ মান্নান। এরপর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামীলীগের সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতিক নিয়ে এমএ মান্নান চারদলীয় জোট প্রার্থী মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীকে পরাজিত করে প্রথম সংসদ সদস্য হন। ২০১৪ সালে নির্বাচনে আবারও নৌকা নিয়ে এমএ মান্নান স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুস সামাদ ডনকে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হয়ে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সফলভাবে দু’টি মন্ত্রনালয় পরিচালনার মাধ্যমে একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও ফের নৌকা প্রতিকে এমএ মান্নান তৃতীয় বারের মতো জয়ী হন। স্বচ্ছ ইমেজের অধিকারী সজ্জন রাজনীতিবীদ এমএ মান্নান নতুন সরকারের মন্ত্রী পরিষদে এবার পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে স্থান পাওয়ায় এলাকাবাসী খুব-ই উৎফুল্ল। তাই এবার এ আসনের মানুষজন এ এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ সরকারের শাসনামলে ১৯৮৬ সালে এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়ে প্রয়াত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে সু-নামের সহিত দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তাঁর ছেড়ে দেয়া আসনে উপ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তার ভাই ফারুক রশীদ চৌধুরী অর্থ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৯৬ সালে আবদুস সামাদ আজাদ পররাষ্ট্র মন্ত্রী হন। দীর্ঘ ১৮ বছর পর এ আসনে আবারো পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে সজ্জন রাজনীতিবিদ এম এ মান্নান কে পাওয়া গেল।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি প্রবীণ নেতা সিদ্দিক আহমদ বলেন,সুনামগঞ্জ জেলার ৫ টি আসনের মধ্যে এ আসন থেকে আমরা একাধিকবার মন্ত্রী পেয়েছি। আবদুস সামাদ আজাদের মৃত্যুর পর মন্ত্রীত্ব নিয়ে শুন্যতা তৈরী হয়। দীর্ঘ ১৮ বছর পর পূর্ণ মন্ত্রী হয়ে এম এ মান্নান আমাদের সেই শুন্যতা পূরণ করলেন। এতে আমরা আনন্দিত।
Leave a Reply