শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ১০:২৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
হাসিনার বিচার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে মাওলানা সাঈদীর মামলার সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি ভোটাররা একটি সুস্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায় আছেন— কয়ছর আহমদ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন: কয়ছর এম আহমদ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে — কয়ছর এম আহমেদ শিগগিরই সরাসরি দেখা হবে: তারেক রহমান হারুন-বিপ্লবের সাত পদক বাতিল “রক্তের আখরে লেখা জুলাই বিজয় “ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও শহীদদের স্মরণে জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল জগন্নাথপুরে উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন সংগঠনের জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত জগন্নাথপুরে জামাতের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদযাপন

চিকিৎসকসহ নতুন আক্রান্ত ছয় সব মিলিয়ে ৩৩ আরো একজনের মৃত্যু

চিকিৎসকসহ নতুন আক্রান্ত ছয় সব মিলিয়ে ৩৩ আরো একজনের মৃত্যু

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: করোনা ভাইরাসে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে সরকারি হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিনজনে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরো ৬ জন। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩ জনে। নতুন আক্রান্ত
তিনজন নারী, তিনজন পুরুষ। আক্রান্তদের মধ্যে একজন চিকিৎসক ও দুই নার্স রয়েছেন। গতকাল বিকেলে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান। তিনি জানান, দেশে করোনা ভাইরাসে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ফলে দেশে এ ভাইরাসে মারা গেছেন মোট তিনজন। এর মধ্যে সর্বশেষ যিনি মারা গেছেন তার বয়স ৬০ বছরের বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় সন্দেহভাজন হিসেবে আরো ৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে আরো ৬ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সর্বমোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬২০ জনের। সবমিলিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩। এই ৩৩ জনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ জন। এর বাইরে আইসোলেশনে আছেন ৫১ জন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়োরেন্টিনে ৪৬ জন। ডা. ফ্লোরা জানান, নতুন করে আক্রান্ত ৬ জনের একজন স্বাস্থ্যকর্মী। এই নিয়ে দেশে তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর দেশে যে ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন তাদের ১৩ জনই বিদেশ থেকে এসেছেন। এর মধ্যে ইতালির ৬ জন, যুক্তরাষ্ট্রের ২ জন, ইউরোপের অন্যান্য দেশে থেকে ২ জন, বাহরাইন থেকে ১ জন, ভারত থেকে ১ জন এবং কুয়েত থেকে ১ জন এসেছেন। বাকি ২০ জন বিদেশ ফেরতদের সংস্পর্শে আক্রান্ত। তিনি বলেন, খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবেন না। এমনকি হাসপাতালেও যাবেন না। আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, দেশে আক্রান্তদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ পুরুষ, এক তৃতীয়াংশ নারী। এই ৩৩ জনের মধ্যে ঢাকার ১৫ জন, মাদারীপুরের ১০ জন ও নারায়ণগঞ্জের তিনজন রয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের টেস্টিং কিটের কোনো সংকট নেই। পিপিই আসছে প্রতিদিন। তবে নিজ নিজ উদ্যোগ জোরদার করতে হবে। ব্রিফিংয়ের শুরুতে করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে নাগরিকদের করণীয় তুলে ধরেন ডা. ফ্লোরা।
এর আগে গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, সারাবিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস নিয়ে চিন্তার বিষয় নয়। কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার কারণে সারা দেশে এখন প্রায় ১৮ হাজার মানুষ সেল্ফ কোয়ারেন্টিনে আছেন। মন্ত্রী আরো বলেন, করোনো শনাক্তকরণে এক লাখ কিট আমাদের হাতে আছে। কিট বা সরঞ্জাম নেই-এ বিষয় নিয়ে মানুষকে আতঙ্কিত করা ঠিক হবে না। তিনি দাবি করেন, অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা অনেক ভালো। আমরা যদি সেল্ফ কোয়ারেন্টিন বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন যথাযথভাবে নিতে পারি তাহলে ভয়ের কিছু নেই, করোনা ছড়াবে না। সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি। জেলা পর্যায়ে ডিসি, এসপি, ইউনিয়ন পর্যায়ে চেয়ারম্যান, মেম্বাররা কাজ করছেন। সিটি করপোরেশনের মেয়র, কমিশনাররাও কাজ করছেন। বিদেশফেরত ব্যক্তিদের সেল্ফ কোয়ারেন্টিন না মানার বিষয়ে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, যারা বিদেশ থেকে এসেছেন, তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জোর করে তাদের ধরে আনা হচ্ছে। কিন্তু তারা যদি নিজেরাই কোয়ারেন্টিনে থাকেন তাহলে আমরা তাদের সেবা দিতে পারবো, তাদের পরিবারকেও রক্ষা করতে পারবো। কিন্তু পালিয়ে বেড়ালে কোনোটাই সম্ভব নয়। তাদের (বিদেশফেরত) কোয়ারেন্টিনটা জরুরি উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীও ওয়াকিবহাল। তিনিও আমাদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা সেভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যা যা প্রয়োজন সেগুলোর ব্যবস্থা করছি। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সব ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দু-একটি চালু আছে। আশা করি তাও দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে। বিদেশফেরত বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, আপনাদের পূর্ণ চেষ্টা হবে কোয়ারেন্টিনে থাকা। প্রয়োজন অনুযায়ী আমরাই চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো। খাওয়া-দাওয়ারও ব্যবস্থা করবো। দেশের মানুষকে, আপনার নিজের পরিবারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না। মন্ত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর পরিবার-পরিজন নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণেরও কঠোর সমালোচনা করেন। এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধে আমরা স্কুল-কলেজ বন্ধ করে ছুটির ঘোষণা দেই। কিন্তু কী হলো, পরিবার-পরিজন নিয়ে সবাই কক্সবাজার-চট্টগ্রাম বেড়াতে গেলেন। এ বিষয়ে সবাইকে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিলো বলে মন্তব্য করেন। করোনার সংক্রমণরোধে মন্ত্রী ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোও সীমিত আকারে পালনের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমরা তো বন্ধ করে দিতে বলেনি, সীমিত আকারে পালনের কথা বলেছি। এটা তো সৌদি করেছে, আমিরাত করেছে, ইরান করেছে কিন্তু আমরা করতে পারিনি। বিষয়গুলো অনুধাবন করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম (পিপিই) সংকট সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে পারসোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্টের (পিপিই) এখনও তেমন প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, চীনে যখন করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছিল, তখন তাদের কাছেও পিপিই ছিল না। এখনও আমাদের পিপিই অতটা দরকার নেই।
মন্ত্রী জানান, করোনা পরীক্ষায় দেশে আরো ৮টি ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হচ্ছে। যন্ত্রপাতিও চলে এসেছে। এগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল ও ঢাকার বাইরে স্থাপন করা হবে।
বিএমএ’র করোনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন: এদিকে গতকাল দুপুরে বিএমএ ভবনে ‘করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) পরিস্থিতি, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বিদেশফেরত আত্মীয়দের ১৪ দিন ঘরে থাকতে উৎসাহিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হবেন না। বর্তমান সময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। ডা. মোস্তফা জালাল বলেন, ডেলটা মেডিকেল কলেজের এক চিকিৎসকের করোনা ভাইরাসের (কভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ এসেছে। সেই চিকিৎসক রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতলে ভর্তি আছেন। আক্রান্ত চিকিৎসক বিদেশ ফেরত এক ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪ চিকিৎসক হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। তারা এবং ডেলটার ওই চিকিৎসক পুরোপুরি সুস্থ আছেন। রোগীরা আমাদের সম্পদ, সেই সম্পদ আগলে রাখার দায়িত্ব আমাদের। রোগীরা ভালো না থাকলে, বেঁচে না থাকলে সমাজে বা এ পেশায় আমাদের উপস্থিতি ম্লান হয়ে যাবে। বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ), স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) ও ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সনাল ও অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বিএমএ এর মহাসচিব. ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com