শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ পূর্বাহ্ন
আমিনুল হক সিপন : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীনকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এতে অনেকের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এই শিক্ষা কর্মকর্তার নানাবিধ অনিয়ম-দূর্নীর্তি সম্পর্কিত প্রতিবেদন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও অদৃশ্য এক ছায়ায় ছিলেন তিনি বহাল তরিয়তে।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলায় সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন মোঃ জয়নাল আবেদীন।
যোগদানের পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিসাবে চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ সহ সোশ্যাল মিডিয়া ফেইসবুকে বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও ইতোপূর্বে নৈশ প্রহরী নিয়োগেও শিক্ষা কর্মকর্তা জয়নালের বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম- দুর্নীতির অভিযোগ। সম্প্রতি এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও স্বল্প দিনের মাথায় তা চাপা পড়ে যায় ।
এদিকে, দীর্ঘ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে এই শিক্ষা কর্মকর্তার উৎকোচ সম্পর্কিত নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৩ বছরের অধিক সময় ধরে জগন্নাথপুরে চাকরিতে বহাল তরিয়তে থাকেন ঐ শিক্ষা কর্মকর্তা। এরই মধ্যে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। একাধিক বাড়ি-গাড়ির মালিক ও হয়েছেন।
উৎকোচের লোভে তার নানাবিধ কর্মকান্ডে অনেক শিক্ষকের চাপা ক্ষোভ থাকলেও চাকুরীতে সমস্যায় পড়ার ভয় ছিল তাদের। অনেকেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে বহাল থাকতে জয়নাল আবেদীনের নানাবিধ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।
জানা গেছে, নিজ বলয়ের কিছু দালালদের মাধ্যমে দাপটের সাথে দিনের পর দিন ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছিলেন ওই শিক্ষা কর্মকর্তা। ।
অভিযোগ রয়েছে, প্রাক প্রাথমিকের খেলনা সামগ্রী নিজ হাতে ক্রয় করে নামেমাত্র স্কুলে বিতরণ, স্লীপের টাকায় ভাগ বসানো, স্কুলের ক্ষুদ্র মেরামতে বড় কর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে কমিশন নেয়া, বদলি বাণিজ্য ও গেল সপ্তাহে ই এফ টি ফরম বাবদ ২ শ’ টাকা করে ৭ শতাধিক শিক্ষকের কাছ থেকে আদায় করেন। গত ক’দিন ধরে তার বদলির গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। অবশেষে তাকে বদলি করা হলে তিনি মঙ্গলবার (১৬) ফেব্রুয়ারী দুপুরে নিরবে নতুন কর্মস্থল নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় চলে যান। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার লোকজনের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।
এদিকে, জগন্নাথপুর উপজেলায় যোগদানের পূর্বে তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। সে সময় তার বিরুদ্ধে দৈনিক যুগান্তরে দুর্নীতি সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
তদন্ত হলেই তার দুর্নীতির অজানা রহস্য উদঘাটন সম্ভব বলে মনে করছেন সচেতন মহল ।
Leave a Reply