শুক্রবার, ১১ Jul ২০২৫, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্টের ট্রফি উন্মোচন ও অভিষেক জগন্নাথপুরে সীমানা দেওয়াল নির্মাণ নিয়ে বিরোধ, সংঘর্ষে বিএনপি নেতার মৃত্যু  জগন্নাথপুরে কৃষি অধিদফতরের বীজ ও চারা বিতরণ কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, জানালেন অ্যাটর্নি জেনারেল জগন্নাথপুরে ধর্ষণের পর কিশোরীকে নদীরপাড়ে ফেলে গেল প্রেমিক! জগন্নাথপুরে মোবাইলের দোকানে দুঃসাহসিক চুরি জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির সভায় বক্তারা, কয়সর আহমদকে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন জগন্নাথপুরে সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলি বিনিময়কালে সেনেটারি মিস্ত্রি নিহত 

জগন্নাথপুরের হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প : নিয়মনীতিতে গাফলা

জগন্নাথপুরের হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প : নিয়মনীতিতে গাফলা

আমিনুল হক সিপন

চলতি বছর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কাজের নীতিমালার ধার ধারছে না বেশ কয়েকটি হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের লোকজন। কোনো কোনো স্থানে সঠিক নিয়মে কাজ হলে ও সঠিক নীতিমালা বাস্তবায়নে লেগে আছে গাফলা। এমনকি পিআইসি’র নির্ধারিত সময়ে কতটুকু কাজ বাস্তবায়িত হবে- এমন অভিযোগ সংশ্লিষ্ট হাওর পাড়ের কৃষকদের।

জানা গেছে, কয়েকটি পিআইসি’র সভাপতি, সদস্য সচিব ও সদস্যদের বাঁধ এলাকায় তাদের নিজস্ব জমিও নেই। হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মানে কোথায় কী রকম গাফলা হচ্ছে, এসব বিষয়ে মুখ খুললেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাওরপাড়ের কৃষকেরা। কয়েকটি হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কাজের মান,মাটির মান, মাটি ফেলতে বিলম্ব সহ নানা কারণে অকাল বন্যায় ফসলহানির শঙ্কা করছেন স্থানীয়রাও।

জগন্নাথপুর পওর শাখা সূত্রে জানা গেছে, পিআইসি(প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের মাধ্যমে ৭৫ কিলোমিটার হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার শুরু হয়েছে। চলতি বছর জগন্নাথপুরে ৩৭ টি প্রকল্পে কাজের বরাদ্দ ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু হলে চলতি মাসের ২৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কতটুকু কাজ সম্পন্ন হবে এ নিয়ে ও শঙ্কায় রয়েছেন অনেকে।

জগন্নাথপুর উপজেলার প্রধান শস্য ভান্ডার নলুয়া হাওরের কয়েকটি বাঁধ প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে নানাবিধ অনিয়ম।

তথ্য সংগ্রহের ধারাবাহিকতায় নলুয়ার হাওরের কয়েকটি প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে নানা অনিয়ম। এ হাওরের মাঝামাঝি স্থানে নির্মানাধীন নলুয়ার হাওরের পোল্ডার- ১ এর আওতাধীন  উপজেলার ১ নং প্রকল্প কামারখালে। কামারখাল নদীর দ্বার দিয়ে এখানকার হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প নির্মান হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকেরা জানান, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে নলুয়া হাওরে তলিয়ে যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম এ নদী। তাই বাঁধটির উচ্চতা আরো বাড়ানো উচিৎ ছিল। এদিকে, সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধটির কোথাও কাজের বিবরণ সংক্রান্ত সাইন বোর্ড নেই।

এ সময় স্থানীয় কৃষক ও হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প নির্মান শ্রমিক বৃদ্ধ রাশিদ মিয়া  জানান, প্রকল্পের লোকজন অধিক মুনাফা পেতে বাঁধের নিচুস্তরে বড় বড় মাটির চাকা দিয়েছেন। আর এর উপরের স্তরে মাটি বসানো হয়েছে। ফলে বর্ষাকালে মাটি নিচে নেমে যাওয়ার যথেষ্ঠ সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি পিআইসির সভাপতি শ্রমিকদের পুরো পারিশ্রমিক দিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন বলে  তিনি তাও জানান।

কিশোর শ্রমিক আলী হোসেন বলেন, এ প্রকল্পের পাশ্ব সমান করা ও অন্যান্য কাজের জন্য আমাদের সাথে ২০ হাজার টাকার চূক্তি ছিল। কিন্তু এখন পুরো টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন প্রকল্পের জয়নাল।

মুঠোফোনে জানতে চাইলে, সঠিক কোনো বক্তব্য দেননি  প্রকল্পের সভাপতি।

নলুয়ার হাওরের ২ নং প্রকল্প  দাশ নোয়াগাঁও ও হরিনাকান্দি গ্রাম দিয়ে কামারখাল নদী সংল্গগ্ন।

এখন পর্যন্ত অধিকাংশ স্থানে  মাটি ফেলা হয়নি। নির্ধারিত সময়ের মধ্য কতটুকু কাজ বাস্তবায়িত হবে- এ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

জানতে চাইলে এ পিআইসি’র সদস্য সচিব হাছন মিয়া বলেন, আমাদের কাজ চলমান। আশা করি খুব শিগগিরই মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হবে।

এ হাওরের ৩ নং প্রকল্প দাশ নোয়াগাঁও গ্রাম দিয়ে কামারখাল নদী সংল্গগ্ন স্থানে । সরেজমিনে দেখা যায়, স্থানীয় হৈর গোনার পাশ্ব পর্যন্ত মাটি ফেলা হয়। সেখান থেকে বৃহৎ স্থানজুড়ে এখন পর্যন্ত মাটি ফেলা হয়নি। এ প্রকল্পের কোথাও কাজের বিবরণ সংক্রান্ত সাইন বোর্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি।

দাশ নোয়াগাঁও গ্রাম নিবাসী কৃষক ছানা মিয়া বলেন, সঠিক সময়ে কাজ না হলে বৃষ্টির সময় এখানে গাড়ি দিয়ে কোনোভাবেই কাজ করা সম্ভব নয়। তিনি তাও বলেন, হাওর রক্ষা বাঁধ এলাকায় এ প্রকল্পের সভাপতির কোনো জমিজমা নেই।

বাঁধ সম্পর্কিত বিষয়ে মুঠোফোনে  জানতে চাইলে প্রকল্পের সভাপতি রনধীর কান্তি রান্টু বলেন, আমরা আশাবাদী যথাসময়ে কাজ সম্পূর্ন হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভূরাখালী গোদারাঘাট থেকে দক্ষিন দিক পর্যন্ত আরেকটি হাওর রক্ষা বাঁধে এ প্রকল্পের সভাপতি জড়িত রয়েছেন।

পানি উন্নয়ন  বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও প্রকল্প  বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, নিয়মিত আমরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছি।

এ ব্যাপারে বাপাউবো জগন্নাথপুর উপজেলা কাবিটা স্কীম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদি হাসান বলেন, নিয়মিত আমাদের তদারকি রয়েছে। কাজ ভালোভালে করার জন্য আমাদের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।

সুনামগঞ্জ হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হাওর রক্ষা প্রকল্পে অনিয়ম বন্ধের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। এক্ষেত্রে নলুয়ার হাওরে কোনো অনিয়ম হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com