রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কৃষকের টাকায় হাওরের ফসল ওঠার যাতায়াত সড়ক পাকাকরণ কাজ চলছে। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সরকারি সহায়তা না পেয়ে অবশেষে কৃষকদের টাকায় গত পাঁচ বছর ধরে সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বৃহস্পতিবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, জগন্নাথপুর পৌরসভার শেরপুর এলাকা থেকে নলুয়ার হাওরের হরতাজপুর সড়কটি পাকাকরণের জন্য এলাকাবাসি দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও সড়ক নির্মাণে কেউ কোন উদ্যোগ নেননি। বাধ্য হয়ে কৃষকরা নিজেদের অর্থ দিয়ে সড়ক পাকাকরণ কাজ শুরু করেন। ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কে ২০১৭ সালে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০০ ফুট পাকাকরণ কাজ হয়, ২০১৮ সালে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০০ ফুট, ২০১৯ সালে সাড়ে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে ৭০০ ফুট, ২০২০ সালে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এক কিলোমিটার ও চলতি বছর সাড়ে সাত লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০০ ফুট নির্মাণ কাজ করা হবে। গতকাল থেকে ওই সড়কের এলাকায় কাজ শুরু হয়।
এলাকাবাসি জানান, পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের ইকড়ছই, ছিলিমপুর, বলবল, ভবানীপুর, শেরপুর-যাত্রাপাশা, খালিকনগরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় আড়াই হাজার কৃষক পরিবার শেরপুর- হরতাজপুর সড়ক দিয়ে নলুয়া হাওরের বোরো ফসল ওঠান। বোরো মৌসুমকালে মাঠের পাকা ফসল তোলার সময় সড়কটি কাদাযুক্ত হয়ে পড়ে। এতে করে যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন কৃষকরা। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় এলাকাবাসী সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো সুফল পাননি। শেষে ফসলরক্ষায় পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯ নম্বর এই তিন ওয়ার্ডের কৃষকদের অর্থায়নে ২০১৭ সালে সড়কে পাকাকরণের কাজ শুরু হয়। সেই থেকে প্রতিবছর এই মৌসুমে কাজ শুরু হয়। গতকাল ওই সড়কের ত্রিশনামক এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে।
পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শেরপুর এলাকার বাসিন্দা লুৎফুর রহমান জানান, এ সড়ক দিয়ে নলুয়ার হাওরের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বোরো জমির ধান উত্তোলন হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটি কাদাযুক্ত হয়ে সব ধরনের যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, এলাকার কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে সড়ক পাকাকরণ কাজের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। ২০১৯ সালের তৎকালিন জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সড়কের কাজ পরিদর্শন করে এ বছর কমপক্ষে এক কিলোমিটার কাজ করার ঘোষণা দেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি।
শেরপুরের বাসিন্দা কাউন্সিলর ছমির উদ্দিন বলেন, হাওরের ফসল ওঠার পর বর্ষাকালে ডুবে যাওয়া কৃষকের জমি ফিসারির জন্য স্থানীয় কৃষককের লিজ দেওয়া হয়। আর ওই লিজের টাকায় প্রতিবছর সড়কে সামান্য সামান্য স্থান পাকা করা হচ্ছে। গত ৫ বছরে প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক কৃষকের অর্থে পাকা হয়েছে। এভাবে কাজ হলে কবে শেষ হবে তা বলা যাচ্ছে না।
স্থানীয় সরকার জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, সড়কটি পৌরসভার অংশে রয়েছে। এটি এলজিইডির আইতাবিহীন সড়ক। তবে সড়কটি গেজেট হলে আমরা নির্মাণ করতে পারব।
জগন্নাথপুর পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আক্তারুজ্জামান বলেন, সড়কটি পৌরসভার আওতাধীন কিনা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখব। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে উদ্যোগ নেব আমরা।
Leave a Reply