বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৪ অপরাহ্ন
ভ্যাকসিনের প্রতি মানুষের অনাস্থার কোনো কারণ নেই। এ মুহূর্তে ভ্যাকসিনের কোনো বিকল্প নেই। টিকা নিলেও ১৫ দিনের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কারণ টিকা গ্রহণের ১৪ থেকে ১৫ দিন পর শরীরে অ্যান্টিবডি (করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা) আসা শুরু করে। এজন্য টিকা নেওয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। গতকাল শুক্রবার একটি গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন করোনাভাইরাস শনাক্তের ‘জি র্যাপিড ডট ব্লট’ কিট উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীল। তিনি বলেন, টিকা নেওয়ার পর করোনায় আক্রান্ত হলে বড় বিপদের আশঙ্কা কম থাকে। তাছাড়া টিকা নেওয়ার পর শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে তা সবসময় থাকবে না। তবে মেমোরি সেল থেকে যাবে। পরবর্তীতে করোনায় আক্রান্ত হলেও সেই মেমোরি সেল দ্রুত অ্যান্টিবডি তৈরি করবে এবং করোনা থেকে সুরক্ষা দেবে।
ড. বিজন বলেন, ভ্যাকসিনের অ্যান্টিবডি তৈরি করতে কমপক্ষে ১৪ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে। কখনো আরও বেশি লাগে। মোটামুটি ১৫ দিন থেকে অ্যান্টিবডি আসা শুরু করে। ২৮ দিনে গিয়ে সবচেয়ে বেশি অ্যান্টিবডি থাকে। ভ্যাকসিন নেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে যদি আপনার শরীরে ভাইরাস প্রবেশ করে, তাহলে কিন্তু ডিজিজ (অসুখ) হবেই। সচিব যেদিন ভ্যাকসিন নিয়েছেন, এর কয়েক দিন আগে বা পরে হয়তো তার শরীরে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। ভাইরাসের ক্ষমতা অনেক বেশি, যা ভ্যাকসিন থেকে অ্যান্টিবডি আসতে আসতে তার শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে তার ক্ষতিটা নন-ভ্যাকসিনেটেড মানুষের মতো হবে না। আমার মনে হয়, তার রোগের তীব্রতা কম হবে।
টিকা নেওয়ার পরও সচিবের করোনায় আক্রান্ত হওয়া একটা নির্দেশক উল্লেখ করে ড. বিজন বলেন, টিকা নিলেই মনে করবেন না যে, সুরক্ষা চলে আসবে। অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থা মেনে চলতে হবে। এর বিকল্প নেই। টিকা দেওয়ার কমপক্ষে ২৮ দিন মাস্ক পরতেই হবে। সেকেন্ড ভ্যাকসিন দেওয়ার ২৮ দিন পর আপনারা মাস্ক পরা ধীরে ধীরে কমাতে পারেন। এর আগে মাস্ক পরা ছেড়ে দেবেন, এটা কল্পনাও করা যাবে না। সাধারণত ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ২৮ দিনের মাথায় যখন সর্বোচ্চ অ্যান্টিবডি আসে, তার পরবর্তী ২৮ দিনে অ্যান্টিবডি নেমে যায়। তাই ধীরে ধীরে নেমে আসার পর দ্বিতীয় ডোজ দিলে ভালো অ্যান্টিবডি হয়। যা ছয় মাস থেকে এক বছর নির্দ্বিধায় আপনাকে সুরক্ষা দেবে।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিনের প্রতি মানুষের অনাস্থার কোনো কারণ নেই। এ মুহূর্তে ভ্যাকসিনের কোনো বিকল্প নেই। ভ্যাকসিন দেওয়ার অর্থ পৃথিবীর সব মানুষ ভ্যাকসিন নিলে তাহলে ভাইরাস আর গ্রো করার জন্য কাউকে খুঁজে পাবে না। ভ্যাকসিনের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। দুই-একটা তো ব্যতিক্রম হবেই। ত্রাণ সচিবের দুর্ভাগ্য তিনি সেই ব্যতিক্রমে পড়ে গেছেন।
ড. বিজন কুমার
Leave a Reply