রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৫ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
শান্তিগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দৈনিক ভোরের চেতনার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন  জগন্নাথপুরে স্কুল শিক্ষার্থীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা নতুন ইসি শপথ নেবেন রোববার দীর্ঘ ১৩ বছর পরে বিশিষ্ট কলামিস্ট, লেখক ও সাংবাদিক সায়েক এম রহমান এর বাংলাদেশে আগমন সুনামগঞ্জ-৩ আসনে সৈয়দ তালহা আলমকে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা  জগন্নাথপুরে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর; সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রীসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা জগন্নাথপুরে যুক্তরাজ্যের এএন টিভি’র পরিচালকের সঙ্গে মতবিনিময় সভা একযুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও মজলিশে শূরা গঠন সুনামগঞ্জ- ৩ আসন; মনোনয়নের ব্যাপারে দৃড়ভাবে আশাবাদী: একান্ত সাক্ষাত কারে বিএনপি নেতা কয়ছর এম আহমদ

ঢিলেঢালা ভাব: শনাক্তের হার ফের ঊর্ধ্বমুখী

ঢিলেঢালা ভাব: শনাক্তের হার ফের ঊর্ধ্বমুখী

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: দেশে সবকিছুই চলছে। স্বাস্থ্যবিধি উধাও। ওমিক্রন নিয়ে প্রস্তুতিও খুবই ঢিলেঢালা। গত ছয়দিন ধরেই সংক্রমণ শনাক্তের হার ফের ঊর্ধ্বমুখী। এতে করোনাভাইরাসের আবারো পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা জনস্বাস্থ্যবিদদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী ফেব্রুয়ারি নাগাদ করোনার আরেকটি ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে দেশে। তবে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে যে হারে জনসমাবেশ করা হচ্ছে তাতে আরও আগেই ঢেউ চলে আসতে পারে। কেবল সাউথ আফ্রিকা থেকে মানুষ আসলে কোয়ারেন্টিন হবে, ইউকে থেকে এলে হবে না।
এটা ঠিক নয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। শীতের মৌসুম হওয়ায় যতধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান হওয়া সম্ভব, সবই হচ্ছে। বিয়ে, পিকনিক, ঘোরাঘুরি, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে স্থানীয় নির্বাচনও। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাজনৈতিক সভা, সমাবেশ, মিছিলগুলোতে অনুপস্থিত থাকছে স্বাস্থ্যবিধি।
এদিকে গত ছয় দিন ধরেই করোনাতে শনাক্ত রোগী এবং শনাক্তের হার ফের বেড়েছে। গত ১৮ই ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাসে নতুন রোগী শনাক্ত হয় ১২২ জন আর শনাক্তের হার নেমে আসে এক শতাংশের নিচে। সেদিন শনাক্তের হার ছিল শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ। তবে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেটা বেড়েছে। পরদিন (১৯শে ডিসেম্বর) অধিদপ্তর জানায়, শনাক্তের হার ১ দশমিক ২২ শতাংশ আর রোগী শনাক্ত হয়েছে ২১১ জন। ২০শে ডিসেম্বর ২৬০ জন শনাক্ত আর শনাক্তের হার এক দশমিক ৩০ শতাংশ বলে জানায় অধিদপ্তর। ২১শে ডিসেম্বর ২৯১ জন শনাক্ত হয়। সেদিন শনাক্তের হার ১ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ২২শে ডিসেম্বর ৩৫২ জন নতুন শনাক্ত আর শনাক্তের হার ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২৩শে ডিসেম্বর নতুন শনাক্ত ৩৮৫ জন। শনাক্তের হার ছিল ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ। গতকাল শনাক্তের হার ২ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। অর্থাৎ, গত ছয়দিন ধরেই করোনায় শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী লক্ষ্য করা গেছে।
বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে মানুষের স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কাও করছেন। গত ২১শে ডিসেম্বর সচিবালয়ে ওমিক্রন বিশ্বের ৯০টা দেশে ছড়িয়ে গেছে মন্তব্য করে জাহিদ মালেক বলেন, বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্ট ধরা পড়েছে। আমাদের দেশে অনেক মানুষ কক্সবাজার গেছে, কারও মুখে মাস্ক নেই। রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে, মিটিং-মিছিল হচ্ছে, কিন্তু কেউ মাস্ক পরে না। যার কারণে আমরা আশঙ্কা করছি, যেন সংক্রমণ বেড়ে না যায়। বেসামালভাবে চললে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হবে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। দেশে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নেই, কিন্তু করোনা তো আছে! ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকেও যদি আমরা রক্ষা পেতে চাই, আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। মানুষ যেন বেপরোয়াভাবে না ঘুরে বেড়ায় কিন্তু সেটা হচ্ছে। রাজনৈতিক অনুষ্ঠানগুলো কীভাবে হয়! কক্সবাজারে লাখ লাখ মানুষ যাচ্ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। বিয়ে হচ্ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। তাহলে সংক্রমণ বাড়ার সুযোগ তো রয়েছে।
এদিকে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরী পরামর্শক কমিটির সুপারিশে ইতিমধ্যে ১৫ নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন পরামর্শক কমিটি। সব ধরনের (সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অন্যান্য) জনসমাগম নিরুৎসাহিত করা; পর্যটন স্থান, বিনোদনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল/থিয়েটার হল ও সামাজিক অনুষ্ঠানে (বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, পিকনিক পার্টি ইত্যাদি) লোক সমাগম ধারণক্ষমতার অর্ধেকের মধ্যে রাখা এবং রেস্তোরাঁয় ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম আসনে বসে খাওয়ার ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে সেখানে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তারা করোনাতে আরেকটি ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন। মানুষ কথা শুনছে না, স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। কিন্তু করোনা তার কাজ ঠিকই করে যাবে মানুষ না করলেও। সংক্রমণ কমে গেছে, মানুষের ভেতরে যে ভাব এসেছে, সেটাই আবার সর্বনাশের দিকে টেনে নিচ্ছে বাংলাদেশকে-বলছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)-এর উপদেষ্টা এবং সংস্থাটির সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন এ ব্যাপারে  বলেন, কোথাও স্বাস্থ্যবিধি নাই। উধাও। এখনও মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে, মৃত্যু হচ্ছে। শহর কিংবা গ্রাম কেউ মাস্ক পরছে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্দেশিত ১৫ দফার মধ্যে রেস্টুরেন্ট, গণপরিবহনের জন্য যেসব নির্দেশনা ছিল সেগুলোর বালাই নেই।?? স্বাস্থ্যবিধি কড়াকড়ি করতে কেবল নির্দেশনাই যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নিতে হবে। কাউকে একক দায় দিয়ে লাভ নেই। নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ, কমিউনিটি সেন্টার, রেস্টুরেন্টসহ যেসব জায়গায় ভিড় হচ্ছে; সেই কর্তৃপক্ষকে দায় নেওয়ার কাজটা করাতে হবে সরকারকে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণেই করোনার আরেকটি ঢেউয়ের আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আরেকটি ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি নাগাদ। তিনি বলেন, গতবছর এপ্রিলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে হয়েছিল থার্ড ওয়েভ। এর আগে আলফা-বিটা দিয়ে হয়েছিল সেকেন্ড ওয়েভ। মাঝখানে কমে গিয়েছিল। কিন্তু সেটা শূন্যে নামেনি। তিনি বলেন, সবাইকে টিকা নিতে হবে। টিকা না নিলে ঝুঁকিটা বেশি থাকবে। সংক্রমণ বাড়লে মৃত্যুও বাড়বে। এই বিশেষজ্ঞ বলেন, সংক্রমণ বেশি ছড়ায় হাসপাতাল থেকে। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি বেশি নজরে রাখতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওমিক্রন এখন শুধু সাউথ আফ্রিকায় নয়, অনেক দেশেই ছড়িয়েছে। তাই সাউথ আফ্রিকা থেকে মানুষ আসলে কোয়ারেন্টিন হবে, ইউকে থেকে এলে হবে না। এটা ঠিক না। তবে ফ্লাইট বন্ধের পক্ষে নন তিনি। বলছেন স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পালন করাতে হবে বিমানবন্দরে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com