শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
সানোয়ার হাসান সুনু
দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্বোধন হলো সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম রানীগঞ্জ সেতু সহ সারা দেশের ১০০ সেতু।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত রাণীগঞ্জ সেতু খুলে যাওযায় হাওরাঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নব দিগন্তের সুচনা হলো।
সোমবার (৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালী এ দৃষ্টি নন্দন সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এ সময় প্রধান মন্ত্রী বলেন, এক সাথে শত সেতুর উদ্বোধন এক যুগান্তকারী ঘটনা
তিনি বলেন, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের সুচনা হলো। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। সর্বস্তরের জনগন এর সুফল ভোগ করবেন।
সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক অনুষ্টানের আয়োজন করা হয়
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সেক্রেটারী নূর উদ্দিন । এসময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোশারফ হোসেন, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দীন আহম্মেদ, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, জগন্নাথপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আকমল হোসেন , সওজের নির্বাাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম, জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা সাজেদুল ইসলাম, থানা ভারপ্র্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, বিভিন্ন বিভাগের সরকারী কর্মকতা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক সহ এলাকার সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ উপস্হিত ছিলেন।
এ সময় প্রধান মন্ত্রী স্হানীয় শিল্পীদের নৃত্য পরিবেশনা ও শিল্পীদের কন্ঠে বাউল আব্দুল করিমের রচিত গান উপভোগ করেন।
উল্লেখ্য, ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭০২ মিটার দীর্ঘ ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের এই সেতু সোমবার থেকে চালু হওয়ায় রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব প্রায় ৫২ কিলোমিটার কমে যাবে।
জানাযায়,দৃষ্টি নন্দন এ সেতুটির কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ১১ আগস্ট। ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সেতু ও আড়াই কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং টোল প্লাজা নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো কোম্পানি লিমিটেড ও এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী ৭০২ দশমিক ৩২ মিটার দীর্ঘ এবং ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থ সেতুটির নির্মাণকাজ ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ছয় বছরে এসে শেষ হয় কাজ।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, সেতুর প্রকল্প নকশা সংশোধন ও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্য এই কাজ শেষ করতে বিলম্ব হয়।
২০১৪ ইং সনের ২৫ জুন একনেক সভায় তৎকালীন অর্থ প্রতিমন্ত্রী বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান রানীগঞ্জ সেতু নির্মানের প্রস্তাব করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুটির প্রকল্প অনুমোদন করেন। পরে ওই বছরের জুন মাসে সেতুর দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রে অংশ নেয় দেশি-বিদেশি তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অবশেষে ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে যৌথভাবে কার্যাদেশ পায় চায়না রেলওয়ে ২৪ ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ২৪বি এবং এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটে। পরে ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি বর্তমান সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান যৌথ ভাবে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নির্মাণকাজের সময়সীমা ৩ বছর ও ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পে পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে ব্যয় এবং সময় বাড়ানো হয়।
Leave a Reply