সানোয়ার হাসান সুনুু ::
সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর সড়কে থাকা অধিকাংশ বেইলি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুকিপূর্ণ সেতু গুলোর মধ্যে নলজুর নদীর কাটা গাঙের ওপর বেইলি সেতুটি ছিল অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ।
সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকা কম সময়ে যাওয়ার এই সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করে দীর্ঘদিন ধরে। বিভিন্ন সময় জরাজীর্ণ এই সেতুটির পাটাতন খুলে ক্ষতিগ্রস্থ হলে এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আচঁ করতে পেরে স্থানীয় জনসাধারণ দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি সংস্কারের দাবি তোলেন। কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগের খামখেয়ালিপনার কারণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগের ব্যস্ততম এই আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতুটি সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গত মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) নারায়নগঞ্জ থেকে জগন্নাথপুরের উদ্দেশ্যে সিমেন্টবাহী ১টি ট্রাক পারাপারের সময় সেতুটি ভেঙে নলজুর নদীতে তলিয়ে যায়। এসময় চালক ও হেলপার নিখোঁজ হলে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের প্রচেষ্ঠায় নদী থেকে নিহত দু’জনের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সুনামগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের পাগলা এলাকা থেকে জগন্নাথপুর পৌর শহর পর্যন্ত সড়কের দূরত্ব ২১ কিলোমিটার। এই ২১ কিলোমিটারে সাতটি পাকা এবং নয়টি বেইলি সেতু রয়েছে। বেইলি সেতুর সব কটিই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে সাতটি আবার বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকিপূর্ণ সাতটি সেতুর মধ্যে কাটাগাঙের ওপর বেইলি সেতুর পূর্ব থেকেই ছিল নাজুক অবস্থায়। বেইলি সেতুর পাটাতন খুলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ তরিঘড়ি করে নামমাত্র কাজ করে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেয়। বেইলি সেতুর দু’পাশের কোথাও ছিলনা সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড। অথচ মঙ্গলবার দুর্ঘটনার পর ভেঙে যাওয়া সেতুর পাশে রাতের আধারে সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে রাখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছরের ১৬ই জুলাই আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের এই সেতুর পূর্ব পাড়ে চারটি পাটাতনের জোড়া খুলে ফাঁক হয়ে যায়। এছাড়া একটি পাটাতন আরেকটির ওপর উঠে গেলে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ থাকার পর কর্তৃপক্ষ দায়সারাভাবে কাজ করে । ব্যস্ততম এই সড়কের ঝুকিপূর্ণ সেতুতে এর আগেও কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটে।
সুনামগঞ্জ-পাগলা- জগন্নাথপুর-আউশকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কে যাতায়াতকারী যাত্রীরা জানিয়েছেন, এই সড়কের অধিকাংশ বেইলি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে দুর্ঘটনা কবলিত সেতুটি দেখতে এদিন বিকেলে জগন্নাথপুরে আসেন সওজের সিলেট বিভাগের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান উদ্দিন, অতিরিক্ত প্রকৌশলী মোঃ ফজলে রাব্বি, সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম প্রামাণিক।
বুধবার বিকালে নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম যুগান্তর কে বলেন, খুব শিগগির নতুন ব্রীজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। আপাতত ভাংগা ব্রীজ মেরামত করে যান চলাচল উপযোগী করে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার থেকে মেরামত কাজ শুরু হবে। সপ্তাহ দূয়েকের মধ্য সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। তিনি জানান,এখানে আগে থেকে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড ছিল কিন্তু কে বা কারা নিয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার রাতে সাইনবোর্ড স্হাপন করা হয়েছে।
Leave a Reply