জগন্নাথপুর পৌরসভা সহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। বাড়ী- ঘর সহ তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ। লোকজন পড়েছেন দূর্ভোগে। গ্রামীণ ও নিম্নাঞ্চলের সড়ক ডুবে যাওয়ায় উপজেলা সদরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। উপজেলা সদরসহ সকল ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্টান গুলোকে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। নিম্ন এলাকার লোকজনের বাড়ী ঘরে পানি ডুকে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পুরো উপজেলায় ১৪৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে জগন্নাথপুর পৌরসভাসহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মেডিকেল টিম গঠন করে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে এ উপজেলায় বন্যার সৃষ্টি হয়। জগন্নাথপুর উপজেলার শতাধিক গ্রাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। গ্রামীণ অনেক রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ, জগন্নাথপুর উত্তর বাজার, পৌরসভার জগন্নাথপুর কুমারখালি সড়ক, ডাইভারশন সেতু, জগন্নাথপুর-সিলেট বাসস্ট্যান্ড এলাকা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় সংলগ্ন সড়ক, জগন্নাথপুর-হবিবপুর সড়ক, জগন্নাথপুর মাছ বাজারসহ নানান গুরুত্বপূর্ণ স্থান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গবাদিপশু নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ।
এদিকে, কুশিয়ারা, নলজুরসহ উপজেলা দিয়ে বহমান সবকটি নদীর পানি উপচে বাড়ী- ঘরে প্রবেশ করছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে এরই মধ্যে পানি প্রবেশ করেছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা সদরের স্বরুপ চন্দ্র সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারী গার্লস হাই স্কুল,সরকারী ডিগ্রি কলেজ, আব্দুস সামাদ আজাদ অডিটোরিয়াম ,উত্তর জগন্নাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যাকবলিত শত শত পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। এ সমস্ত আশ্রয় কেন্দ্রে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। অনেকে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। কেউ কেউ রাখার জায়গা ও গোখাদ্যের অভাবে কমমূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন।
চিলাউরা- হলদিপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল জানান, বন্যার কারণে জগন্নাথপুর উপজেলা সদরের সাথে আমাদের ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ইতেমধ্যে ২৫টির বেশি পরিবার চিলাউরা উচ্চ, পঞ্চগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন পুনর্বাসন কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল- বশিরুল ইসলাম জানান, বন্যায় জগন্নাথপুর উপজেলার বিপুল সংখ্যক মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন। বন্যার্ত দের জন্য এপর্যন্ত সাড়ে ৩৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছে। আরো ৭টন চাল সহসাই আসবে। আমরা সাধ্যমত বন্যার্ত দের সহায়তা করে যাচ্ছি। বেসরকারি ভাবে বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে এসেছেন। পানি বিশুদ্ধ করন ট্যাবলেট ও দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। তিনি জানান, পুরো উপজেলায় ১৪৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। মেডিকেল টিমও মাঠে কাজ করছে।
ছবি:জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনের রাস্তা। ছবিটি শনিবার বিকেলে তোলা।
Leave a Reply