শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১১ পূর্বাহ্ন
*আকার ৩.৪১ একর থেকে বৃদ্ধি পেয়ে উন্নীত হবে ৩.৭৫ একওে * উচ্ছেদ হবে অবৈধ স্থাপনা
* নির্মিত হবে ওয়াকওয়ে * পুকুরের পানি হবে পরিস্কার * পুকুরের মধ্যখানে নৌকার আদলে থাকবে রেস্তোরা
* সকাল থেকে সন্ধ্যা হাটাচলার জন্য থাকবে উন্মুক্ত * থাকবে বেঞ্চ, , প্যাডেল বোট, শিশুদের রাইডের জায়গা
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক:: ‘ধোপাদিঘীর আকার ছোট হবে না, দীঘি দীঘির মতোই থাকবে, বরং নোংরা পুতি দুর্গন্ধময় পরিত্যক্ত এই দীঘিকে নান্দনিক সৌন্দর্য্যে রূপ দেওয়ার জন্যই বর্তমানে সৌন্দয্যবর্ধন কাজ করা হচ্ছে। দীঘির আশেপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ফলে বরং দীঘির আকার আরও বাড়বে।’-এমনটাই জানিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে সিলেট মহানগরীর ধোপাদিঘীরপাড়ে অবস্থিত ধোপাদিঘীতে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। ভারতীয় সরকারের অনুদানে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ২১ কোটি ৮৫ লক্ষ ৬০ হাজার ৫শ টাকা।
এই প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে দীঘির খননকাজ শুর হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দীঘির চারদিকে ওয়াকওয়ে নির্মান করা হবে, বসার জন্য থাকবে বেঞ্চ, শিশুদের জন্য রাইডের জায়গা থাকবে, পুকুরে নামার জন্য থাকবে দুটি দৃস্টিনন্দন ঘাট, পুকুরের নোংরা পানিকে পরিস্কার করা হবে এবং সেই সাথে পুকুরের মধ্যে ঘোরার জন্য থাকবে প্যাডেল বোট, বৃক্ষপ্রেমীদের পরামর্শে সুদৃশ্যভাবে লাগানো হবে সবুজ বৃক্ষ, পুকুরের মধ্যখানে থাকবে নৌকার আদলে ভাসমান রেস্তোরা। এখানে থাকবে একাধিক টয়লেট।
এসব টয়লেট ও বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার জন্য থাকবে আলাদা পাইপলাইন, যা পুকুরের পানির সাথে সংযোগ থাকবে না। সবার জন্য উন্মুক্ত এই জায়গাটির প্রবেশপথ থাকবে সিটি কর্পোরেশনের মসজিদের উত্তরপাশ দিয়ে এবং মহানগরবাসী সকাল-বিকেল ও সন্ধ্যায় যাতে এখানে এসে হাঁটতে পারেন সেজন্য রাতের বেলা আলোকিতকরণসহ সংশ্লিষ্ট সকল সুবিধা রাখা হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল শাখা জানায়, বর্তমানে ধোপাদিঘীটির আকার অনেক বড় থাকলেও দীর্ঘদিন থেকে আশেপাশের দোকানপাট গড়ে তোলার মাধ্যমে অনেকে এই দীঘির জায়গাও অবৈধভাবে দখল করে আছেন। এই প্রকল্পের আওতায় এসব অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করে দীঘির পুরাতন অবয়বে ফিরে আনা হচ্ছে।
সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর জানান, ভারতীয় সরকার যে তিনটি প্রকল্পে বরাদ্দ দিয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধোপাদিঘীরপাড় প্রকল্প। পরিবেশের উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়েই সকল মন্ত্রনালয়ের যাচাই বাছাই করে এই প্রকল্প অনুমোদন করেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই এলাকার চেহারার আমূল পরিবর্তন হবে। নির্মল পরিবেশে কিছুটা সময় ব্যয় করার জন্য এই স্থানটি মহানগরবাসীর জন্য একটি আদর্শ জায়গা হয়ে উঠবে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে আমার একটি স্বপ্ন ছিল সিলেট মহানগরবাসীর হাঁটাচলার জন্য একটি নির্মল পরিবেশময় স্থান গড়ে তোলা, যেখানে নগরবাসী কিছুটা সময় নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে উপভোগ করবেন। ধোপাদিঘীকে কেন্দ্র করে এই রকম একটি আবহ তৈরী করা হচ্ছে।’
মেয়র আরিফ বলেন, আমি বিনয়ের সাথে সবাইকে আহবান জানাচ্ছি, যে কেউ বর্তমান দীঘিটির করুন চিত্র গিয়ে দেখে আসতে পারেন। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে দীঘিটির পানি নোংরা হয়ে গেছে, চারিদিকে ময়লা আবর্জনার জঞ্জাল যা মশা তৈরীসহ পরিবেশ দূষনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীঘির সাথে আশেপাশের বিভিন্ন দোকানপাটের টয়লেটের সরাসরি সংযোগ দেওয়ার কারণে দূষন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে বাস্তবায়িত প্রকল্পের মাধ্যমে এসব অপসারণ করা হবে, অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পরিত্যক্ত এই দীঘিটির পুনরুজ্জীবন হবে বলেই মনে করেন মেয়র আরিফ।
দীঘির আকার কমবে না, বরং বাড়বে এই প্রসঙ্গে মেয়র সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ‘বর্তমানে দীঘিটির মধ্যে পানির চারিধার আছে ৩.৪১ একর। দীঘির দখলকৃত জায়গা উদ্ধারের পর প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দীঘির পানির চারিধার বৃদ্ধি পেয়ে কমপক্ষে ৩.৭৫ একরে উন্নীত হবে।
Leave a Reply