শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৭ পূর্বাহ্ন
সানোয়ার হাসান সুনু ::
সুনামগঞ্জের শষ্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়া ও মই হাওরের বেড়িবাঁধ গুলোর সংস্কার কাজ আড়াই মাসেও সম্পন্ন হয়নি। অনেক স্থানে এখনো মাটি পড়েনি। ফলে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে শঙ্কা বিরাজ করছে। এ নিয়ে কৃষকরা রয়েছেন দূশ্চিন্তায়।
এদিকে প্রকল্পের পাশে কাজের প্রাক্কলন ও বিবরন সংক্রান্ত সাইনবোর্ড স্থাপনের নির্দেশনা থাকলেও পরিদর্শনকালে একটি বোর্ডও দেখা যায়নি।
কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, জবাবদিহিতা না থাকায় প্রতিবারের মতো এবারো পাউবোর অসাধু কর্মকর্তা ও দূর্নীতিবাজ পিআইসির যোগ সাজসে দায়সারাভাবে কাজ করে মোটা অংকের লুটপাঠের পায়তারা চলছে।
মই ও নলুয়া হাওর ঘুরে দেখা যায়,মই হাওরের দক্ষিণ পশ্চিম প্রান্তের বৈশা নামক বেরীবাঁধে এখন পর্যন্ত (২৫ ফেব্রুয়ারি)মাঠি ফেলা হয়নি। নলুয়ার হাওরের পোল্ডার-১ এর আওতাধীন ১০ নম্বর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। ৩৭টি প্রকল্পের ৭৪ কিলোমিটার বেরীবাধের মধ্যে অধিকাংশ স্হানে মাঠি ফেলা হয়নি। কিছু কিছু অংশে দায়সারাভাবে মাটি ফেলাহয়েছে।
নলুয়া হাওরের ৬ নম্বর প্রকল্পের ভুরাখালী এলাকায় বিশাল একটি ভাঙা রয়েছে। কাজের দেখভাল এর দায়িত্বথাকা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রনধীর কান্ত বলেন, মাটির তীব্র সংকট রয়েছে। গাড়ি দিয়ে অনেক দূর থেকে মাটি আনতে হচ্ছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। এই প্রকল্পে ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এদিকে ৫ নম্বর প্রকল্পের ভুরাখালি গ্রামের নিকটবর্তী এলাকায় মাটির কাজ শেষ হয়নি। ১৬,১৭,১৮নং প্রকল্পে নাম মাত্র মাটি ফেলা হয়েছে।
১০ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য সুজাত মিয়া বলেন,
মাটি কাটার মেশিল আসতে বিলম্ব হওয়াতে কাজ শুরু করা যায়নি। তবে এখন মেশিন আসায় কাজ শুরু হয়েছে।
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, জগন্নাপুরে এবার ৩৭টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের মাধ্যমে ৭৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। কাজের বরাদ্দ পাওয়া গেছে
৪ কোটি টাকা। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁধের কাজ শুরু হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির কাজের শেষ সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটির জগন্নাথপুর উপজেলা শাখার আহবায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, কাজের প্রায় দুইমাস অতিবাহিত হলেও হাওরের বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হয়নি। নীতিমালা অনুয়ায়ী ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা। এখনো হাওরের অধিকাংশ স্হানে মাটি পড়েনি। ফলে কৃষকরা শঙ্কায় আছেন।
নলুয়ার হাওর পাড়ের ভূরাখালী গ্রামের কৃষক সিদ্দিক মিয়া জানান,নাম মাত্র মাটি ফেলে টাকা লুটপাটের পায়তারা চলছে। সটিক ভাবে মান সম্পন্ন বেড়ী বাধ না হওয়ায় হাওর গুলো অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। এতে আমরা খুবই দূশ্চিন্তায় আছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলার মাঠ কর্মকর্তা উপ সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, এ বছর হাওর থেকে পানি নামতে দেরি হওয়ায় কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, হাওরের বেরীবাঁধের কাজ চলমান রয়েছে। মানসম্মত বাধ নির্মাণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
Leave a Reply