সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শংকর রায় আর নেই এবার ৩২ টাকা কেজিতে ৫ লাখ টন ধান,   ১২ লাখ টন চাউল কিনবে সরকার  জগন্নাথপুরে লন্ডন প্রবাসীর বাড়ী বেদখল চেষ্টায় সংবাদ সম্মেলন জগন্নাথপুরে হাওরে ধান কাটার ধুম, বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধানে চিটা শান্তিগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শান্তিগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঈদ পুনর্মিলনী ও আলোচনা সভা  উন্নত জাতি বিনির্মাণে সাংবাদিকরা অগ্রণী ভূমকিা পালন করেন: এমএ মান্নান এমপি জগন্নাথপুরে সার-বীজ বিতরন কালে সাবেক মন্ত্রী, দেশে এখন পরিবর্তনের হাওয়া বইছে দারুল ক্বিরাত হবিবপুর কেশবপুর ফাজিল মাদরাসা শাখা কেন্দ্রের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত  জগন্নাথপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

আ’লীগ নেতা ওমর-জামায়াত নেতা জহিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু

আ’লীগ নেতা ওমর-জামায়াত নেতা জহিরের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু

জগন্নাথপুর নিউজ ডটকম ডেস্ক :: কিশোরগঞ্জ সদর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ওমর সিদ্দিক ফারুকী ওরফে ওমর আলী এবং কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট জহিরুল হকের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

কিশোরগঞ্জ শহরের গাইটাল এলাকার মৃত আবদুল হামিদ মুন্সীর ছেলে আবদুল হাকিম ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ ও তিন সংখ্যালঘুসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষ হত্যা-নির্যাতন, সংখ্যালঘুর বাড়ি ও সম্পত্তি দখলের তথ্য দিয়ে তালিকাভুক্ত রাজাকার উল্লেখ করে ওমর আলীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।

পাশাপাশি তাড়াইল উপজেলার সাচাইল গ্রামের লুৎফর রহমান, বর্তমানে কিশোরগঞ্জ শহরের বসবাসকারী তাড়াইল উপজেলার ধলা গ্রামের অধিবাসী অ্যাডভোকেট জহিরুল হককে তাড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদ এবি মহিউদ্দিনের হত্যাকারী হিসেবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

পৃথক দুই অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমানকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করে। তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান অন্য দুজন সহকারীকে নিয়ে বুধ ও বৃহস্পতিবার কিশোরগঞ্জ সার্কিট হাউসে অবস্থান করে এ দুটি অভিযোগের দুদিনব্যাপী আনুষ্ঠানিক তদন্ত কাজ পরিচালনা করেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের তালিকাভুক্ত রাজাকার কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কাঠাবাড়িয়া বড় দীঘিরপাড় এলাকার মৃত কিতাব আলীর ছেলে ওমর আলী তার সঙ্গীয় ৯-১০ জন রাজাকার ১৯৭১ সালের ১৭ নভেম্বর সদর উপজেলার কাঠাবাড়িয়ার দীঘিরপাড় গ্রামের যুগেশ চন্দ্র দত্ত, বিনোদ বিহারী রায়, সুধীর চন্দ্র দাস, সুধাংশু দাস ও আরও দুজনসহ ছয় ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে ধরে পিঠমোড়া বেঁধে পাক বাহিনীর ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত কিশোরগঞ্জ শহরের ডাকবাংলোয় নিয়ে হত্যা করে।

১৯৭১ সালের ১৫ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে ওমর আলী সদর উপজেলার শ্যাম রায়ের বাজার এলাকা থেকে আবদুল বাছিরের ছেলে আবদুর রাজ্জাক ওরফে হেলু মিয়াকে ধরে নিয়ে পিঠমোড়া বেঁধে পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার কালীগঞ্জ ব্রিজে নিয়ে হত্যা করে।

এছাড়াও অভিযোগে রাজাকার ওমর আলীর বিরুদ্ধে সদর উপজেলার লতিবাবাদ ও রশিদাবাদ ইউনিয়নসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতন-ধর্ষণের একাধিক ঘটনার কথা উল্লেখ আছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত অভিযোগে বাদী ৬৬ বছর বয়সী আবদুল হাকিম উল্লেখ করেন, তিনি গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞ কিশোরগঞ্জ সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করলে আদালত মামলা গ্রহণ করার এখতিয়ার নেই বলে জানালে তিনি শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের শরণাপন্ন হন।

৬৬ বছর বয়সী আবদুল হাকিম যুগান্তরকে আরও জানান, সরকারি তালিকায় রাজাকার হিসেবে ওমর আলীর নাম থাকলেও তিনি সদর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। আর এ কারণে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন। কিন্তু যখন মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেন এবং কার্যকর করেন তখন আমি এ অভিযোগ করার সাহস পাই।

তিনি বলেন, আমি এতোদিন আত্মদংশনে জ্বলে-পুড়ে মরছিলাম। অভিযোগটি করার পর আমি নিজেকে অনেকটা দায়মুক্ত মনে করছি। এখন শুধু এ জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচার দেখে মরতে চাই।

অপরদিকে তাড়াইল উপজেলার সাচাইল গ্রামের লুৎফর রহমান ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করেন, কিশোরগঞ্জ মহকুমা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ভাষা সৈনিক, গুরুদয়াল সরকারি কলেজের সাবেক জিএস ও তাড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদ এবি মহিউদ্দিনকে ১৯৭১ সালে নির্মমভাবে হত্যা করেন আলবদর কমান্ডার অ্যাডভোকেট জহিরুল হক। তিনি উপজেলার উত্তর সেকান্দরনগর গ্রামের মনোরঞ্জন বাবুরও হত্যাকারী।

এছাড়াও অভিযুক্ত আলবদর কমান্ডার জহিরের বিরুদ্ধে ধলার তসুদ্দুক হোসেন চৌধুরী ও ডা. আতিকুর রহমান চৌধুরীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের এ দুটি মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি যুগান্তরকে জানান, এ পর্যন্ত ওমর ফারুকের যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে ১৩ জন এবং অ্যাডভোকেট জহিরুল হকের যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে ১০ ব্যক্তি সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com