সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শংকর রায় আর নেই এবার ৩২ টাকা কেজিতে ৫ লাখ টন ধান,   ১২ লাখ টন চাউল কিনবে সরকার  জগন্নাথপুরে লন্ডন প্রবাসীর বাড়ী বেদখল চেষ্টায় সংবাদ সম্মেলন জগন্নাথপুরে হাওরে ধান কাটার ধুম, বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধানে চিটা শান্তিগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শান্তিগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঈদ পুনর্মিলনী ও আলোচনা সভা  উন্নত জাতি বিনির্মাণে সাংবাদিকরা অগ্রণী ভূমকিা পালন করেন: এমএ মান্নান এমপি জগন্নাথপুরে সার-বীজ বিতরন কালে সাবেক মন্ত্রী, দেশে এখন পরিবর্তনের হাওয়া বইছে দারুল ক্বিরাত হবিবপুর কেশবপুর ফাজিল মাদরাসা শাখা কেন্দ্রের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত  জগন্নাথপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

কোটা পদ্ধতি বাতিলে জাবিতে আনন্দ র‌্যালি

কোটা পদ্ধতি বাতিলে জাবিতে আনন্দ র‌্যালি

জগন্নাথপুর নিউজ ডটকম ডেস্ক ::  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করায় আনন্দ র‌্যালি করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে আনন্দ র‌্যালিটি শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।

র‌্যালিতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল, সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক শাকিলসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ফেব্রুয়ারি থেকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতৃত্বে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছিলেন।

সর্বশেষ গত রোববার দাবি আদায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে শাহবাগ পর্যন্ত গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন।

আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।

পরে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থান নিলে রাত ১০টায় সেখানেও অভিযান চালায় পুলিশ। একই সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়। এ নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।

আন্দোলন চলাকালেই মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর চালায় অজ্ঞাত মুখোশধারীরা।

পরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের রাতভর সংঘর্ষ হয়। ছাত্রদের আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত পাঁচ ছাত্রী হল থেকে ছাত্রীরা গভীর রাতে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসে বেরিয়ে আসেন। পরে ছাত্রছাত্রীরা টিএসসিতে অবস্থান নিলে সেখান হামলা চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।

এরপর সোমবার সকালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ এসএম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে শহীদুল্লাহ হলে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এ সময় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটলে আন্দোলনকারী ও সাধারণ ছাত্ররা একযোগে ধাওয়া দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দোয়েল চত্বর পর্যন্ত নিয়ে আসে।

সেখানে অবস্থানের একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা হলে ফিরে যায়।

এদিকে সোমবার দুপুরে কোটা সংস্কারের পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরর সঙ্গে বৈঠকে বসেন।

সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হলে আন্দোলনকারীরা ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন।

তবে বৈঠক শেষে বিকালে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে পৌঁছলে সমবেত শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত না করার দাবি জানান।

এদিকে রাতে সংসদ অধিবেশনে আন্দোলন সম্পর্কে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বিরূপ মন্তব্য করেন। এদিন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভ্যাট আদায় করা হবে বলে জানান।

এর পর মঙ্গলবার দিনভর রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভ্যাট প্রত্যাহার ও কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।

এ ছাড়া কোটা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি চলে।

এদিকে কৃষিমন্ত্রীকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানায় ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

পরে এ দাবি পূরণ না হওয়াকে কেন্দ্র করে বিকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হয় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। তারা কোটা সংস্কারে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।

পরে আন্দোলনকারীরা বুধবার থেকে সকাল-সন্ধ্যা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে হলে ফিরে যান।

এদিকে রাত ১২টার দিকে সুফিয়া কামাল হলে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হল শাখা ছাত্রলীগের সভানেত্রী ইফফাত জাহান এশার নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এশাকে বহিষ্কারের ঘোষণা করেন উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান। ছাত্রলীগ থেকেও তাকে বহিষ্কার করে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি।

এদিকে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কোটা সংস্কারের বিষয়ে কথা বলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেন, সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোনো কোটাই থাকবে না। শতভাগ নিয়োগ মেধার ভিত্তিতে হবে।

ছাত্রলীগর দুই শীর্ষনেতার কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত অবহিত হয় ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা। তবে তারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সরাসরি ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান।

পরে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন- কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটার দরকার নেই। কোটা পদ্ধতি তুলে দিলাম। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সবাই চাকরিতে আসবে। আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের চাকরির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হবে। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আন্দোলন অনেক হয়েছে। এবার তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com