বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:: সংসারের অভাব দূর করে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে বহু স্বপ্ন নিয়ে জীবন বাজি রেখে লিবিয়া হয়ে দালালের মাধ্যমে বোটে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি গিয়েছিলেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের বালিকান্দি গ্রামের দিনমজুর আব্দুল হান্নান এর পুত্র রুহুল আমিন। কিন্তু দূর্বত্তরা তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দিল না। চিরতরে বিদায় করা হল, লাশ হতে হল রুহুল আমিন কে। এ খবরে বাড়িতে চলছে কান্নার মাতম। রুহুল আমিনের লাশ ইতালির সিসিলো হিমঘরে পড়ে আছে, লাশ দেশে আনতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছে নিহতের পরিবার।
এ ব্যাপারে বুধবার বিকেলে জগন্নাথপুরের ইউএনও মাহফুজুল আলম মাসুমের সাথে আলাপ হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ইতালি যাওয়ার পর রুহুল আমিন ইতালির সিসিলো ক্যাম্পে আশ্রয় পান, কয়েক দিনের মধ্যে থাকার অনুমতিপত্র দেওয়া হবে বলে মা-বাবাকে জানান, প্রায় ২ সপ্তাহ আগে এক দল যুবক তাকে মারধর করে, এতে তার মুখে ও মাথায় গুরুত্বর জখম হয়। রক্তাক্ত মুমুর্ষ অবস্থায় রাস্তায় ফেলে গেলে ইতালিয়ান পুলিশ তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। ২০ সেপ্টেম্বর খবর আসে রুহুল আমিনের মৃত্যু হয়েছে। কারা তাকে হত্যা করেছে বিস্তারিত জানেনা রুহুল আমিনের পরিবার। এ খবর আসার সাথে সাথে পরিবারে শোকের মাতম চলছে। কান্না যেন থামছেনা মা-বাবাসহ আত্মীয়-স্বজনদের। নিহত রুহুল আমিনের দিনমুজুর পিতা তার ছেলে রুহুল আমিনের মৃত্যুর সঠিক তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন ও ছেলের লাশ দেশে এনে পারিবারিকভাবে দাফনের ব্যবস্থা করতে স্থানীয় এম.পি অর্থ পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নানসহ প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নিহতের পরিবার।
নিহত রুহুল আমিনের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে গত ২০ মে স্থানীয় দালালের মাধ্যমে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার চুক্তিতে লিবিয়া হয়ে ইতালি রওয়ানা হয় রুহুল আমিন। কিছু দিন লিবিয়া অবস্থানের পর ইঞ্জিন নৌকা যোগে সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌছে।
বুধবার বিকেলে এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম এর সাথে আলাপ হলে তিনি যুগান্তরকে জানান, লাশ দেশে আনতে বিষয়টি সরকারের উর্দ্ধতন কর্র্তৃপক্ষকে জানাব এবং পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করলে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করব।
নিহত রুহুল আমিনের আত্মীয় বালিকান্দি গ্রামের অধিবাসী কলকলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বুধবার বিকেলে দৈনিক যুগান্তরকে জানান, নিহত রুহুল আমিনের লাশ ইতালির সিসিলো হাসপাতালের হিমঘরে রয়েছে বলে প্রবাসী স্বজনরা জানিয়েছেন। তার লাশ দেশে আনতে প্রায় ৮ হাজার ইউরো খরচ পরবে। ইতোমধ্যে একজন দানশীল ইতালি প্রবাসী ৪ হাজার ইউরো দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বাকি টাকা জোগাড়ের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে ইতালিস্থ বাংলাদেশ দ্রুতাবাসের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
Leave a Reply