শনিবার, ১২ Jul ২০২৫, ১০:২০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে এসএসসিতে পাশের হার ৬১ দাখিলে ৬৯ জগন্নাথপুরে আটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ গ্রেড ও নম্বর পেয়েছে রাইদা জগন্নাথপুরে আন্তঃ ইউনিয়ন ফুটবল টুর্নামেন্টের ট্রফি উন্মোচন ও অভিষেক জগন্নাথপুরে সীমানা দেওয়াল নির্মাণ নিয়ে বিরোধ, সংঘর্ষে বিএনপি নেতার মৃত্যু  জগন্নাথপুরে কৃষি অধিদফতরের বীজ ও চারা বিতরণ কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, জানালেন অ্যাটর্নি জেনারেল জগন্নাথপুরে ধর্ষণের পর কিশোরীকে নদীরপাড়ে ফেলে গেল প্রেমিক! জগন্নাথপুরে মোবাইলের দোকানে দুঃসাহসিক চুরি জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির সভায় বক্তারা, কয়সর আহমদকে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু

জগন্নাথপুরের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এস এস সি পরীক্ষার্থী চয়ন স্বপ্নজয় করতে চায়

জগন্নাথপুরের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এস এস সি পরীক্ষার্থী চয়ন স্বপ্নজয় করতে চায়

স্টাফ রিপোর্টার : ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী চয়নের প্রবল ইচ্ছা শক্তির ফলে সে আজ এস.এস.সি পরীক্ষার্থী। সে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে ভাল মানের একজন শিক্ষক হতে চায়।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরের পশ্চিম ভবানীপুর গ্রামের নিতাই তালুকদারের ৫ সন্তানের মধ্যে ৩য় সন্তান চয়ন তালুকদার পৌর শহরের আব্দুল খালিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এস.এস.সি পরীক্ষা দিচ্ছে। সে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে একজন ভাল মানের আদর্শবান শিক্ষক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার উপজেলা সদরের জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা শেষে দৈনিক যুগান্তরের সাথে আলাপ হয় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মেধাবী ছাত্র চয়ন তালুকদারের। এ সময় সে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে সবার সহযোগিতা কামনা করে। চয়ন তালুকদারের সাথে একই স্কুল থেকে এস.এস.সি পরীক্ষা দিচ্ছে তার ছোট বোন মৌসুমি তালুকদার মিশু। মিশু জানায়, ভাইকে সাথে নিয়ে সে পরীক্ষা দিচ্ছে এবং গাইড হিসেবে ও কাজ করে। চয়ন আরো জানায়, তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে সে ৩য় তার ছোট বোন মিশু তার সঙ্গে পরীক্ষা দিচ্ছে। বোন যখন পড়তে বসে তখন সে মনোযোগ দিয়ে শুনে পড়া মুখস্থ করে নেয়। এভাবে সে লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছে। তার প্রতিটি পরীক্ষা ভাল হচ্ছে জানিয়ে সবার দোয়া ও আর্শীবাদ কামনা করেছে চয়ন। চয়নের বোন মৌসুমি তালুকদার একই পরীক্ষা কেন্দ্রের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী তার পরীক্ষা ভাল হচ্ছে বলে এ প্রতিবেদককে জানায়। চয়নের বাবা দিন মজুর নিতাই তালুকদার অসুস্থ হয়ে এখন বিছানায় রয়েছেন। তিনি বলেন, আমার ছেলে জন্মগতভাবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হলেও লেখা পড়ার ব্যাপারে খুবই উৎসাহি। প্রবল ইচ্ছা শক্তির জোরে চয়ন লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছে। মা মিনতি রানী তালুকদারের সাথে আলাপ হলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমার ছেলে চয়ন লেখা পড়ায় খুবই মনোযোগী। প্রবল ইচ্ছা শক্তি ও মনের জোরে সে লেখা পড়া চালিয়ে যাচ্ছে। চয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আব্দুল খালিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ^জিৎ দাস বলেন, শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি নিয়ে একজন শ্রুতি লেখকের মাধ্যমে চয়নকে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নিতে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র মাজহারুল ইসলাম শ্রুতি লেখকের দায়িত্ব পালন করছে। তিনি জানান, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে চয়ন পারদর্শী। শ্রুতি লেখক মাজারুল হক জানায়, প্রশ্ন বললেই সঙ্গে সঙ্গে চয়ন উত্তর বলে দেন। আমি তার হয়ে খাতায় উত্তর লিখে দিচ্ছি।
এব্যাপারে জগন্নাথপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এস.এস.সি পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কেন্দ্র সচিব স্বরূপচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ছায়াদ আলী ও সহকারী কেন্দ্র সচিব ও শিক্ষক জয়ন্ত কুমারের সাথে আলাপ হলে তারা জানান, বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবন্ধী চয়নের পরীক্ষা একজন শিক্ষকের উপস্থিতিতে শ্রুতি লেখকের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে। তারা জানান, অন্ধত্ত্ব থাকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। তার মনোবল ও স্মরণ শক্তি খুবই প্রখর। তার পরীক্ষাও খুবই ভাল হচ্ছে।
দীর্ঘ আলাপ চারিতার পর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এস.এস.সি পরীক্ষার্থী চয়ন তালুকদার, তার বোন মৌসুমী তালুকদার সহ উপস্থিত পরীক্ষার্থীদের আপ্যায়ন করান ও চয়ন তালুকদারকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেন যুগান্তর প্রতিনিধি ও জগন্নাথপুর প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক মোঃ সানোয়ার হাসান সুনু । হৃদয়বানরা চাইলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এই গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীর আর্থিক সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com