রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৯ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক::
সারা দেশে এখন পর্যন্ত গাড়ির লাইসেন্স দেয়া হয়েছে ৩৮ লাখ। ওইসব গাড়ির মধ্যে কমবেশি ৫ লাখেরই কোনো ফিটনেস নেই। আর ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়েছেন মাত্র সাড়ে ২২ লাখ চালক। তবে অবৈধ চালকের কোনো সুনির্দিষ্ট হিসাব পাওয়া না গেলেও এ সংখ্যা ১০ লাখের বেশি হবে। পাশাপাশি বৈধ রুট পারমিট নেই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যানবাহনের। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা দুরূহ বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি এবং অবৈধ-অদক্ষ ও অপ্রশিক্ষিত চালকরাই সড়কে দুর্ঘটনার জন্য মূলত দায়ী। এছাড়া রুটের অনুমতি না নিয়ে বাস চালানোসহ অন্যান্য পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং আইন প্রয়োগের সমস্যাসহ বেশকিছু কারণে সড়কে দুর্ঘটনা কমছে না। ফলে সড়কে এক প্রকার পাল্লা দিয়ে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি এবং আহতের সংখ্যা বাড়ছে। বড় বড় ঘটনার পর জনতা ফুঁসে উঠলে কয়েকদিন সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ে। ইস্যু থেমে গেলে ফের পুরনো চেহারায় ফিরে যায় পরিবহন ব্যবস্থা।
সড়কে নৈরাজ্যের সর্বশেষ দৃষ্টান্ত হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি। শুক্রবার সকালে রাজধানীর বনানীতে পুলিশ ফাঁড়ির সামনে একটি যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দেয় এই সংসদ সদস্যের গাড়ি। ওই ঘটনায় মেনন প্রাণে বেঁচে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার গাড়িটি। ঘটনাস্থলে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা আফজাল হোসেন জানান, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসের চালক আমানউল্লার কোনো লাইসেন্স নেই। বাসটির নেই ফিটনেস সনদ। এমনকি বাসেরও রেজিস্ট্রেশনসহ অন্য কোনো কাগজপত্র নেই। এদিন বরিশাল, মাগুরা এবং মানিকগঞ্জে পৃথক তিনটি ঘটনায় ৮ জন নিহত হয়েছেন।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, পরিবহন খাতে বিশেষ করে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে বিদ্যমান আইন ও বিধির প্রয়োগ। আমরা কমিটি গঠন করে দিয়েছি। ওই কমিটি কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে গত বৃহস্পতিবার সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভা হয়েছে। সভায় বেশকিছু সুপারিশ এসেছে, যা আগামী ২৭ মার্চের পরবর্তী সভায় চূড়ান্ত হবে। তখন বেপরোয়া বাস চালনা বন্ধসহ সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দৃশ্যমান ফলাফল পাওয়া যাবে।
সড়কে প্রায় প্রতিদিনই অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে। বুয়েটের এআরআই’র তথ্য অনুযায়ী গত বছর সারা দেশে ৩ হাজার ৫১৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন ৪ হাজার ৭৬ জন। আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৭১৫ জন। প্রতিষ্ঠানটি আরও বলেছে, ২০১৭ সালে দুর্ঘটনা ছিল আরও কম। সে বছর সারা দেশে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৭৬৪টি। এতে নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৫২৯ জন, আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৫৯ জন। জানা গেছে, বুয়েট কেবল সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে দুর্ঘটনার এই তথ্য সংগ্রহ করেছে। বাস্তবে দুর্ঘটনার ঘটনা আরও অসংখ্য। এভাবে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারানো ছাড়াও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা পঙ্গুত্ববরণ করছেন। হচ্ছেন বিকলাঙ্গ।
গত ১৯ মার্চ রাজধানীর প্রগতি সরণিতে জে বা ক্রসিংয়ের ওপর দুই বাসের চাপায় নিহত হন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী। রেষারেষি করে চলছিল ওই দুই বাস। ঘটনার পর আবরারকে চাপা দেয়া বাসটির চালককে আটকের পর জানা যায়, বাসের মতো ভারি যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না চালকের। তাছাড়া বাসটির রুট পারমিট ছিল না। সরকারি অনুমতি অনুযায়ী বাসটি অন্য রুটে চলার কথা ছিল।
এর আগে গত বছরের ২৯ জুলাই দুই বাসের রেষারেষির বলি হয়েছিল ঢাকার শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী মিম ও রাজু। এ ঘটনার জন্মদাতা দুই বাসচালকেরও ভারি যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না। বাসগুলোরও ছিল না ফিটনেস। তখন সড়কে নিরাপত্তার দাবিতে প্রায় সারা দেশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠে। আন্দোলনের মুখে তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, পুলিশ এবং পরিবহন মালিক-চালকদের টনক নড়ে। অনুসন্ধানে পরিবহন খাতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, বেআইনি কর্মকাণ্ডের তথ্য বেরিয়ে আসে। কিন্তু ইস্যুতে চলে যাওয়ার পর সড়ক ফের আগের চেহারায় ফিরে যায়।
বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (এআরআই) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুল হক যুগান্তরকে বলেন, আমাদের দেশে সড়কে দুর্ঘটনা, বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে অপরিকল্পিত পরিবহন ব্যবস্থা। বাসের রুট পারমিট দেয়া হয় অবৈজ্ঞানিকভাবে। একটি রুটে কতটি বাস চলতে পারবে, তা বিবেচনায় নেয়া হয় না।
আবার কম পুঁজি নিয়ে অনেকে পরিবহন ব্যবসায় নামছে। তারা অল্প সময়ে বেশি মুনাফা পেতে চান। যে কারণে চুক্তিতে বাস ছাড়া হয় চালকের কাছে। চালক লাভ করার জন্য অল্প সময়ে বেশি আয় করতে চান। ফলে বেপরোয়া গাড়ি চালনা আর রেষারেষি দেখা যায় সড়কে।
অল্প ক’টি কোম্পানি পরিবহন ব্যবসায় থাকলে নিয়ন্ত্রণ যেমন সহজ হতো, তেমনি পরিবহন সমিতির দরকার হতো না। কোম্পানিগুলোই বাসের রুট পারমিট ও ফিট নিয়মিত করাত। নিজেদের স্বার্থে চালকদের প্রশিক্ষণ দিত। বিশ্বের বড় বড় শহরে এ নিয়মেই চলছে।
জানা গেছে, গত বছরের ২৯ জুলাইয়ের ঘটনার পর দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসের রুট পারমিট বাতিলের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই বাস এখনও রাস্তায় চলছে। আবার ১৯ মার্চের ঘটনার জন্য দায়ী সুপ্রভাত পরিবহনেরও রুট পারমিট বাতিলের কথা উঠেছে। কিন্তু বাস্তবে ওই বাসও হয়তো ভবিষ্যতে চলবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
পরিবহনটি ‘সম্রাট’ এবং ‘মা ফাতেমা’ নামে রূপান্তরের চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে ওই পরিবহনের ভাঙাচোরা বাসে রঙ পরিবর্তন আর জোড়াতালি দিয়ে নতুন করার কসরত চলছে টঙ্গীর গাজীপুরায়। যুগান্তরের অনুসন্ধানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সড়কে দুর্ঘটনার প্রধান দায়ী চালক এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯ মার্চের দুর্ঘটনার জন্য দায়ী সুপ্রভাত কোম্পানির গাড়ির সংখ্যা সাড়ে তিন শতাধিক। সদরঘাট থেকে গাজীপুরে চলা এই পরিবহনের মাত্র ২০টি গাড়ির ফিটনেসসহ কাগজপত্র ঠিক থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
এখানেই শেষ নয়, ঢাকা-গাজীপুর রুটে চলাচলকারী চারটি পরিবহন কোম্পানির অন্তত দেড় হাজার গাড়ি বছরের পর বছর ফিটনেস ও রুট পারমিটবিহীন কাগজপত্র ছাড়াই দিব্যি চলাচল করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে গাজীপুরে ‘অনাবিল’ ও ‘অনাবিল সুপার’ পরিবহন নামে দুটি কোম্পানির আড়াই শতাধিক বাস-মিনিবাস চলাচল করে।
এর মধ্যে মাত্র ১২টি গাড়ির ফিটনেস আছে। আবার এই ১২টি গাড়ির কোনো চালকের লাইসেন্স নেই। একইভাবে দুটি পৃথক রুটে ঢাকা থেকে গাজীপুরে ‘বলাকা’ পরিবহনের ১২০০ গাড়ি চলাচল করে থাকে। এর মধ্যে মাত্র ৭২টি গাড়ির ফিটনেস আছে। এভাবে রাজধানীতে চলাচলকারী প্রায় সব পরিবহনের বাসেরই রুট ফিটনেসের একই দশা বলে জানা গেছে।
আরও জানা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনার নানা কারণের অন্যতম চালক। অদক্ষ, প্রশিক্ষণহীন ও লাইসেন্সবিহীন চালকের কারণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। এর জন্য দায়ী চালকের বেপরোয়া মনোভাব। চালকের অধৈর্য, অসুস্থ প্রতিযোগিতা ও ক্লান্তি দুর্ঘটনার মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। একজন চালকের দিনে ৮ ঘণ্টা গাড়ি চালানোর নিয়ম থাকলেও চালান ১২-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত। গন্তব্যে তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে বা বেশি যাত্রীর আশায় চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান ও রেষারেষিতে লিপ্ত হন।
এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালানোর শক্তি ধরে রাখতে অনেক চালক মাদক নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা ও এর আশপাশের জেলায় দিনভিত্তিক গাড়ি ভাড়ায় চালান চালকরা। কম সময়ে বেশি যাত্রী পরিবহনে তারা অসুস্থ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। যুগান্তরের কাছে মালিক ও শ্রমিক নেতারাও অনেক ক্ষেত্রে চালকের ত্রুটির কথা স্বীকার করেছেন। তারা জানান, দুর্ঘটনার জন্য বিআরটিএ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও দায় রয়েছে। এ দুটি প্রতিষ্ঠান কঠোর ভূমিকা নিলে সড়ক দুর্ঘটনা কমে আসবে।
বুয়েটের এরআইএ’র মতেও, ঢাকায় সাম্প্রতিক আলোচিত সড়ক দুর্ঘটনাগুলোর সবকটিতেই বাসের বেপরোয়া চালনার কারণে ঘটেছে। বুয়েটের ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ২০১৬ সালের মার্চ থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন বছরে কেবল ঢাকার দুর্ঘটনার ওপর দেয়া এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৬৬৬টি দুর্ঘটনায় ৬৯৯ জন নিহত এবং এক হাজার ২২৭ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৫৪টি দুর্ঘটনাই বাসের কারণে ঘটেছে।
অবশ্য সড়ক দুর্ঘটনার জন্য কেবল চালক নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী। তিনি বলেন, অনুমোদন ছাড়া উবার-পাঠাওসহ বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং গাড়ি চলছে। এটাও দুর্ঘটনার একটি কারণ। দেশে জেব্রা ক্রসিংয়ের সামনে সিগনাল বাতি নাই। ঢাকা শহরে ২০০-২২০টি বাস-বে থাকার কথা। আছে দুটি। রাস্তাগুলো দখলে থাকে। এসব কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কে দুর্ঘটনার জন্য কেবল চালক দায়ী নয়।
এই শ্রমিক নেতা আরও বলেন, দেশে বর্তমানে গাড়ির সংখ্যা ৪০ লাখ। আর লাইসেন্সধারী চালক আছে ২৪ লাখ। এই হিসাবেই ১৫-১৬ লাখ লাইসেন্সবিহীন চালক আছে। ভারি যানের একটা লাইসেন্স পেতে ৬-৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়। এটা লাইসেন্স গ্রহণে উৎসাহ কমিয়ে দেয়। তিনি স্বীকার করেন, কিছু চালকের মধ্যে মাদকাসক্তি আছে। তবে এর হার ২৫-৩০ শতাংশ। তবে আইনের সঠিক প্রয়োগ এসব সমস্যার সমাধান করতে পারে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সড়ক দুর্ঘটনার ইস্যুতে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় আলোড়িত প্রতিবাদ ছিল গত ২৯ জুলাইয়ের ঘটনার পর সৃষ্ট আন্দোলন। ওই ঘটনার পর পরিবহন খাত এবং এ খাতে সুশাসন ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা নানা কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সেই দেয়া কথা সব ভুলে যান। তখন পরিবহন নেতারা বলেছিলেন, সড়কে দুর্ঘটনা হ্রাসে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেবেন। এর মধ্যে শীর্ষে ছিল চালকদের বেপরোয়া মনোভাবে পরিবর্তন আনতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া।
এই ব্যবস্থার একটি চুক্তিভিত্তিক বাস না চালানো। এর পরিবর্তে মাসিকভিত্তিতে বেতন বাস চালানোর কথা। কেননা, এ কারণে বেশি যাত্রী পেতে একই রুটের এমনকি একই পরিবহন কোম্পানির বাসের চালকদের মধ্যেও চলে রেষারেষি।
কেননা, চুক্তিতে বাস চালালে বেশি যাত্রী পেতে একটির আগে আরেকটি যাওয়ার প্রতিযোগিতা চলে। কিন্তু বাস মালিকরা সেই কথা ভুলে গেছেন। আজ পর্যন্ত এটা বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি তখন আরও ঘোষণা দিয়েছিল, টার্মিনাল থেকে ফিটনেসবিহীন বাস বের করতে দেয়া হবে না। লাইসেন্সবিহীন চালকদেরও ধরা হবে টার্মিনাল থেকে বাস বের করার আগেই। কিন্তু ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে পরিবহন নেতাদের কার্যক্রম।
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, চুক্তিতে বাস চলায় ঢাকার সড়ক বেশি প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। এটা আশু বন্ধ করা দরকার। কেননা, যখন কোনো চালক বাস চুক্তিতে নেয় তখন তাকে খরচ তুলে লাভের মুখ দেখার চিন্তা করতে হয়। একটি বাসে দৈনিক এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকা কেবল চাঁদার খরচই আছে।
এর মধ্যে আছে, সকালে পথে নামতে গেট পাস (জিপি) ১০০ টাকা, যে কোম্পানির অধীনে বাস চলে, তার নাম ব্যবহারের জন্য ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। এছাড়া আছে টার্মিনালভিত্তিক সমিতির নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা। অনেক সময় পথ খরচের নামে ঘুষ দিতে হয় ট্রাফিককে। আর মালিককে চুক্তি হিসেবে দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার টাকা জমা দিতে হয়। এর বাইরে তেল বা গ্যাস খরচ এবং কন্ডাক্টর ও হেলপারের খরচও চালককে দিতে হয়। সুতরাং বেতনভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
Leave a Reply