সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বিশ্ব জলাভূমি দিবস উপলক্ষে মতবিনিময় সভা শান্তিগঞ্জে গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের সংঘর্ষ, আহত ৪০ মহান ভাষা দিবস পালনে শান্তিগঞ্জে প্রস্তুতি সভা জগন্নাথপুরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৩০, গুলিবিদ্ধ ১ সুনামগঞ্জে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মেলা বন্ধ না হলে, লংমার্চ টু মেলা! জগন্নাথপুর উপজেলা জামায়াতের যুব বিভাগের কমিটি গঠন জগন্নাথপুরের সাংবাদিকদের সাথে এমপি প্রার্থী এডভোকেট ইয়াসিন খানের মতবিনিময় ডুংরিয়া ঘরুয়া ইয়াংস্টার ৩য় ফুটবল টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন  জগন্নাথপুরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্হ দের মধ্যে আর্থিক অনুদান বিতরন জগন্নাথপুরে ইউএনও এর সাথে কমিউনিটি নেতা মুজাক্কির আলীর বৈটক

এবার লোকসানি ব্যাংক একীভূত করার চিন্তা

এবার লোকসানি ব্যাংক একীভূত করার চিন্তা

 

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: এবার লোকসানি বা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার চিন্তা করছে সরকার। এজন্য ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, দুর্বল প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা তৈরি ও সামগ্রিক পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশ্লেষকরা জানান, চলতি অর্থবছরের বাজেটে আর্থিক খাতের ব্যাপক সংস্কার ও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের দিক নির্দেশনা দেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সেখানে ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে একটি কমিশন গঠন ও ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, অপেক্ষাকৃত দূর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করার কথা বলা হয়।

এ ছাড়া শেয়ারবাজারের জন্য প্রণোদনা প্রদান, গ্রামাঞ্চলের হাটবাজারগুলো অর্থনীতির পাওয়ার হাউস হিসেবে গড়ে তোলা, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া, ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিট বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বলা হয়। বাজেটের ঘোষণা অনুযায়ী, লোকসানি বা অপেক্ষাকৃত দূর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পারফরমেন্স মূল্যায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতের অবস্থা নাজুক। মার্জ করার সময় এসেছে।
আর এটা করা সম্ভব। মার্জ করার দরকার আছে। কারণ এতে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা হবে। তিনি বলেন, আমি গভর্নর থাকাকালীন সময় মার্জ করা নিয়ে কিছু গাইড লাইন দিয়ে ছিলাম। এখন কি অবস্থায় আছে জানি না। তার মতে, মার্জ করতে হবে ব্যাংক টু ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান টু আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তা হলে সুফল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ভারতে মার্জ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমাদেরকেও ওইদিকে নজর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে নির্দেশনায় বলা হয়, এর প্রাথমিক ধাপ হিসেবে ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক অবস্থা এবং সামগ্রিক পারফরমেন্স মূল্যায়নে একটি প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। একই সঙ্গে দূর্বল ব্যাংকগুলোর একটি তালিকাও করা হবে। পাশাপাশি বর্তমানে দেশে সুনির্দিষ্টভাবে একীভূতকরণ (মার্জার আইন) না থাকায় ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করা হবে। এ আইন সংশোধন করে ব্যাংক বা নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে মার্জ করার বিষয়টি স্পষ্ট করা হবে। দূর্বল ব্যাংকের তালিকা প্রণয়ন ও ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধন দুটি কাজই একই সঙ্গে চলবে বলে জানিয়েছে অর্থ বিভাগের সূত্রগুলো।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তার নির্দেশনা অনুসারেই কাজ করা হবে। পারফরমেন্স বিচারে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বছর বছর লোকসান গুনলেও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বাড়ছে। অন্যদিকে বেসরকারি অনেক ব্যাংক ও নন-ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তি অত্যন্ত দূর্বল। ফলে আমানতকারীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের অনেক ব্যাংকই প্রতিযোগিতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে না। কীভাবে ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে আনা যায়, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিবেচনা করতে হবে।
এদিকে বুধবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো লাভের জন্য করা হয়নি। ব্যাংকগুলো যদি ভালোভাবে জনগণকে সেবা দিতে পারে তাহলে এগুলোকে একীভূত (মার্জার) করার প্রয়োজন পড়বে না। এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের কিছুটা পুনর্গঠন করতে হবে। তবে পুনর্গঠনের আগে আরো বেশি করে পর্যালোচনা করতে হবে। কারণ আমরা রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংক লাভের জন্য করিনি। এ ব্যাংকগুলো করা হয়েছিল দেশের জনগণকে সেবা দেয়ার জন্য। আমরা যদি দেখি যে, সেবা দেয়াতে কোনো ঘাটতি রয়েছে তাহলে ব্যাংকগুলোকে মার্জ বা অন্য কিছু করতে চেষ্টা করব।

ওদিকে ভারতের অর্থনীতির নাজুক অবস্থা মোকাবিলায় দেশের ২৭টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক একীভূত হয়ে ১২টি ব্যাংকে পরিণত হচ্ছে বলে গত শুক্রবার ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ঘোষণা দিয়েছেন। মোট ২৭টির মধ্যে ১০টি বড় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ৪টিতে একীভূত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ওরিয়েন্টাল ব্যাংক অব কমার্স ও ইউনাইটেড ব্যাংক নয়াদিল্লিভিত্তিক পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে একীভূত হচ্ছে। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (এসবিআই) পর এটা হবে দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক। দক্ষিণ ভারতের কানাডা ব্যাংক ও সিন্ডিকেট ব্যাংক একীভূত হচ্ছে। মিশে যাচ্ছে ইউনিয়ন, অন্ধ্র ও করপোরেশন ব্যাংক। এলাহাবাদ ব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে ইন্ডিয়ান ব্যাংক। অর্থসচিব রাজীব কুমারের বরাতে আনন্দবাজার লিখেছে, এসব একীভূতকরণের আগে দেনা ব্যাংক, বরোদা ব্যাংক ও বিজয়া ব্যাংকের সংযুক্তিকরণের মতই মসৃণ হবে। কোনও কর্মী ছাঁটাই হবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com