বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৮ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক ::
কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামে মাঝরাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে চোখ বেধে তার সাক্ষর নেয়া হয়। অতপর দণ্ড দিয়ে তাকে জেলে পাঠানো হয়।
গ্রেফতারের দুদিন পর জেল থেকে ছাড়া পেয়ে সোমবার এ তথ্য জানান সাংবাদিক আরিফ।
জোর করে তুলে নেয়ার পর সারাদেশে সমালোচনার মধ্যে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় জামিন শুনানির শেষে বেলা ১২টায় কারাগার থেকে মুক্তি পান বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফ। পরে তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চোখ বাঁধা অবস্থায় আমার কাছ থেকে জোর করে চারবার স্বাক্ষর নেয়া হয়। পরে তাড়াহুড়ো করে কারাগারে পাঠানো হয়। হাসপাতালে আসার আগ পর্যন্ত যা কিছু হয়েছে তা আমাকে জোর করে করানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীন শহরের একটি সরকারি পুকুর সংস্কারের পর নিজের নামানুসারে ওই পুকুরের নাম ‘সুলতানা সরোবর’ রাখতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় দশ মাস আগে। এর পর থেকে ডিসি সুলতানা আরিফের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।
এরপর আরিফকে শুক্রবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মাদক রাখার অভিযোগে এক বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মুক্তি পাওয়ার পর আরিফুল বলেন, হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার পর আমাকে বিবস্ত্র করে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। শরীরে সেই আঘাতের চিহ্নও আছে।
হাসপাতালের বেডে বসে সাংবাদিকদের আরিফ আরও বলেন, আমাকে এনকাউন্টারের হুমকি দেয়া হয়। আমি কাকুতি-মিনতি করি। আল্লাহর কসম দিই। সন্তানের কসম দিই। প্রাণভিক্ষা চাই তাদের কাছে। এরপরও তারা ক্ষান্ত হচ্ছিল না।
তারা আমাকে বারবার কলেমা পড়তে বলছিল। আরডিসি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল। পরে হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একটি কক্ষে নিয়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে তারা। আরিফুল আরও বলেন, চোখ বাঁধা অবস্থায় আমার কাছ থেকে জোর করে ৪টি কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়।
পরে তাড়াহুড়ো করে আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আমাকে যে নির্যাতন করা হয়েছে তার চিহ্ন আমার শরীরে আছে। জামিনের আবেদন করেছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি হাসপাতালে আসার আগপর্যন্ত যা কিছু হয়েছে তা আমার অসম্মতিতে হয়েছে। আমাকে ফোর্স করে করানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রেদওয়ান ফেরদৌস সজীব বলেন, আরিফ বর্তমানে ভালো আছেন। তার শারীরিক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে।
Leave a Reply