বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক ::
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বর্তমান সীমানা এলাকা মাত্র ৭২ বর্গ কিলোমিটার। ফলে দেশের মধ্যে সবচেয়ে আয়তনের ছোট এই সিটি করপোরেশন। প্রাচীন শহর রাজশাহী হলেও একমাত্র সীমানা পুন:নির্ধারণের অভাবে এর আয়তন বৃদ্ধি করা যাচ্ছে না। রাসিক কর্তৃপক্ষ এমনকি সরকারও এ বিষয়ে সদিচ্ছা থাকলেও জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আটকে আছে। ফলে মন্ত্রণালয় থেকে রাসিকের নতুন করে সীমানা বৃদ্ধির ফাইল অনুমোদন হচ্ছে না। অথচ সম্প্রতি সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রায় দ্বিগুন সীমানা বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সীমানা বৃদ্ধি না হওয়ায় সীমান্ত এলাকায় বসবাসীকারী অন্তত ৫ লাখ মানুষ সিটি করপোরেশনের আধুনিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
রাসিক সূত্র মতে, প্রাচীন জনপদ বলে পরিচিত রাজশাহী শহর ব্রিটিশ শাসনামালে এ শহরে গড়াপতন। মাত্র ১০ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে ১৮৭৬ সালের ১ এপ্রিল রাজশাহীর ভুবন মোহন পার্কের অভ্যন্তরে টিন সেডের দু’টি কক্ষে রাজশাহী পৌরসভা (রামপুর-বোয়ালিয়া মিউনিসিপ্যালিটি) কাযর্ক্রম শুরু করে। পরে ভুবন মোহন পার্ক থেকে রাজশাহী কলেজের একটি কক্ষে পৌরসভা দপ্তর সরিয়ে নেওয়া হয়। রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হর গোবিন্দ সেনকে প্রথম চেয়ারম্যান করে ৭ সদস্যের প্রথম টাউন কমিটি গঠন করা হয়।
মিউনিসিপ্যাল কমিটির নিয়ন্ত্রণাধীন পৌর এলাকার আয়তন ছিল ৬ দশমিক ৬৪ বর্গ মাইল পশ্চিমে হড়গ্রাম বাজার থেকে পূর্বে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পযর্ন্ত। এর পর ১৯৮৭ সালের সালের ১৩ আগস্ট রাজশাহী পৌরসভা পৌর কর্পোরেশনে উন্নীত করা হয়। পরের বছর ১৯৮৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর পৌর কর্পোরেশন থেকে সিটি কর্পোরেশনে পরিণত করা হয়। এর প্রথম মেয়র হন আব্দুল হাদি। পৌরসভা সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর আয়তন বেড়ে গিয়ে ৭২ বর্গ কিলোমিটার হয়। এই আয়তনেই বর্তমানে এখন রাসিকের জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখ।
রাসিক সূত্র মতে, গত প্রায় দুই বছর আগে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সীমানা বৃদ্ধির জন্য কার্যক্রম হাতে নেয় রাসিক। রাজশাহী মহানগর পুলিশ এরই মধ্যে সীমানা বৃদ্ধি করে চারটি থানা থেকে ১২টি থানায় রুপান্তরের পাশাশাপাশি কর্ম এলাকা বাড়ানো হয় আরও প্রায় ২০০ বর্গকিলোমিটার। প্রায় চার বছর আগে মেট্রোপলিটন পুলিশের এ সীমানা বৃদ্ধি পায়।
এরপর রাসিকও ওই এলাকা ধরে সীমানা বৃদ্ধির কাজ শুরু করে। সে অনুযাযায়ী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় চিঠি চালাচালিও হয়। পরবর্তিতে গত বছরের জানুয়ারি মাসে স্থানীয় মন্ত্রণালয় থেকে রাজশাহী জেলা প্রশাসককে সার্বিক দিক বিবেচনা করে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এরই মধ্যে কৃষিসহ তিনটি দপ্তর থেকে রাসিকের সীমা বৃদ্ধির জন্য সুপারিশ করা হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে সুপারিশ না যাওয়ায় এখনো মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দিতে পারছে না। ফলে মন্ত্রণালয়েও আটকে আছে রাসিকের সীমানা বৃদ্ধির ফাইলটি।
রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শাহানা আক্তার বলেন, রাসিকের সীমানা বৃদ্ধির ফাইল আমাদের অফিসে নাই। আমাদের অফিস থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দপ্তরে প্রতিবেদন চাইতে পাঠানো হয়েছে।
রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, মাত্র ৭২ বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্যে এখন নগরীতে বাস করছেন প্রায় ১০ রাখ মানুষ। রাসিকের সীমানা বৃদ্ধি হলে এই ১০ লাখ মানুষ বৃর্ধিত সীমানা এলাকার দিতে যেতে পারবেন। পাশাপাশি ওইসব এলাকার আরও প্রায় ৫ লাখ মানুষও নগরীর আধুনিক সুবিধা পাবেন।
মেয়র আরও বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার। নগরীতে বর্তমানে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড চলছে। আগামীতে সিটি করপোরেশনের সীমানাবর্ধিত হলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির উন্নয়নেও কাজ করা যাবে। কিন্তু সেটি থমকে আছে।
Leave a Reply