শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :: কালবৈশাখীর তাণ্ডবে সাজানো সংসারটি মহুর্তেই তছনছ হয়ে গেল হারুন মিয়ার। প্রচন্ড ঘূর্ণি ঝড়ে বসতঘরে গাছের চাপায় স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যুতে পাগলপ্রায় তিনি। বৃহস্পতিবার ভোরে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সুলেমান পুর গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, ওই গ্রামের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বুলু মিয়ার বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার চকবানিয়াপুর গ্রামের হারুন মিয়া তার স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন।
তিনি প্রবাসীর বাড়ি দেখাশোনার পাশাপাশি স্থানীয় মিনহাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘প্যারা শিক্ষক’ হিসেবে কাজ করছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার উপর দিয়ে প্রলংয়করী কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেলে টিনশেড ঘরের ওপর পাশের ২টি গাছ পড়ে হারুন মিয়ার স্ত্রী মৌসুমী বেগম (৩৫), মেয়ে মাহিমা আক্তার (৪) ও ছেলে হোসাইন আহমদ (১) ঘটনাস্থলেই মারা যান। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
এদিকে, পরিবারের সবাইকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন হারুন মিয়া। কথা বলার শক্তি প্রায় হারিয়ে ফেলেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে হারুন মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গেলে দেখা যায়, তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন। কথা বের হচ্ছে না তার। অনেকক্ষণ পর হারুন মিয়া সাংবাদিক দের বলেন, রোজার জন্য সাহরি খাওয়ার পর আমার স্ত্রী বাচ্চাদের নিয়ে ঘুমাতে যান। আমি ফজরের নামাজের জন্য অন্য একটি ঘরে ছিলাম। প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড় মহুর্তেই আমার সুখের সাজানো সংসার শেষ করে দিল। ঝড়ের মধ্যে প্রাণপণ চেষ্টা করেও পারলাম না স্ত্রী —সন্তানদের বাঁচাতে- বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
পাটলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আঙুর মিয়া বলেন, স্ত্রী ও দুই সন্তান হারিয়ে হারুন মিয়া নির্বাক। তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তিনি জানান, পরিবারটি খুবই গরিব ও অসচ্ছল।
জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সুনামগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম যুগান্তর কে জানান, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক। পরিবারের সবাইকে হারিয়ে হারুন মিয়া বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। আমরা তাৎক্ষণিক প্রশাসনের পক্ষ থেকে হারুন মিয়াকে নগদ ৬০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করেছি।
Leave a Reply