মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন
মোঃ শিহাব উদ্দিন চৌধুরী রেহান ::
গ্রাম্য রাজনীতি শব্দটি উৎপত্তি হয়েছে গ্রামীণ সমাজের উপর চর্চাকৃত রাজনীতি থেকে। যদিও ইহা বেশিরভাগ সময় নেতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয় এবং ইহা ভিলেজ পলিটিক্স নামে সবার কাছে পরিচিত। যদিও ইহা একটি রাজনীতির অংশ তবে বাস্তবে এটা এমন এক রহস্যময় রাজনীতি যার কূলকিনারা পাওয়া সত্যিই কষ্টসাধ্য। এই রাজনীতির চর্চা সাধারণত ক্ষমতা কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। এই ক্ষমতা অনেক সময় পরিবার কেন্দ্রিক, পাড়া কেন্দ্রিক অথবা গোত্র কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। সাধারণত গ্রামের প্রভাবশালী ক্ষমতাধর বংশীয় পেশী শক্তি যাদের বেশি ও আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিরা এই রাজনীতির চর্চা করে থাকেন।
গ্রাম বলতে যে সুন্দর ও শ্যামল চিত্র এবং যে নির্জন ছায়া নিবিড় শান্ত গ্রামের কথা ভেসে ওঠে তার সঙ্গে এই রাজনীতির বড়ই বেমানান। বর্তমান সমাজে এই ভিলেজ পলিটিক্স এর কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, সামাজিক সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ। এই অপরাধনীতির ফাঁদে পড়ে অনেক নিঃস্ব হয়েছেন । স্বার্থপরতা, পক্ষপাতিত্ব, রাজনৈতিক প্রভাব, অনেক ক্ষেত্রে অনৈতিক অর্থনৈতিক লেনদেন এখন গ্রামে মহামারি আকার ধারণ করেছে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে হারানোর জন্য বিভিন্ন কলা কৌশল অবলম্বন করে থাকেন, রাতের পর রাত বসে কুৎসা রটনা করা হয় অথচ দিনের বেলায় একজনের সাথে আরেকজনের সম্পর্কে কোন বাটা দেখা যায় না। নিজের স্বার্থ ও ক্ষমতা দেখানোর জন্য এক পক্ষ যেমন বিভিন্ন পায়তারা করে অন্য পক্ষও তেমনি ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে থাকেন। এর প্রভাব সরাসরি গিয়ে আঘাত হানে সামাজিক উন্নয়নে, এই ক্ষমতার লড়াইয়ে অনেকে সৎ শিক্ষিত লোক নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে গ্রাম থেকে সরিয়ে নেন। দুই পক্ষের লড়াইয়ে অনেক পরিবারকে নিঃস্ব হতে হয়েছে এবং অনেক প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে যাহা প্রতিনিয়ত খবরের কাগজে আসে।
এর প্রতিকার থেকে বের হয়ে আসা সত্যিই কষ্টসাধ্য, প্রথমত সমাজের নেতৃত্বে সৎ, সাহসী, শিক্ষিত ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তিদের স্থান দিতে হবে। দ্বিতীয়ত পারিবারিক ভ্রাতৃত্ববোধ ফিরিয়ে আনতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতি মুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে। তৃতীয়ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা হলো সমাজের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সচেতনামূলক হিসাবে শিশুদের স্কুলমুখী করতে হবে এবং পরিবারকে শহর বিমুখী করতে হবে।
সবার স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে শিক্ষার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে হবে এছাড়াও দক্ষ সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য লোককে নির্বাচিত করতে হবে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে।
গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় সচেতনামূলক পোস্ট লাগাতে হবে এই ক্ষেত্রে ইসলামিক শিক্ষাকে কাজে লাগানো যায় সর্বোপরি আমার বিশ্বাস আমাদের নিজের স্বার্থ উর্ধ্বে গিয়ে এবং সমাজের উন্নয়নে জন্য এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়তে এইসব পদক্ষেপ নেয়া জরুরী
(বিদ্র : এই লেখাটি আমার সম্পূর্ণ নিজস্ব মতামত। এই লেখাটি বর্তমান গ্রামীণ সমাজের প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে লেখা মাত্র কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু লেখা হয়নি। ধন্যবাদ।)
লেখক
মোঃ শিহাব উদ্দিন চৌধুরী রেহান
বিবিএ, এমবিএ (একাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম)
এম ইউ
Leave a Reply