বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ অপরাহ্ন
খোদার রহমতের তালাশে মগ্ন হে মুমিন! আজ রমজানুল মোবারকের ষষ্ঠ দিন। ক্ষমা, করুণা আর কল্যাণ কতটা অর্জন করতে পেরেছি নিজেকে জিজ্ঞেস করি। শুধু খাওয়া-দাওয়া ও যৌনাচার থেকে বিরত থেকেই হয়ে যাব প্রকৃত সায়িম?
নবিজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা ও কাজ ত্যাগ করতে পারল না তার পানাহার বর্জন আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই’ (বুখারি শরিফ)। রোজাদারের মুখ যেমন খাবার থেকে বিরত থাকে, তেমনিভাবে চোখ বিরত থাকবে অন্যায় দৃষ্টি থেকে, কান বিরত থাকবে অনর্থক কথা ও শব্দ শোনা থেকে, পা বিরত থাকবে অন্যায়-অসৎ পথে চলা থেকে।
সিয়াম পালনকারী সব রকমের অন্যায় ও গর্হিত আচার-আচরণ থেকে নিজেকে হেফাজত করবে। মিথ্যাচার, পরনিন্দা, অশ্লীলতা, প্রতারণা, ঝগড়া-বিবাদসহ সব ধরনের অবৈধ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলেই রোজার প্রকৃত উদ্দেশ্য অর্জন করা যাবে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘অনেক সিয়াম পালনকারী আছে যারা তাদের সিয়াম থেকে শুধু ক্ষুধা ও পিপাসা ভোগ করে। আবার অনেক সালাত আদায়কারী আছে যারা তাদের সালাত থেকে শুধু রাতজাগা ভোগ করে থাকে।’ (এ ছাড়া আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো প্রতিদান লাভ করে না) (মুসনাদে আহমদ)।
এক বর্ণনায় এসেছে, নবি করিম (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কারও সিয়ামের দিন উপস্থিত হয় তখন সে যেন কোনো অশ্লীল কথা ও কাজ না করে এবং অহেতুক উচ্চ কণ্ঠে কথা বলা বা ঝগড়া না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা তার সঙ্গে ঝগড়া করতে আসে, তবে সে যেন তাকে বলে দেয় আমি রোজাদার।’
কুরআন-হাদিসের দৃষ্টিতে সিয়াম শুধু উপবাসের নাম নয় বরং এটি আত্ম গঠনের এক নিয়মতান্ত্রিক কর্মশালা। মাহে রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত মুমিন বান্দার অত্যন্ত সচেতনভাবে কাটানো উচিত। তাকে পরকালীন জীবনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সামনে রেখে প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
সদাচার ও সত্য-সুন্দর জীবনযাপনের শপথ নিতে হবে। মূলত মাসব্যাপী নিরলস সাধনার মাধ্যমে একজন মুমিনের শারীরিক, মানসিক, আত্মিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক দিকগুলোর উন্নতির ব্যবস্থা হচ্ছে এ মাহে রমজান। তাই এর প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত গুরুত্ব ও আন্তরিকতার সঙ্গে ইবাদতের মধ্য দিয়ে আমাদের কাটাতে হবে।
সার্বিক অর্থে রমজান হচ্ছে একটি প্রশিক্ষণের মাস, খোদার সন্তুষ্টি অর্জনের মাস, আত্মসংযম ধৈর্য ও সহনশীলতার মাস। এ মাসে নেক কাজের দিকে যেমন বেশি বেশি অগ্রসর হতে হবে, তেমনি মুক্ত থাকতে হবে সব ধরনের পাপাচার থেকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের একনিষ্ঠভাবে সিয়াম পালনের তাওফিক দিন। আমিন!
লেখক : ইমাম, আমীর উদ্দিন দারোগা ঘাট মসজিদ, বাবুবাজার, ঢাকা
Leave a Reply