বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৬ অপরাহ্ন
বিনোদন ডেস্ক::
আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমণিকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। বুধবার বনানীর বাসা থেকে বিপুল পরিমান বিদেশি মদসহ তাকে আটক করা হয়। র্যাবের একটি দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে।
এর আগে বিকালে রাজধানীর বনানীতে এই নায়িকার বাসায় অভিযান চালায় র্যাব।
অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে নায়িকা পরীমণির বাসায় অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকও করা হতে পারে। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’
এর আগে বিকালে হঠাৎ নিজের ফেসবুক থেকে লাইভে আসেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। তিনি জানান, তার বাসার দরজায় কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি এসে হাজির হয়েছেন। এ কারণে বেশ আতঙ্কে রয়েছেন তিনি।
পরী লাইভে বলেন, ওই ব্যক্তিরা বাসার গেট ভেঙে উপরে এসে বারবার কলিং বেল বাজাচ্ছেন। পরিচয় জানতে চাইলে তারা পুলিশের লোক বলে দাবি করছেন। যদিও তাদের গায়ে বিভিন্ন রঙের পোশাক থাকায় বিশ্বাস করতে পারছেন না পরী।
এই অবস্থায় পরীমণি বনানী থানায় যোগাযোগ করেছেন বলেও লাইভে জানান। সেখান থেকে ফোর্স পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তারা এখনো এসে পৌঁছায়নি।
পরীর ভাষ্য, ‘আমি এ কারণেই ভয় পাচ্ছিলাম। এখানে আমার কোনো নিরাপত্তা নেই। আমি এতো অসুস্থ। তিন দিন ধরে ঠিকমতো উঠতেই পারছি না।’
উল্লেখ্য, নায়িকা পরীমণি দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায় রয়েছেন। কিছুদিন আগে ঢাকার সাভারের বোটক্লাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগ করে আলোচনায় আসেন পরীমণি।
গত ১৩ জুন রাতে নিজের ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে পরীমণি দাবি করেন তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর একটি খোলাচিঠি লিখে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনারও অনুরোধ জানান তিনি। এরপরই দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
রাতেই নিজের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে পুরো ঘটনার বয়ান দিয়ে নিজের জীবনের শঙ্কার কথা তুলে ধরেন এই চিত্রনায়িকা। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় শুরু হয়। পরদিন ১৪ জুন সকালে সাভার থানায় ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলাও দায়ের করেন চিত্রনায়িকা পরীমনি।
ওই দিনই প্রধান অভিযুক্ত নাসির ইউ মাহমুদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার বাকি চারজন হলেন- অমি, লিপি, সুমি ও স্নিগ্ধা। এ সময় মদ, বিয়ারসহ মাদক ও বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।
মামলার এজাহারে পরী দাবী করেন, পরিকল্পিতভাবে ঘটনার রাতে পরীকে ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে যান অমি। সেখানে ব্যবসায়ী নাসির তাকে জোর কওে মুখের মধ্যে মদের বোতল ঢুকিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তিনি এই নায়িকার শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করেন এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন।
পরীমণির করা ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় কয়েকদিন জেলে থাকার পর গত ২৯ জুন আদালতে জামিন পান নাসির উদ্দিন আহমেদ। এরপর তিনি বোট ক্লাবের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পরীমণি মদ পান করার জন্য সেদিন বোট ক্লাবে তাণ্ডব চালান। তাণ্ডবে বাধা দিলে ৩-৪ দিন পর তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তার (নাসির) নামে মিথ্যাচার করেন।
অন্যদিকে এ সময় মদ্যপ অবস্থায় গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাব নামে আরেকটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগও উঠে নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তখন ভাইরাল হয় এই নায়িকার মদ্যপ অবস্থায় উচ্ছৃঙ্খলভাবে চলাফেরার কিছু দৃশ্যও।
Leave a Reply