নিজেস্বপ্রতিবেদক: সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রবাসী পরিবারের রোষনলে পড়ে হয়রানি মূলক মিথ্যা অভিযোগ ও মামলায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন আহমদ আলী নামের এক ইজিবাইক (টমটম) চালক। এক বছর ধরে তিনি এসব হয়রানিতে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কোটি টাকার জায়গা আত্মসাৎ করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগি ওই টমটম চালক আহমদ আলী মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি ও সুবিচার পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বুধবার বিকেলে জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।সংবাদ সম্মেলনে আহমদ আলী অভিযোগ করে বলেন,তিনি উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসি গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় একজন টমটম চালক। শ্রীরামিসি মৌজায় আমার বাবার নামে ৩৩ শতাংশ বাড়ি রকম ভূমি রয়েছে। আমার বাবা মরহুম ধন মিয়া জীবিত থাকাকালিন ১৯৮০ সালে আমার চাচি মালা বিবির নিকট ২২ শতাংশ ভূমি সাফ কাবালা মূলে বিক্রি করেন। কিন্তু এরপর থেকে আমার চাচি ওই ৩৩ শতাংশ ভূমি দখলে নিয়ে তাদের নামে রেকর্ড করিয়ে ভোগদখল করে আসছেন। বিষয়টি আমি জানার পর আমার চাচিকে বললে তিনি আমাকে কোন সদুত্তর না দেওয়ায় আমি গ্রামবাসীকে নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসি। সালিশে আমার পাপ্য জায়গা ১১ শতাংশের দখল আমি ফিরে পেলেও তাদের নামে রেকর্ড রয়ে যায়। যা ফিরে পেতে সুনামগঞ্জ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুানালে একটি মামলা দায়ের করি। যা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু এরপর থেকে আমার ও্পর একের পর এক নানা অভিযোগ ও মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা শুরু হয়। মাত্র ১১ শতাংশ ভূমির জন্য আমার মতো একজন টমটম চালক-কে গত ৯ বছরে ১৬টি মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ ও মামলার সম্মুখীন হতে হয়েছে। এসব হয়রানিমূলক অভিযোগ ও মামলা চালাতে গিয়ে আমি এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি।তিনি বলেন, স্ত্রী সন্তান সহ আমার আট সদস্যের পরিবারের একমাত্র ভরণপোষণকারী আমি সামান্য টমটম চালিয়ে সংসারের সকল খরচ বহন করছি। ওই জায়গা জমিকে কেন্দ্র করে আমার চাচি মালা বিবি, চাচাত ভাই লন্ডন প্রবাসী রহমত আলী, দেশে থাকা চাচাত ভাই আফিক আলী ও চাচাত ভাই রফিক আলীর স্ত্রী সুমাইয়া ইসরাত গংরা আমিসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে আমাকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং হয়রানি করছে। সর্বশেষ চলিত বছরের ২ ফেব্রয়ারি তারিখে আমার চাচাত ভাই লন্ডন প্রবাসী রফিক আলীর স্ত্রী সুমাইয়া ইসরাত বাদী হয়ে আমি ও আমার ভাতিজা আব্দুল সাহারের বিরুদ্ধে ২১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। উক্ত এজাহারে আমি আহমদ আলীর বিরুদ্ধে ৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। যার মধ্যে ৬ লক্ষ টাকা রূপালি ব্যাংক পিন নাম্বার ৩১২৪৪৪৫৫৬৬৭০১সি- এর কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু উক্ত টাকা আমি উত্তোলন করিনি এবং এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে অপর ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ২০২৩ সালে দেওয়া হয়েছিল। যা তাঁহার কথা মতো ভাতিজা সেলিমকে ঘর তৈরি বাবদ ৪০ হাজার, ভাগনি সেলিনা বেগমকে ২৫ হাজার এবং আমার ঘর তৈরির জন্য ৪৫ হাজার টাকা সাহায্য সহায়তা হিসেবে দেওয়া হয় আর বাকি ২০ হাজার টাকা উনার কথা মতো গরিব অসহায়দের মধ্যে বাজার-সদাই করে দেই। বির্তমানে ওই মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে।অপরদিকে, আমার ভাতিজা আব্দুল সাহার এর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ করেন এরমধ্যে প্রথম দফার নগদ ৬ লক্ষ ৫০ হাজার ও দ্বিতীয় দফায় রূপালি ব্যাংক পিন নাম্বার ৩১২৪৪৪৫৫৬৬৬৭৯ঈ এর মাধ্যমে আরও ৫ লক্ষ টাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা বানোয়াট। বাকি ২ লক্ষ ৩০ টাকার তাঁহার কথা মতো বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা হয়েছে এবং আব্দুল সাহাব মামলার বাদীনী সুমাইয়া ইসরাতের কেয়ারটেকার হিসেবে দীর্ঘদিন বেতনভূক্ত ছিল। যার প্রমাণাদি রয়েছে। ভুক্তভোগি ওই টমটম চালক আহমদ আলী প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে বাদী পক্ষের যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত ৩০ এর অধিক প্রবাসী পরিবারের সদস্যরা আমার ওই ১১ শতাংশ জায়গার জন্য আমাদেরকে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা মোকদ্দমার অভিযোগ দিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানি করে আসছেন। এসব মিথ্যা মামলা মকদ্দমা চালাতে গিয়ে আমি কয়েক লক্ষ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। তাদের হুমকিদামকি হয়রানিতে আমি আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। চলমান তদন্তাধীন মিথ্যা অভিযোগ মামলা থেকে মুক্তি সহ প্রশাসনের ন্যায় বিচার ও মিথ্যা অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে আহমদ আলীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাঁর ছেলে আলী হামজা মামুন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, আহমদ আলী, আব্দুল সাহার, তামিম আহমদ, আব্দুর রহিম।
Leave a Reply