শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক::
নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। প্রথমে তাকে আটক করা হলেও পরে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহের গ্রামের বাড়ি যাওয়ার পথে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টায় ভৈরবে তল্লাশি চালিয়ে রেল পুলিশ তাকে আটক করে। নগদ টাকা ছাড়াও এ সময় তার নিজের, স্ত্রী ও তার শ্যালকের নামে আড়াই কোটি টাকার তিনটি এফডিআর, এক কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক, বিভিন্ন ব্যাংকের ৫টি চেকবই ও ১২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ওসি আবদুল মজিদ যুগান্তরকে বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তল্লাশি করে ফেনসিডিল ও নগদ টাকাসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে এবং মাদকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে। তল্লাশি চালানোর সময় তিনি প্রথমে আমার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন এবং হুমকি-ধমকিও দেন। বলেন, ‘ভালো হচ্ছে না, তোমাকে দেখে নেব। পরে এক পর্যায়ে তিনি (সোহেল) ঘাবড়ে যান এবং ঘামতে থাকেন। অসুস্থ অনুভব করলে পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চেক-আপের পর তাকে আবার থানা হাজতে নিয়ে আসা হয়।’ রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি থানা হাজতে ছিলেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস শুক্রবার ময়মনসিংহ যাওয়ার উদ্দেশে সকাল ৭টায় এই বিপুল পরিমাণ টাকা, এফডিআর, চেক ও ফেনসিডিল ব্যাগে ভরে চট্টগ্রাম থেকে বিজয় এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনটি ভৈরব রেলস্টেশনে বিরতি দিলে রেলওয়ে পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়েন।
এ সময় ১২ বোতল ফেনসিডিল ও বিভিন্ন ব্যাংকে তার নিজের নামে ১ কোটি টাকা, তার স্ত্রী হোসনে আরার নামে ১ কোটি টাকা ও শ্যালক রাকিবুল হাসানের নামে ৫০ লাখ টাকার এফডিআর উদ্ধার করেন। ২৮ অক্টোবর ইস্যু করা তার নামে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার তিনটি চেকও উদ্ধার করা হয়।
টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে গ্রেফতার সোহেল রানা ভৈরব থানার ওসিকে একেক সময় একেক তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে তিনি ওসিকে বলেন, এই টাকা আমার শ্যালকের। সে মাদকের ব্যবসা করে। আমি তার পার্টনার।
যুগান্তরের এই প্রতিবেদকও আসামি সোহেল রানার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সোহেল রানা জানান, এই টাকা মাদক বিক্রির ও আত্মীয়স্বজনের।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার নগদ টাকা ও ফেনসিডিলসহ আটক হওয়ার বিষয়টি শুনেছি। এত টাকা তিনি কোথায় পেলেন এবং এর উৎস কোথায় তা খতিয়ে দেখা হবে।’
কথা হয় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিকের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে জানান, তিনি ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে যাচ্ছিলেন। গ্রেফতারের বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি ৮-৯ মাস আগে চট্টগ্রাম কারাগারে জেলার হিসেবে যোগদান করেন।
সূত্র জানায়, তল্লাশির পর ব্যাগসহ তাকে প্রথমে ভৈরব রেলওয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ব্যাগের ভেতর থেকে এসব উদ্ধার করা হয়। এত বিপুল অংকের নগদ অর্থ গুনতে গিয়ে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়। থানায় আনার পরই তিনি তার পরিচয় দেন।
Leave a Reply