রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৮ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক::
ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী ও আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে শুক্রবার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল মাহমুদ ফায়জুল কবীর এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, গত ২৭ মার্চ নুসরাতকে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা নিলে হয়তো নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা এড়ানো যেত।
শুক্রবার দুপুরে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অফিসকক্সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আল মাহমুদ ফায়জুল কবীর এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার জন্য স্থানীয় প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না। একজন মানুষের প্রথম এবং প্রধান অধিকার হচ্ছে বেঁচে থাকা। এটাই হচ্ছে মানবাধিকার। ওসি কর্তৃক নুসরাতের বক্তব্যে রেকর্ডিং এর ব্যাপারে তিনি বলেন, একজন মানুষ যখন থানায় বিচারপ্রার্থী হন, তখন পুলিশ কর্মকর্তার উচিত তার দায়িত্ব কতটুকু সে ব্যাপারে দায়িত্বশীল হওয়া। ওসি যদি ভিকটিমকে হেনস্তা করে থাকেন সে ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হবে।
তিনি বলেন, ১৪৪ ধারা জারির মধ্যে ৪ জন মানুষ এ ধরনের নৃশংসতম ঘটনা করে পালিয়ে যাবে, কেউ দেখবে না বা কেউ জানে না এটা হতে পারে না। মামলাটি গুরুত্বসহকারে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা জজকে সুপারিশ করবে। একজন ভালো ক্রিমিনাল সেকশনের আইনজীবী নিয়োগ করে নুসরাতের পক্ষে মামলা পরিচালনা করার জন্যও জেলা জজকে সুপারিশ করবে মানবাধিকার কমিশন। এ মামলায় দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে মানবাধিকার কমিশন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
আল মাহমুদ বলেন, বেশ কয়েকজন ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষক, পুলিশসহ অনেকের সাক্ষ্য নিয়েছেন। তদন্তসাপেক্ষে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন যে ২৭ মার্চের ঘটনার সঙ্গে ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার যোগসূত্র রয়েছে।
আল মাহমুদ এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় সোনাগাজী পৌঁছে মাদ্রাসায় যান। সেখানে কয়েকজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
দুপুরে মানবাধিকার কমিশনের কর্মকর্তারা নুসরাত জাহান রাফির বাড়িতে যান। সেখানে রাফির পরিবারের সদস্যদেরকে সমবেদনা জানিয়ে বলেন, নুসরাতের মতো আর কোনো মেয়ে যেন এভাবে মারা না যায়। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে মানবাধিকার কমিশন তাদের পরিবারের পাশে থাকবে।
বাদ জুমা ওই কর্মকর্তারা নুসরাতের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে ফাতেহা পাঠ করে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
৬ এপ্রিল নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। গত বুধবার রাতে নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
Leave a Reply