শুক্রবার, ০৪ Jul ২০২৫, ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে ধর্ষণের পর কিশোরীকে নদীরপাড়ে ফেলে গেল প্রেমিক! জগন্নাথপুরে মোবাইলের দোকানে দুঃসাহসিক চুরি জগন্নাথপুর উপজেলা বিএনপির সভায় বক্তারা, কয়সর আহমদকে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন জগন্নাথপুরে সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলি বিনিময়কালে সেনেটারি মিস্ত্রি নিহত  ভূয়া নির্বাচনের কারিগর নূরুল হুদাকে জুতাপেটা দিয়ে পুলিশে সৌর্পদ সাবেক ৩ সিইসির বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা ডিসেম্বরে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে পারে: ডা. তাহের ‘হতাশ’ নেতানিয়াহু, ট্রাম্পকে দ্রুত যুদ্ধের মাঠে চান: বিশ্লেষক

রমজানুল মোবারক: পরিশুদ্ধ হোক আত্মা

রমজানুল মোবারক: পরিশুদ্ধ হোক আত্মা

 

হে খোদা ছড়িয়ে দাও

তোমার করুণার সুর

মহামারী করোনা হোক দূর।

‘রমজান’ একটি আরবি শব্দ, যার অর্থ পুড়িয়ে ফেলা। সিয়াম সাধনায় পাপমোচন হয়। রমজান আমাদের পাপকে জ্বালিয়ে দেয়। সিয়াম সাধনা চালু হয়েছে আমাদের কল্যাণের জন্য। উন্নতির জন্য। তাকওয়া অর্জনের জন্য।

আল্লাহ আমাদের বলেন, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন করে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপরও ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা এর মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করতে পারো’ (সূরা বাকারা : ১৮৩)।

আল্লাহ স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন, আমাদের জন্য সিয়াম ফরজ করা হয়েছে তাকওয়া অর্জনের জন্য। যার মাধ্যমে আমরা মুত্তাকি হতে পারি। আমরা জানি ইসলামে ইবাদতের সর্বাধিক সওয়াব ও পুরস্কার পাওয়া যায় রমজানের সিয়াম সাধনায়।

হাদিসে বলা হয়েছে- ‘মানুষের প্রতিটি নেক কাজের জন্য দশ থেকে সাতশ গুণ’ পর্যন্ত প্রতিদান নির্ধারিত রয়েছে।

কিন্তু মহান আল্লাহ বলেন, ‘সিয়াম তার ব্যতিক্রম। সায়েম একমাত্র আমার জন্যই সিয়াম সাধনা করেছে। তাই আমি নিজ হাতেই তাকে এর পুরস্কার দেব। কারণ সে তো আমার জন্যই যৌনান্দ ও পানাহার ত্যাগ করে সংযম অবলম্বন করেছে।’

হাদিসে এসেছে- “জান্নাতে ‘রাইয়ান’ নামের একটি দরজা আছে। সায়েম ছাড়া আর কেউ সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে যেতে পারবে না।” এটি সায়েমের বিশেষ মর্যাদা। ‘রাইয়ান’ শব্দের অর্থ হল- খুবই তৃপ্তিসহকারে পান করা।

সায়েম জান্নাতে গিয়ে এমন সুস্বাদু পানীয় পান করবে যে, আর কোনোদিনই সে তৃষ্ণার্ত হবে না। এটি সায়েমের বিশেষ পুরস্কার। কারণ সায়েম ক্ষুধার চেয়েও পিপাসায় কষ্ট করে অনেক বেশি। অথচ সায়েম সেই পিপাসায় নিজেকে সংযমী রেখেছে।

হজরত আবু উমামা (রা.) বলেন, ‘আমি নবীজির (সা.) কাছে জানতে চাইলাম, হে রাসূল, আমাকে এমন একটি কাজের আদেশ দিন, যার মাধ্যমে আল্লাহ আমাকে উপকৃত করবেন। তখন নবীজি (সা.) বললেন- তুমি সিয়াম সাধনা করো। এর কোনো তুলনা হয় না।’

ইতিহাস থেকে জানা যায়, এরপর সাহাবি আবু উমামার (রা.) ঘরে দিনের বেলা খাওয়ার জন্য আর কোনোদিন রান্না হয়নি।

মনে রাখতে হবে, রমজান মাস ত্যাগের মাস, ভোগের নয়। রমজান মানুষকে ত্যাগ, সংযম, উদারতা, পুণ্যবান হওয়ার অনুপ্রেরণা ও প্রশিক্ষণ দেয়।

সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মানুষের দৈহিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় এবং নফসের লাগামহীন চাহিদা ও খারাপ লোভ-লালসা দূর হয়। ফলে নৈতিক দিক থেকে আত্মার পরিশুদ্ধি ঘটে।

নবীজি (সা.) বলেছেন- ‘সিয়াম সাধনা হল জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার অন্যতম সুরক্ষিত দুর্গ।’ বাস্তবেও তাই ঘটে। সিয়াম সাধনা সায়েমকে পাপ কাজ ও শয়তান থেকে রক্ষা করে।

সত্যিকার আত্মসংযমী সায়েম তাকওয়ার অনুশীলন করতে গিয়ে হাত, পা, চোখ, কান ও নাকের সংযম করে। তাই আল্লাহ রমজানকে ধৈর্য ও সংযমের কর্মসূচি হিসেবে ঘোষণা করেছেন। মানব জীবনে মাঝে মাঝে ধৈর্য কমে যায়। তখন পানাহার ও যৌন চাহিদা থেকে দীর্ঘ এক মাস বিরত রাখার মাধ্যমে তার অনুশীলন করতে হয়।

আত্মার সংযম সব ইবাদতের মূল কথা। তাই সিয়াম সাধনার জন্য মনমানসিকতা, চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারণা এবং প্রবৃত্তিকে পবিত্র ও কলুষমুক্ত হতে হবে। তবেই তো সিয়াম সাধনায় সংযমী হয়ে পূর্ণ তাকওয়া অর্জন করা যাবে।

একজন সায়েম মহামারী করোনার বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রোজা রাখবে, খোদার কাছে ক্ষমা চাইবে। এর মাধ্যমেই সব বিপদ-আপদ দূর হবে।

লেখক : হাফেজ, মাওলানা, মুফতি; লেখক ও

গবেষক ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com