রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:১৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শংকর রায় আর নেই এবার ৩২ টাকা কেজিতে ৫ লাখ টন ধান,   ১২ লাখ টন চাউল কিনবে সরকার  জগন্নাথপুরে লন্ডন প্রবাসীর বাড়ী বেদখল চেষ্টায় সংবাদ সম্মেলন জগন্নাথপুরে হাওরে ধান কাটার ধুম, বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতের ধানে চিটা শান্তিগঞ্জে বর্ণাঢ্য আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শান্তিগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঈদ পুনর্মিলনী ও আলোচনা সভা  উন্নত জাতি বিনির্মাণে সাংবাদিকরা অগ্রণী ভূমকিা পালন করেন: এমএ মান্নান এমপি জগন্নাথপুরে সার-বীজ বিতরন কালে সাবেক মন্ত্রী, দেশে এখন পরিবর্তনের হাওয়া বইছে দারুল ক্বিরাত হবিবপুর কেশবপুর ফাজিল মাদরাসা শাখা কেন্দ্রের সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত  জগন্নাথপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

দুর্ভিক্ষের যে সমাধান দিয়েছে কোরআন

দুর্ভিক্ষের যে সমাধান দিয়েছে কোরআন

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্কঃ   দুর্ভিক্ষ কিভাবে মোকাবেলা করতে হবে এবং দুর্ভিক্ষের আগে সরকার ও জনগণ কিভাবে প্রস্তুতি নেবে এ বিষয়ে বহু আগেই জানিয়ে রেখেছে ঐশীগ্রন্থ আল কোরআন। পবিত্র কোরআনের সূরা ইউসুফে একটি রাষ্ট্রের দূর্যোগকালীন অর্থনীতি নিয়ে যে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান বাস্তবতায় রাষ্ট্র ও বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য অনুস্বরণীয় হতে পারে। আসন্ন দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় তা অবশ্যই কাজে লাগবে যদি এ সূরার ব্যাখ্যা থেকে যথাযথ শিক্ষা নেয়া যায়। এ ঘটনা উঠে এসেছে হিব্রু বাইবেল ও বাইবেলেও।

প্রাচীন মিশরে সাত বছরের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নেমে এসেছিল। দুর্ভিক্ষ শুরুর সাত বছর আগেই মহান আল্লাহ মিশরের বাদশাহকে একটি স্বপ্ন দেখান। যে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিয়ে নবী হযরত ইউসুফ (আ.) জানিয়ে দেন, মিশরে সাত বছর প্রচুর শস্য ও ফলফলাদি উৎপাদন হবে, বাকী সাতবছর ভয়াবহ দূর্ভিক্ষ নেমে আসবে। এ থেকে বাঁচার উপায় হচ্ছে প্রথম সাতবছরের বাড়তি শস্য জমা রাখা। তাহলে দুর্ভিক্ষের সাতবছর অনায়াসেই কাটিয়ে দেয়া যাবে। শস্য মজুদের দায়িত্ব পালন করতে হবে সরকারকেই। কিন্তু প্রাচীন মিশরের বিশাল সাম্রাজ্যে এতো বড় দায়িত্ব সহজ ছিল না। ফলে হযরত ইউসুফকে (আ.) খাদ্য ও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে তাকেই কাজে নামিয়ে দিলেন বাদশাহ।
বড় বাধা ছিল প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ, শস্য সংগ্রহ ও তা সাত বছর সংরক্ষণ। হযরত ইউসুফ (আ.) শুরুতেই একটি পরিকল্পনা করলেন। অঞ্চলভিত্তিক বড় বড় গুদাম নির্মাণ করলেন, যোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ করলেন শস্য সংগ্রহে। ফসল উঠার সময় হলে তারা সরাসরি কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং জানিয়ে দেয় রাষ্ট্রের কাছে এ গম বিক্রি করা হলে তারা বিশেষ সুবিধা পাবেন। কৃষকদের নাম তালিকাভুক্ত হবে এবং দূর্যোগকালীন সময়ে তাদের এর চেয়ে কম দামে শস্য দেয়া হবে। ছদ্মবেশে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের ভালোমন্দ জেনে নিতেন মন্ত্রী নিজেই। সে হিসেবে তদারকি ও সার্বিক ব্যবস্থা নিতেন। এভাবে সাত বছর কৃষকদের অতিরিক্ত ফসল রাষ্ট্রীয় গুদামে চলে আসে। এগুলো নষ্ট হবে কিনা এটি ছিল বড় দুশ্চিন্তার বিষয়। মন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, শীষসহ গম সংরক্ষণ করা হবে তাহলে আর নষ্ট হবে না। বিষয়টি স্রষ্টাই জানিয়ে দিয়েছেন।

এরপর দুর্ভিক্ষের সাতবছর শুরু হলো। এমন পরিস্থিতি এল যখন অর্থের বিনিময়ে খাদ্য পাওয়া অসম্ভব হয়ে উঠল। সব শ্রেনী পেশার মানুষ দলে দলে খাদ্যের জন্য আসতে লাগল। সবাইকে ন্যায্য মূল্যে গম দেয়া হলো পরিবারের সদস্য সংখ্যা অনুযায়ী। যাদের সামর্থ নেই তাদের দেয়া হলো বিনামূল্যে। এভাবে সাতবছর পুরো মিশরবাসী রাষ্ট্রের কাছ থেকে খাদ্য সুবিধা পেল। শুধু তাই নয়, ভয়াবহ ওই দুর্ভিক্ষে আশপাশের অনেক অঞ্চল থেকেও মানুষ এসে মিশর থেকে খাদ্য সংগ্রহ করেছে। হযরত ইউসুফের মাধ্যমে আল্লাহ কোটি কোটি মানুষকে অনাহারে মৃত্যু থেকে রক্ষা করলেন।
সূরা ইউসুফ থেকে যে বিশেষ শিক্ষা আমরা পাই তা হচ্ছে- দুর্ভিক্ষ থেকে জনগণকে বাঁচাতে রাষ্ট্রকেই খাদ্যশস্য মজুদ করতে হবে, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার আলোকে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের রাষ্ট্রের মাঠ পর্যায় পর্যন্ত দায়িত্ব দিতে হবে। কৃষকদের সুবিধা দিতে হবে এবং তাদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে কিনে নিতে হবে। দুর্ভিক্ষ অপর্যাপ্ত উৎপাদনের কারণে নয় বরং খাদ্যশস্যের সুসম বন্টনের অভাবে হয়। তাই রাষ্ট্রের পূর্বপ্রস্তুতি ও যথাযথ ব্যবস্থার মাধ্যমেই সম্ভব দেশের মানুষকে দুর্ভিক্ষ বা অনাহার থেকে রক্ষা করা।

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com