শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪৪ অপরাহ্ন
সানোয়ার হাসান সুনু :: আসন্ন ২৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে অধিকাংশ ইউনিয়নে বিএনপি ও জামাতের প্রার্থী না থাকায় বিরোধী দল সমর্থক ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো উৎসাহ পরিলক্ষিত হয়নি। নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর সাথে বিদ্রোহী আওয়ামীলীগ ও সতন্ত্র প্রার্থীর লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সাধারণ ভোটারদের প্রশ্ন নির্বাচন সুষ্ঠ হবেতো? নির্বাচনের সময় যতো ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ ও প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। পাল্লা দিয়ে চলছে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ। প্রার্থীগণ দিনরাত চষে বেড়াচ্ছেন পাড়া-মহল্লা। এতে রীতিমতো নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। তাই শেষ মুহুর্তে প্রার্থীদের লড়াই তুঙ্গে রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন স্থানে টাকার ছড়াছড়ি চলছে বলে অনেকে জানিয়েছেন। যে কোন মূল্যে নিজেদের বিজয় নিশ্চিতের লক্ষে প্রার্থী ও সমর্থকরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মাঠে। এতো সবের মধ্যে একজন যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেয়া নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে হিসাব-নিকাশ। এরপরও ভোট নিয়ে রয়েছে আশংকা। সুষ্ঠ ভোট হবেতো?
নির্বাচনে ৭ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মোট ৩৭ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে লড়াই করছেন। তাঁরা হলেন, ১নং কলকলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাল হোসেন রানা, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী লন্ডন প্রবাসী রফিক মিয়া ও আবদুস সোবহান। এ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর সাথে সতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হতে পারে বলে ভোটারা জানান।
২নং পাটলি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আংগুর মিয়া, বিদ্রোহী আওয়ামীলীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজুল হক, আতিকুর রহমান আতিক, আবদুল হাই আজাদ ও এনামুল ইসলাম। এ ইউনিয়নে দ্বিমুখি লড়াই হতে পারে। এ লড়াইয়ে আংগুর মিয়া ও সিরাজুল হকের নাম শোনা যাচ্ছে।
৫নং চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল গফুর, বিদ্রোহী আওয়ামীলীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগ সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম বকুল, বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আরশ মিয়া, মুজিবুর রহমান, আবদুল মমিন ও ইলাছ মিয়া।
৬নং রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ ছদরুল ইসলাম, বিদ্রোহী আওয়ামীলীগ¿ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম রানা, ছালিক মিয়া, আমান উদ্দিন আহমদ লেচু, সাবেক চেয়ারম্যান মজলুল হক ও সিরাজুল ইসলাম আসিক। এ ইউনিয়নে শেখ ছদরুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম রানার মধ্যে দ্বিমুখি লড়াই হতে পারে।
৭নং সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আবুল হাসান, বিদ্রোহী আওয়ামীলীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী মকসুদ মিয়া, আজহারুল ইসলাম কামালী, সৈয়দ আসাদ হোসেন চৌধুরী ও মুকিতুর রহমান। এ ইউনিয়নে আবুল হাসান ও মুকিতুর রহমানের মধ্যে লড়াই হতে পারে।
৮নং আশারকান্দি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুস ছত্তার, বিদ্রোহী আওয়ামীলীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আইয়ূব খান, জাতীয় পার্টি মনোনীত শাহ তারেক রহমান নিপু, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী পারভেজ, মোহাম্মদ আলী, আহমেদ হোসাইন, লেবু মিয়া ও সৈয়দ জমিরুল হক।
৯নং পাইলগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী সুন্দর উদ্দিন, বিদ্রোহী আওয়ামীলীগ চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা মখলুছ মিয়া, চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারুক আহমদ ও দবিরুল ইসলাম। মূল লড়াইয়ে মখলুছ মিয়া, ফারুক আহমদ ও সুন্দর উদ্দিনের নাম শোনা যাচ্ছে।
এছাড়া ৭ ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডে নারী সদস্য পদে ৮৯ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ২৩১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
শুক্রবার রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলামের সাথে আলাপ হলে তিনি যুগান্তরকে জানান,
সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রশাসন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হবে। উপজেলার সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্র সহ ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার মুজিবুর রহমান জানান, নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের জন্য সংলিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা বদ্ধ পরিকর। এখানে কোনো কারচুকির সুযোগ দেওয়া হবে না। তিনি জানান, রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে।
Leave a Reply