নিজস্ব প্রতিবেদক::
ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক (টমটম) ভাড়ায় চালিয়ে বৃদ্ধ মা -বাবা, স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে কোনোরকম সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন হতদরিদ্র যুবক মিজান মিয়া (৩০)। অনেক কষ্টের জমানো ৬ হাজার টাকায় কিনেন একটি পুরাতন স্মার্টফোন। হঠাৎ একদিন ওই স্মার্টফোনে কল আসে পুলিশের। কল ধরতেই পুলিশ তাঁকে জানায়, এ মোবাইল কোথায় পেয়েছো? এটি একজনের হারিয়ে যাওয়া মোবাইল! পুলিশ ওই যুবককে থানায় আসতে বলে। তাৎক্ষণিক মোবাইলটি নিয়ে থানায় হাজির হন টমটম চালক মিজান মিয়া।
মিজান সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার ভবানীপুর এলাকার আবুল মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, গত ৬ মে জগন্নাথপুর উপজেলা বাউল কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আব্দুল পরান নিজের ব্যবহৃত স্মার্টফোন হারিয়েছে উল্লেখ করে জগন্নাথপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন। এর প্রেক্ষিতে ৩ সেপ্টেম্বর থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া স্মার্টফোনটি ওই টমটম চালকের কাছে পায়।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশ মিজানকে কল করার পর সে মোবাইলটি নিয়ে হাজির হয়। সে জানায় মোবাইলটি ৬ হাজার টাকায় একজনের নিকট থেকে কিনেছে। দরিদ্র ওই টমটম চালকের কথার সব সত্যতা পাওয়ায় মোবাইল কেনার টাকা ফিরিয়ে দিয়ে মোবাইলটি প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ওই টমটম চালক ভাড়ায় গাড়ি চালিয়ে খুব কষ্টে বৃদ্ধ বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ করে আসছে। বর্তমানে এমন দায়িত্ববান ছেলে পাওয়া যায় না। তাই কলকলিয়া ইউনিয়নের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক লন্ডন প্রবাসীর সঙ্গে কথা বলে তাকে একটি ইজিবাইক (টমটম) উপহার দেওয়া হয়েছে। যাতে করে স্বাচ্ছন্দে মিজান তার পরিবার নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে। গত সোমবার রাতে টমটমটি মিজানের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ওই টমটম চালক মিজান মিয়া বলেন, প্রতিদিন গাড়ি ভাড়া ৩৫০ টাকা দিয়ে মাত্র ২০০ থেকে ২৫০ টাকা রুজি হতো। এখন নিজের গাড়ি হওয়ায় প্রতিদিন ৫শ থেকে ১হাজর টাকা রুজি হবে। ওসি স্যারসহ যিনি গাড়ির টাকা দিয়েছেন তাঁদের সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
Leave a Reply