সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: রাত পোহালেই সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নে বসবে খেতাশার ওরুস ও মেলার আসর। মদ ও জুয়ার আসর বসানোর নামে ওরুস ও মেলার প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। বিশাল মাঠ জুড়ে বাধা হয়েছে দোকানীদের প্যান্ডেল। একাধিক স্থানে টানানো হয়েছে গানের আসরের ছামিয়ানা। নির্বাচনকালীন সময়ে বৃহৎ জনসমাগমের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বৃদ্ধাঙ্গলী দেখাচ্ছেন ওরুস ও মেলার আয়োজকরা। প্রশাসনে কোন অনুমতি ছাড়াই চলছে ওরুস ও মেলার মহড়া। প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়া ওরুস ও মেলা প্রাঙ্গনে বৃহত জমায়েত হলে আইনশৃংখলার অবস্থার অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, ওরুসকে কেন্দ্র করে মেলার আশেপাশে বসে কয়েক শতাধিক মাদকসেবীদের আস্তানা। তারা সেখানে প্রকাশ্যেই মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে থাকেন। স্থানীয় মাদক ব্যবসায়িরা এই দিন বাহির থেকে আমদানী করেন মদ গাজাসহ বিভিন্ন প্রকারের মাদক দ্রব্য। উঠতি বয়সি তরুণ ও মাদকসেবীরা উন্মুক্তভাবে গ্রহণ করেন এসব মাদক দ্রব্য। ওরুসকে কেন্দ্র করে যে মেলা বসে সেখানে চলে সিন্ডিকেটকারীদের অর্থ বাণিজ্য। মেলার মাঠ বিক্রি করা হয় দোকানীদের কাছে। এক হাত পরিমান স্থান বিক্রি হয় পাঁ”শত থেকে হাজার টাকায়। মেলা থেকে অর্জিত লক্ষ লক্ষ টাকা মাজার উন্নয়নে ব্যয় না হয়ে একদল মাজারপুজারী সিন্ডিকেটকারীদের পকেটস্থ হয় বলে জানান অনেকেই।
জানা যায়, মেলা প্রাঙ্গনে বিভিন্ন স্থান থেকে জমায়েত হন হাজার হাজার নারী পুরুষ। এসময় বখাটেরা মেলায় আগত নারীদের উক্তত্য করতে দেখা যায়। এলাকার উশৃংখল দাঙ্গাবাজ লোকেরা পূর্ব বিরোধের প্রতিশোধ নিতে মেলার স্থলকে বেচে নেন। প্রতিবছর মেলা প্রাঙ্গনে ছোটবড় অনেক দূর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায় বলে জানান স্থানীয়রা। যার রেশ আদালত পর্যন্ত গিয়ে টেকে। তাছাড়া মেলা প্রাঙ্গনে রিং,কড়ি,তাশ সহ বিভিন্ন জোয়ার আসর বসে। যেখানে এলাকার যুবক ও জোয়ারিরা টাকা দিয়ে খেলে থাকেন।
এদিকে উরুসের নামে এমন কর্মকান্ডকে মেনে নিতে পারছেন না এলাকার ধর্মপ্রান সচেতন মহল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এনিয়ে বিভিন্ন প্রুতিক্রিয়া দেখাতে দেখা যায় অনেককেই। তবে যারা উরুসে বিরোধিতা করে তাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকিধুমকি দিয়ে ধমিয়ে রাখার চেষ্ঠা করে উরুস আয়োজন কমিটি ও একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট মহল।
ওরুসের নামে এমন অসামাজিক কাজ বন্ধে প্রশাসনকে উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকার ধর্মপ্রাণ সতেনমহল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ওরুসের নামে প্রতিবছর বার্ণিজ্য করে থাকেন একটি মহল। মেলা প্রাঙ্গনে মানুষের কাছ থেকে জুলুম করে টাকা আদায় করা হয়। মাজারের আশে পাশে মাদকসেবীদের মহরা চলে। এতে এলাকার যুব সমাজ নষ্ট হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিবছর মেলায় মারামারি হয়ে থাকে। যার জন্য এলাকার শান্তি শৃংখলা নষ্ট হয়। মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য টিপু সুলতান বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অনুমতির আবেদন করেছি। তিনি মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ওরুস ও মেলার ব্যবপারে আমি কিছু জানি না। আমাদের কোন অনুমতি নেয়া হয়নি। অনুমতি ছাড়া কোন ওরুস ও মেলা হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সফি উল্লাহ বলেন, ওরুসের ব্যাপারে মাজারের লোকজন আমার কাছে মূখিক ভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু আমি তাদেরকে ডিসি স্যারের কাছ থেকে অনুমোতি নিয়ে ওরুস করার জন্য বলেছি।
Leave a Reply