শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫২ অপরাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্কঃ
এবারের ঈদে অন্যান্যবারের মতো সড়ক-মহসড়কে যানবাহনের লম্বা সারি দেখা যাবে না। ভোগান্তি আর যানজটের চিরচেনা দৃশ্যও দেখা যাবে না।
প্রিয়জনের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষাও থাকবে না গ্রামের বাড়ির স্বজনদের। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এমন নীরস এক ঈদই অপেক্ষা করছে দেশবাসীর জন্য।
গতকাল সোমবার পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপন ও অফিস আদেশ জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বলেছে, ঈদের ছুটিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকতে হবে। শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্যই নয়, সবার জন্যই এটা প্রযোজ্য হবে। এ সময় আন্ত জেলা যাত্রী পরিবহনও বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ এখন যে যেই জায়গায় আছে সেখানেই ঈদ পালন করবে।
এসব শর্ত রেখে সরকার ষষ্ঠ দফায় ৭ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়িয়েছে। এর মধ্যে পূর্বঘোষিত সব সরকারি ছুটিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সব মিলিয়ে সাধারণ ছুটি গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয়ে ১৬ মে পর্যন্ত অর্থাৎ টানা ৫৩ দিনে গড়াল।
এদিকে ১৬ মে পর্যন্ত গণপরিবহনও বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে সড়ক পরিবহন বিভাগ। অর্থাৎ আন্ত জেলা গণপরিবহন বন্ধের সঙ্গে বড় শহরগুলোতেও কোনো গণপরিবহন চলবে না।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘ঈদু ফিতরের সরকারি ছুটিতে কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবে না। ’ অন্যদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ‘আসন্ন ঈদের ছুটিতে জনগণকে নিজ নিজ স্থানে থাকতে হবে এবং আন্ত জেলা/উপজেলা/বাড়িতে যাওয়ার ভ্রমণ থেকে নিবৃত্ত করতে হবে। ’
তবে আগামী ১০ মে রবিবার থেকে দেশব্যাপী ‘সীমিত আকারে’ ব্যবসা-বাণিজ্য সচল হচ্ছে, খুলছে দোকানপাট। কিন্তু এই ‘সীমিত আকার’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে তার কোনো ব্যাখ্যা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা থেকে জারি করা অফিস আদেশে বলা হয়নি।
তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্র কালের কণ্ঠকে বলে, যেহেতু গণপরিবহন বন্ধ থাকছে, সাধারণ ছুটির সময় আন্ত জেলা বাস যোগাযোগও বন্ধ থাকবে, তাই দেশের মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চলাফেরা করতে পারবে না। বড় শহরগুলোতেও গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, এটাকেই ‘সীমিত আকার’ বলে অভিহিত করা হচ্ছে।
ছুটির বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এবার যে যেখানে আছেন, সেখানে থেকেই ঈদ পালন করতে হবে। এই প্রজ্ঞাপন শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নয়, দেশের সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য। ’
গত শনিবার ১৬ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়ানোর বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছিলেন জনপ্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে গতকাল তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হলো। প্রজ্ঞাপনে ১৪ মে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর সঙ্গে ৮, ৯ এবং ১৫ ও ১৬ মের সাপ্তাহিক ছুটি এবং ৬ মের বুদ্ধপূর্ণিমার ছুটি যুক্ত থাকবে।
এরই মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানা খোলা হয়েছে। এখন নতুন করে দোকপাট খোলার সিদ্ধান্ত এলো। চলমান রোজা ও আসন্ন ঈদ উপলক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ১০ মে থেকে ‘সীমিত আকারে’ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার অনুমতির তথ্য জানা গেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা এক অফিস আদেশ সূত্রে। দেশে করোনা শনাক্তের হার যখন বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে, ঠিক তখনই সরকারের তরফ থেকে ‘ব্যবসা-বাণিজ্যে’র স্বার্থে দোকানপাট খোলার এমন সিদ্ধান্ত এলো।
একই সঙ্গে জনসাধারণের চলাচলের সময়ও কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। নতুন ছুটির সময় রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বিশেষ প্রয়োজন (চিকিৎসা, লাশ দাফন, জরুরি সেবার কাজ) ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না। এর আগে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা ছিল।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, আগামী ৭ মে থেকে ১৪ মে পর্যন্ত জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা সীমিত করা যেতে পারে। এতে আরো বলা হয়েছে, ‘রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। ’ তবে এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে। ’ বড় বড় শপিং কমপ্লেক্সের বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘বড় শপিং মলগুলোর প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ’
Leave a Reply