শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরের স্বাস্থ্য ও রুচিসম্মত খাবারের নিশ্চয়তায় উদ্বোধন হলো মেজবান রেস্তোরাঁ ইংল্যান্ডের বার্ণলী সিটির সাবেক কাউন্সিলর কমিউনিটি নেতা মুজাক্কির আলীর স্বদেশ আগমন শান্তিগঞ্জে তারুণ্যের উৎসবের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ  জগন্নাথপুরে এনআইডি জালিয়াতির অভিযোগে নির্বাচন কর্মকর্তাসহ আটক ২  শান্তিগঞ্জে বরেণ্য শিক্ষাবিদ আব্দুর রউফ এর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত শিক্ষাবিদ মো. আব্দুর রউফ’র স্মরণ সভা আজ শান্তিগঞ্জে বিয়াম ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের শুভ উদ্বোধন সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর-ঢাকা মহাসড়কে গাছ ফেলে দুর্ধর্ষ ডাকাতি  জগন্নাথপুরে পুলিশী অভিযানে গ্রেফতার ৫ জগন্নাথপুরে সমলয় চাষাবাদের ব্লক প্রদর্শনীর উদ্বোধন

বিএনপি এখন কী করবে

বিএনপি এখন কী করবে

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক::
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়ের পর বিএনপি এখন কী করবে- এমন আলোচনা চলছে সব মহলে। দীর্ঘ ১২ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটির নেতারা আগামী দিনের করণীয় নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনাও শুরু করেছেন। দলের প্রাণশক্তি তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে ফেব্রুয়ারি অথবা মার্চে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা সফরে যাওয়ার কথা ভাবছেন।
পাশাপাশি ছাত্রদল, যুবদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ঢেলে সাজানো হবে। তবে এবার কাউন্সিলে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে এসব সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে বিএনপি। এছাড়া ভোটে অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে প্রার্থীদের মামলার পাশাপাশি আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েও মাঠে থাকবে।
এরই অংশ হিসেবে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার চিন্তা করছে দলটি। জানুয়ারির শেষদিকে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে এ জনসভার তারিখ নির্ধারণ হতে পারে। বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
দলটির নীতিনির্ধারকদের মতে, বিএনপির সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ। বাস্তবতার নিরিখে বিএনপিকে আগামী দিনের পথ চলতে হবে। দল ইতিমধ্যে নির্বাচন ও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। একই সঙ্গে নেতারা নতুন নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছেন। এ দাবি নিয়ে জনগণের কাছে যাবেন। ভোটের অনিয়ম তদন্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও যাবেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুগান্তরকে বলেন, দেশের জনপ্রিয় বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই দলটিকে নিশ্চিহ্ন করতে সরকার নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের চরমভাবে নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে। সর্বশেষ তামাশা ও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মনোবল ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আবার স্বমহিমায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। তাই সরকার যতই কৌশল গ্রহণ করুক এ দলটিকে ধ্বংস বা নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। বৈঠক করেই দলের পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।
২০০৬ সালের অক্টোবরে দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষমতার মুখ দেখেনি বিএনপি। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে এই দল। তাই ৫ বছর ধরে বিএনপি বিরোধী দলেও নেই। এ অবস্থায় সদ্যসমাপ্ত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়। দলটি ৫টি আসন পেলেও বিজয়ীরা শপথ নেয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টানা ক্ষমতার বাইরে থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নেতাকর্মীরা।
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া শত শত মামলা।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরাও মনে করেন, সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় সব নেতাকর্মী মামলায় জর্জরিত। তারা নিজেদের বাসাবাড়িতে ঘুমাতে পারছেন না। প্রথম কাজ এখন খালেদা জিয়াসহ নেতাকর্মীদের জামিন ও কারামুক্তি। এরপর দল গোছানো এবং অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার বিষয়ে নজর দিতে হবে। তবে সবকিছুই হবে বাস্তবতার নিরিখে।
তবে সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকা নিয়ে ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতাদের একাংশ। এ অংশটি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে ভোটে যাওয়ারই বিপক্ষে ছিলেন। ধানের শীষের প্রার্থীদের নিয়ে গুলশান কার্যালয়ে বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও এ নিয়ে কথা বলেন একাধিক প্রার্থী।
তাদের যুক্তি, নির্বাচন বর্জন করলেই দলের জন্য ভালো হতো। এর পক্ষে তারা নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা, প্রচারণার ক্ষেত্রে অনিয়ম, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের আচরণে নিরপেক্ষতার অভাবসহ বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেন। তবে অন্য অংশটি নির্বাচন বর্জনের বিপক্ষে।
তারা মনে করেন, এ নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থেকে এটিই প্রমাণিত হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচনে না থাকলে নির্বাচনের আসল চিত্র দেশের জনগণ ও বহির্বিশ্বকে দেখানো সম্ভব হতো না।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ফিরোজ যুগান্তরকে বলেন, আমি মনে করি এখন সব প্রার্থীরই তাদের সংসদীয় এলাকার দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। এমন নির্দেশনা আমরা কেন্দ্র থেকেও পেয়েছি। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ ভোটে যা হয়েছে দেশের জনগণ তা দেখেছে এবং জানেও।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ। বাস্তবতার নিরিখে বিএনপিকে সামনে পথ চলতে হবে। ভোটে কী হয়েছে তা নিয়ে বিশ্লেষণের কিছু নেই। সবারই বিষয়টি জানা। আমরা এ নির্বাচন ও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। সামনে একমাত্রই লক্ষ্য থাকবে দলকে গোছানো।
জানা গেছে, ভবিষ্যতে করণীয় ঠিক করতে বিএনপি সিনিয়র নেতারা ইতিমধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচির চিন্তাভাবনা চলছে। দলের নীতিনির্ধারকদের পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, বিএনপিকে এখন রাজনীতিটাই করতে হবে। তাদের রাস্তায় নামতে হবে। ভোটের অনিয়ম, সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com