মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার জগন্নাথপুরে কিশোরকন্ঠ মেধাবৃত্তি -২৪ সম্পন্ন জগন্নাথপুরে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জনশক্তি সমাবেশ জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবের সদস্য সংগ্রহ শুরু জগন্নাথপুরে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত জগন্নাথপুরে যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প সুনামগঞ্জে পিপি, অ্যাডিশনাল ও এপিপি নিযুক্ত হলেন জগন্নাথপুরের তিন প্রথিতযশা আইনজীবী জগন্নাথপুরে আজ থেকে এক মাসব্যাপী এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু জগন্নাথপুর ও শান্তিগন্জ্ঞ বাসীর সেবা করতে চাই; বিশাল সম্বর্ধনায় বিএনপি নেতা কয়ছর আহমদ

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দোটানায় বিএনপি

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দোটানায় বিএনপি

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক::
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়া না-নেয়া নিয়ে দোটানায় বিএনপি। দলের তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের বড় একটি অংশ এ নির্বাচন বর্জনের পক্ষে।
তারা বলছেন, ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনই প্রমাণ করে দলীয় সরকার ও বর্তমান সিইসির অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। বরং নির্বাচনে অংশ না নিলে নেতাকর্মীরাও হামলা-মামলার মুখে পড়বে না।
দলের আরেকটি অংশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে। তারা বলছেন, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপিকে নির্বাচনে যাওয়া উচিত। তাহলে নির্বাচনের প্রকৃত চিত্র দেশবাসী ও বহির্বিশ্ব জানবে। নির্বাচনে গেলে সংসদ নির্বাচনে ‘ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি’র যে অভিযোগ, তা আরও মজবুত হবে বলেও মনে করেন তারা। তবে তফসিলের পর দলের নীতিনির্ধারকরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ নিয়ে কথা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হলেও আতঙ্ক এখনও কাটেনি। সারা দেশ থেকে সংসদ নির্বাচনের অনিয়ম ও জালিয়াতির তথ্য সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করছি। এ অবস্থায় আবার উপজেলা নির্বাচন। এ নিয়ে আমরা কোনো আলোচনা করিনি। সময় হলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপি হয়তো উপজেলা নির্বাচনে যেতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তফসিল ঘোষণার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সূত্র জানায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বৃহস্পতিবার বিকালে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের প্রথমবারের মতো বিএনপির সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়।
বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা যুগান্তরকে বলেন, বৈঠকের পুরো সময়ই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপিতে তাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেখানে দলের কোনো সিনিয়র নেতা উপস্থিত ছিলেন না। বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে নেতারা মতামত দেন।
একপর্যায়ে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাদের মতামত জানতে চান। সেখানে উপস্থিত সবাই নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত দেন। তারা বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে ভোট ডাকাতির নির্বাচন বলছি। এখন যদি সেই সিইসির অধীনেই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেই, তাহলে বিশ্বাযোগ্যতা নষ্ট হবে।
এ ছাড়া নেতাকর্মীদেরও নতুন করে হামলা-মামলার মুখে ফেলতে চাই না। ওই নেতা জানান, তিন ঘণ্টা ধরে উপস্থিত সব নেতার মতামত শোনেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। মতামত শেষে তিনি বলেছেন, আপনাদের এ মতামত সিনিয়র নেতাদের জানাবেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে দলের করণীয় নিয়ে পর্যায়ক্রমে ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ অন্য নেতাদেরও মতামত নেয়ার কথা জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা যুগান্তরকে বলেন, নির্বাচনের পর আ’লীগের কর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। হামলা-মামলার ভয়ে এখনও অনেকে বাড়িছাড়া। এ পরিস্থিতিতে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিলে সম্ভাব্য প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের আবার মামলা-হামলার শিকার হতে হবে। জাতীয় নির্বাচনে ‘কারচুপির মাধ্যমে বিপুল বিজয়ের’ পর উপজেলা নির্বাচনে বিএনপিকে দাঁড়াতেই দেবে না ক্ষমতাসীন দল।
তৃণমূল নেতাদের মতে, মাঠপর্যায়ে দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের সবার বিরুদ্ধেই কমবেশি মামলা রয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জাতীয় নির্বাচনেও তারা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেননি, উপজেলা নির্বাচনেও সক্রিয়ভাবে মাঠে নামতে পারবেন না।
তাছাড়া সরকার সংসদ নির্বাচনের মতোই সর্বশক্তি দিয়ে উপজেলা নির্বাচনেও জোর করে বিজয় ছিনিয়ে নেবে। এ ধরনের নির্বাচনে যাওয়ার চেয়ে বর্জন করা দল এবং নেতাকর্মীদের জন্য মঙ্গলজনক। বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আ ক ন কুদ্দুসুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনই প্রমাণ করেছে দলীয় সরকার ও বর্তমান সিইসির অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না।
ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে না। সুতরাং উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আর যদি উপজেলা নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তাহলে তা হবে রাজনৈতিকভাবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, এই ইসির অধীনে কোনো নির্বাচন সঠিক হবে তা আমি মনে করি না। কারণ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হচ্ছে এ কমিশন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো ভবিষ্যতেও সব নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি হবে। তিনি বলেন, আগামী উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়া উচিত হবে না। তবে ধানের শীষ নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে যাব কি না, দল ও জোট সিদ্ধান্ত নেবে।
তবে বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা যুগান্তরকে বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলে ক্ষমতাসীন দল ভোট ডাকাতি করেছে তা আমরা বলতে পারতাম না। আমার ব্যক্তিগত মতামত- গণতান্ত্রিক দল হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে যাওয়া উচিত।
এ নির্বাচনে অংশ নিয়ে আমরা ক্ষমতাসীন দল ও সিইসির চেহারা আবারও দেশবাসীকে দেখাতে চাই। তবে নির্বাচনে যাওয়া না-যাওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতাদের মতামত নিয়েই দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।
সর্বশেষ ২০১৪ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপে ৯৭ উপজেলায় নির্বাচন হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ১১৭ উপজেলায় ভোট হয়। ওই বছর সব মিলিয়ে ৭ ধাপে ভোট হয়। তবে গতবার নির্দলীয়ভাবে উপজেলা নির্বাচনে ভোট হলেও এবার হবে দলীয় প্রতীকে। আগামী মার্চে দুই থেকে তিন ধাপে ভোট গ্রহণের বার্তা দিয়েছে ইসি। সেই আলোকে এ মাসের শেষ বা আগামী মাসের শুরুতে তফসিল হতে পারে। তবে ইসির সিদ্ধান্তের ওপর সব নির্ভর করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com