রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে পুষ্টি সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ জগন্নাথপুরে চিনা বাদাম প্রদর্শনী মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত টানা ৩য় বার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হলেন হারুন রশীদ জগন্নাথপুরের লহড়ী গ্রামে লন্ডন প্রবাসীর বাড়ীতে ডাকাতি: অস্ত্রসহ দুইজন গ্রেফতার জগন্নাথপুরে হারানো লাখ টাকা খুঁজে উদ্ধার করে দিল থানা পুলিশ জগন্নাথপুরে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের উদ্বোধন রানীগঞ্জ সেতুর পাশ থেকে বালু উত্তোলন- ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রতিবেদন দিতে আদালতের নির্দেশ জগন্নাথপুরে ধান চাল ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন: লটারির মাধ্যমে মনোনীত ৮১০ ভাগ্যবান কৃষক জগন্নাথপুর পৌরশহরে ৩৫ দোকানঘর  ভাড়া থানায় দিলেন ব্যবসায়ী গন জগন্নাথপুরে চুরি যাওয়া ৩টি টমটম উদ্ধার : গ্রেপ্তার ৪ 

ই-কমার্স: গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়া নিয়ে ধোঁয়াশা

ই-কমার্স: গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়া নিয়ে ধোঁয়াশা

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকাসহ দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্ডারকৃত পণ্যের টাকা গ্রাহকদের ফেরত দেয়া নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। সর্বশেষ পেমেন্ট গেটওয়েগুলোতে আটকে থাকা অর্থ ফেরতের প্রক্রিয়াও আটকে আছে। গেটওয়েতে আটকে থাকা গ্রাহকের ২১৪ কোটি টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া গত সপ্তাহেই শুরু করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই চিঠিতে যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা চলমান নেই, সেসব প্রতিষ্ঠানের নামে এসক্রো সার্ভিসে আটকে থাকা গ্রাহকের অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে অর্থ ফেরতের নির্দেশ দিয়ে চিঠি পাঠালেও সেই প্রক্রিয়া এখনো থমকে আছে। কারণ, কোন কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা নেই, এবং কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কয়টা মামলা রয়েছে, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে জানাতে পারেনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ফলে গ্রাহকের অর্থ ফেরতের বিষয়টি এখন পর্যন্ত অনিশ্চয়তার মধ্যেই রয়েছে। অন্যদিকে, গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই মামলা রয়েছে।
সুতরাং, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে মামলা চলমান থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর টাকা ফেরত দেয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তাতে ৯০ শতাংশ গ্রাহকই তাদের অর্থ ফেরত পাবেন না বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

ইভ্যালিসহ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গ্রাহকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের পর গত ১লা জুলাই থেকে সব লেনদেন পেমেন্ট এসক্রো সিস্টেমে করার নির্দেশ দেয় সরকার। এরপর থেকে ই-কমার্স থেকে পণ্য অর্ডারে সব টাকা পেমেন্ট গেটওয়েতে জমা হয়েছে। যা বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে পণ্য সরবরাহ করার পর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে মূল্য বুঝিয়ে দেয়ার কথা গেটওয়েগুলোর। তবে গত সেপ্টেম্বরে ইভ্যালিসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে পণ্যের অর্ডার করা গ্রাহকের সব টাকা নগদ, বিকাশ, ফস্টার করপোরেশনসহ বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকা পড়ে। এর পরিমাণ ২১৪ কোটি টাকা বলে জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর বাইরে এসক্রো পদ্ধতি চালুর আগে গত ৩০শে জুন পর্যন্ত ইভ্যালি, ধামাকাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছেও পণ্যের অগ্রিম পেমেন্ট করা গ্রাহকদের ৩৮৭ কোটি টাকা আটকে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়। এই টাকাও কোথায় কীভাবে রয়েছে এবং গ্রাহকরা আদৌ পাবেন কিনা তার নিশ্চয়তাও কেউ দিতে পারছে না।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা অর্থ গ্রাহকদের ফেরত দেয়ার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের একটি টিম কাজ করছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠিও দেয় মন্ত্রণালয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে গ্রাহকের অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র জানায়, গত বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি বৈঠক হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা নেই, সেসব প্রতিষ্ঠানের আটকে থাকা টাকা গ্রাহকদের কাছে ফেরত পাঠানো হবে। সেজন্য কোন কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, সেটা জানতে পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় মন্ত্রণালয়। যদিও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ ব্যাপারে এখনো কোনো কিছু জানানো হয়নি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান মানবজমিনকে বলেন, কোন প্রতিষ্ঠানে কয়টা মামলা আছে সেটা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। কিছু মামলা সিআইডিতে আছে আবার কিছু আছে এসবির কাছে, কিছু আছে ডিবিতে। সেজন্য মামলার তথ্যগুলো দিতে গত বুধবারের বৈঠক থেকে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আমরা চিঠি দিয়েছি। এর আগে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছিলাম। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদের কাছে মামলার তথ্যগুলো চাচ্ছে। এখন পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে ৭ দিনের মধ্যে আমাদের তথ্যগুলো দেয়ার কথা। সেটা পেলে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে পাঠাবো। তখন মামলার বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর টাকা গ্রাহকদের দেয়া হবে। তবে মামলা রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানের টাকা এবং যেসব পেমেন্ট এসক্রো সার্ভিস চালুর আগে হয়েছে সেসব টাকা পেতে গ্রাহকদের দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে জানান তিনি। সফিকুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে কোর্ট থেকে যখন আদেশ হবে তখন গ্রাহকরা টাকা পাবে। তবে এই প্রক্রিয়াটি অনেক দীর্ঘ।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই টাকা ফেরত পেতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন গ্রাহকরা। গ্রাহকদের সহযোগিতায় কাজ করছে কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস) নামে একটি ভোক্তা অধিকার সংগঠন। সংস্থাটি গত ২২শে অক্টোবর সাড়ে ৩০০ ভুক্তভোগীর সুনির্দিষ্ট তথ্য নিয়ে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা গ্রাহকের ৭০ কোটি টাকা ফেরত পেতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে। তবে রিটের জবাব এখনো দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে সিসিএস’র নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ  বলেন, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক গেটওয়েগুলোকে টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এখনো গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা নেই কেবল তাদের টাকাই ফেরত দেয়া হবে। কিন্তু এভাবে দিলে ৯০ শতাংশ গ্রাহকই টাকা পাবেন না। কারণ, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা চলমান। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, সেজন্য গ্রাহকের টাকা ফেরত না দেয়াটা যৌক্তিক নয়। তাই যদি হয় তাহলে ২১৪ কোটির জায়গায় ১৪ কোটিও গ্রাহকরা ফেরত পাবেন না। কারণ বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেই মামলা রয়েছে। তিনি বলেন, এখানে দেখার বিষয় গ্রাহক তার পণ্য পেয়েছে কিনা, না পেলে গ্রাহকের বিষয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই করে তাকে টাকা ফেরত দিতে হবে। টাকাতো জমা আছে গেটওয়েতে। সুতরাং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে সেজন্য গ্রাহক টাকা পাবে না, এটা হওয়ার কথা না।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com