শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১১ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বাসায় বৈঠক। নির্বাচনের মৌসুমে এমন বৈঠক ঘিরে আলোচনা সিলেটের সর্বত্র। এছাড়া বৈঠকে আমন্ত্রিতদের সকলে সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হওয়ায় তা নিয়ে রহস্যও দেখা দিয়েছে। মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ইতিমধ্যেই সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে নিজের প্রার্থিতার পক্ষে সমর্থন তৈরি করতেই বুধবার আলোচিত এ বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন বদরুজ্জামান সেলিম। সিলেট মহানগর বিএনপির প্যাডে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এমনটিই বলা হয়েছে।
বুধবার রাতে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমের শাহী ঈদগাহস্থ বাসভবনে বৈঠকে মেয়র প্যানেলের তিন সদস্যসহ ১৩ কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট রুখশানা বেগম শাহনাজ, ফরহাদ চৌধুরী শামীম, নজরুল ইসলাম মুনিম, দিনার খান হাসু, সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, আবদুর রকিব তুহিন, সিকান্দার আলী, এবিএম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল, রাজিক আহমদ, সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, সালেহা কবির শেপী।
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও বিএনপিরই নেতা। আরিফকে ডিঙিয়ে এ বৈঠকে ১৩ কাউন্সিলরের যোগ দেয়া রহস্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়া মহানগরের সভাপতি নাসিম হোসাইনও রয়েছেন প্রার্থিতার দৌড়ে। তাদের বাদ দিয়ে কেন একজনের সঙ্গে বৈঠকে বসলেন কাউন্সিলররা-তৃণমূলের মাঝেও এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অবশ্য তীব্র আলোচনার মধ্যেই কাউন্সিলররা বিবৃতি দিয়ে জানান, বদরুজ্জামান সেলিমের নিমন্ত্রণে তারা নিছকই এক চা চক্রে মিলিত হয়েছিলেন। এর মাঝে অন্য কোনো রহস্য নেই বলেই তারা জানান। বিবৃতিতে তারা দাবি করেন ‘চা-চক্র অনুষ্ঠানে মেয়র পদে নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা-বার্তা হয়নি।’ যদিও বদরুজ্জামান সেলিমের পক্ষে মহানগর বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য মাহবুব আহমদ চৌধুরীর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওই বৈঠককে মতবিনিময় সভা হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, মেয়র পদে নিজের মনোনয়ন লাভের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বদরুজ্জামান সেলিম তাকে বিজয়ী করতে দলীয় কাউন্সিলরদের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
ওই বৈঠক প্রসঙ্গে সিটি কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরীর ভাষ্য হচ্ছে- বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমের চায়ের দাওয়াতে তারা তার বাসায় গিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন, দলের প্রয়োজনে এ ধরনের নিমন্ত্রণে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। ফরহাদ চৌধুরী শামীম বলেন, আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে আমরা নগরীর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছি। তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কোনো কারণই নেই। আসন্ন সিটি নির্বাচনে দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষেই আমাদের অবস্থান থাকবে। শামীম জানালেন, তিনি নিজেও মেয়র পদে মনোনয়নের প্রত্যাশী তাই এখনই কাউকে তার সমর্থন জানানোর কোনো প্রশ্নই উঠে না।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা কাউন্সিলর দিনার খান হাসু মানবজমিনকে বলেন, সম্প্রতি মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিমের স্বাক্ষরে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী প্রার্থীদের বায়োডাটা ও এজেন্টদের নামের তালিকা, কেন্দ্রের তালিকা সরবরাহের জন্য ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নির্দেশনা দেয়া হয়। এ নিয়ে যাতে কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয় সেজন্য বৈঠক ডেকেছিলেন বদরুজ্জামান সেলিম। মায়ের অসুস্থতার কারণে সাধারণ সম্পাদক নাকি না পড়েই ওই নির্দেশনায় স্বাক্ষর করেছিলেন।
মেয়র পদে বদরুজ্জামান সেলিমকে সমর্থন করেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দিনার খান হাসু বলেন, প্রশ্নই আসে না। আমরা আরিফুল হকের সঙ্গেই আছি। তার নেতৃত্বেই আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। যে ১৩ কাউন্সিলের কথা উঠেছে তাদের মধ্যে ১১ জনই আরিফুল হকের পক্ষেই আছে। তবে ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর ব্যাপারে বলতে পারবো না।
Leave a Reply