শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
আব্বাকে মনে পড়ে  সুনামগঞ্জে কর্মী সম্মেলন সফলের লক্ষে জগন্নাথপুর জামায়াতের প্রচার মিছিল জগন্নাথপুরে তারুণ্যের উৎসবের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ  জগন্নাথপুরের স্বাস্থ্য ও রুচিসম্মত খাবারের নিশ্চয়তায় উদ্বোধন হলো মেজবান রেস্তোরাঁ ইংল্যান্ডের বার্ণলী সিটির সাবেক কাউন্সিলর কমিউনিটি নেতা মুজাক্কির আলীর স্বদেশ আগমন শান্তিগঞ্জে তারুণ্যের উৎসবের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ  জগন্নাথপুরে এনআইডি জালিয়াতির অভিযোগে নির্বাচন কর্মকর্তাসহ আটক ২  শান্তিগঞ্জে বরেণ্য শিক্ষাবিদ আব্দুর রউফ এর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত শিক্ষাবিদ মো. আব্দুর রউফ’র স্মরণ সভা আজ শান্তিগঞ্জে বিয়াম ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের শুভ উদ্বোধন

সিলেটে জামায়াত ঠেকাতে একাট্টা জোট নেতারা

সিলেটে জামায়াত ঠেকাতে একাট্টা জোট নেতারা

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক::
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের বিভিন্ন আসনে বিশেষ করে বড় দুই জোটের প্রার্থী হচ্ছেন কারা এ নিয়ে জল্পনার যেন শেষ নেই। তবে আলোচনার কেন্দ্রে এখন বিএনপি-জামায়াতের বিরোধ। গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকেই এই বিরোধের শুরু। সিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীকে সমর্থন না দিয়ে জামায়াতের একজন নেতা মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিরোধের জন্ম দেন।
সেই বিষয়টি মাথায় রেখে স্থানীয় বিএনপি আগামী জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতকে ছাড় দিতে নারাজ। বিএনপির এই অবস্থানকে জোরালো সমর্থন দিয়েছে ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো। দৃশ্যত ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে জামায়াত ঠেকাতে একাট্টা ২০ দলীয় জোটের স্থানীয় নেতারা। তবে এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ শীর্ষ নেতারা।
সিলেট জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা আতাউর রহমান সিলেট-৪ ও মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক সিলেট-৫, খেলাফত মজলিশের মুহাম্মদ মুনতাসির আলী সিলেট-২, মো. দেলোয়ার হোসেন সিলেট-৩, নেজামে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা আবদুর রকিব সিলেট-৬ এবং জামায়াতের মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী সিলেট-৫, মাওলানা হাবিবুর রহমান সিলেট-৬ ও মাওলানা লোকমান আহমদ সিলেট-৩ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তবে শেষ পর্যন্ত সিলেট-৫ ও ৬ আসন জামায়াতকে ছেড়ে দিতে পারে বিএনপি। এদিকে সিলেটের ছয়টি আসনের প্রত্যেকটিতে বিএনপির একাধিক প্রার্থী থাকলেও জামায়াতের বিরুদ্ধে সবাই একাট্টা।
এমন গুঞ্জনে সিলেট-৬ আসনের গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপি নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, জামায়াতকে ছাড় দেয়া হবে না। সিলেট-৫ আসনের জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরাও জামায়াতকে ছাড় না দেয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা জামায়াতের এক নেতা যুগান্তরকে জানান, জোটগত সিদ্ধান্তেই দুটি আসন জামায়াতকে দেয়া হবে। ভোটের হিসাবে বিএনপি থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই জামায়াত- দাবি করে তিনি বলেন, সবাই একসঙ্গে কাজ করলে আওয়ামী লীগকে হারানো সহজ। ২০০১ সালের নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরে জামায়াতের এই নেতা বলেন, গত নির্বাচনে জোটের প্রার্থী হয়েও মাওলানা হাবিবুর রহমান শরিকদের সহযোগিতা পাননি। এ খেসারত দিতে হয়েছে জোটগতভাবে।
কথা হয় খেলাফত মজলিশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মুহাম্মদ মুনতাসির আলীর সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, জোট নয় জামায়াতকে মনোনয়ন দেবে বিএনপি। তবে শরিক দলগুলো মিলে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সেটাই জোটের সিদ্ধান্ত। বিএনপির সিদ্ধান্ত শরিকদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হলে প্রস্তুতি অনুযায়ী নির্বাচন করব আমরা। সিলেট-২ আসনে ২০ দলীয় জোটের এই মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, জামায়াতের দায়িত্ব বিএনপির।
সিলেট জেলা জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সিলেট-৪ ও ৫ আসন কওমি মাদ্রাসা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় সেখানে আমাদের ভোট ব্যাংক রয়েছে, অতীতেও তার প্রমাণ মিলেছে। এবারও আমরা আশাবাদী।
এক প্রশ্নের জবাবে সিলেট-৪ আসনের ২০ দলীয় জোটের এই মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, জামায়াত নেতাদের জোটের প্রার্থী করা হবে এমনটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। অতীতে জামায়াত যে আচরণ করেছে তাতে জোটের কর্মী-সমর্থকরা তাদের জন্য কাজ করবে বলে মনে হচ্ছে না। জামায়াতকে প্রার্থী করা হলে পরিণতি ভালো হবে না।
যুদ্ধপরাধে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সাজা কার্যকর হওয়ার পর অনেকটা আত্মগোপনে চলে যায় দলের বেশির ভাগ নেতাকর্মী। তার পরও গত সিটি নির্বাচনে সিলেটে মেয়র পদে প্রার্থী দেয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরার কৌশল নিয়েছিল দলটি।
বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরীকে ২০ দল সমর্থন দিলেও জামায়াত দেয়নি। নিজেদের প্রার্থিতা ঘোষণা করে বিএনপি প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয় জামায়াত। এর পর থেকে সিলেট বিএনপির সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে আছে।
গত সিটি নির্বাচনের উদাহরণ টেনে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক যুগান্তরকে বলেন, জামায়াতের প্রার্থীকে আসনটি ছেড়ে দিলে দল ও জোটের সাধারণ কর্মীরা তা মেনে নেবে না। এসব আসনে সাংগঠনিকভাবে অস্থিত্ব সংকটেও পড়বে বিএনপি। নির্বাচনের ফলাফলও বিপক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আর সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম বলেছেন, সিলেট-৫ ও ৬ আসনে এবার বিএনপি থেকে জোটের প্রার্থী দেয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমরা কেন্দ্রকে বিএনপির ত্যাগী নেতাদের মধ্যে থেকে প্রার্থী বাছাই করার অনুরোধ করেছি। নেতাকর্মীদের জামায়াতের ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের ক্ষোভ রয়েছে। দেশের গণতন্ত্র উদ্ধারের স্বার্থে জোট ও ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত মেনে নেব।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট জেলা আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, এখন মনোনয়ন পাওয়ার জন্য অনেক কিছুই বলা হচ্ছে। এসব কথাবার্তার কোনো প্রভাব পড়বে না নির্বাচনে। এগুলো মুখের কথা, মনের নয়। যারা বলছে, তাদের অনেকেই আমার বন্ধু। মনোনয়ন পেলে এরাই নির্বাচনে বিজয়ী করতে মুখ্য ভূমিকা রাখবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com