বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টানা ৩য় বার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হলেন হারুন রশীদ জগন্নাথপুরের লহড়ী গ্রামে লন্ডন প্রবাসীর বাড়ীতে ডাকাতি: অস্ত্রসহ দুইজন গ্রেফতার জগন্নাথপুরে হারানো লাখ টাকা খুঁজে উদ্ধার করে দিল থানা পুলিশ জগন্নাথপুরে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের উদ্বোধন রানীগঞ্জ সেতুর পাশ থেকে বালু উত্তোলন- ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রতিবেদন দিতে আদালতের নির্দেশ জগন্নাথপুরে ধান চাল ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন: লটারির মাধ্যমে মনোনীত ৮১০ ভাগ্যবান কৃষক জগন্নাথপুর পৌরশহরে ৩৫ দোকানঘর  ভাড়া থানায় দিলেন ব্যবসায়ী গন জগন্নাথপুরে চুরি যাওয়া ৩টি টমটম উদ্ধার : গ্রেপ্তার ৪  জগন্নাথপুর পৌরশহরে ৫৫ দোকানঘর  ভাড়া থানায় দেওয়ার নির্দেশ পুলিশের জগন্নাথপুরে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ও নির্ধারিত তারিখে দোকানঘর  নিলাম হয়নি!  

জগন্নাথপুরে দৃষ্টিনন্দন আর্চ সেতু নির্মাণে ধীরগতি, দুর্ভোগে উপজেলাবাসী   

জগন্নাথপুরে দৃষ্টিনন্দন আর্চ সেতু নির্মাণে ধীরগতি, দুর্ভোগে উপজেলাবাসী   

নিজস্ব প্রতিবেদক : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে রাজধানীর হাতিরঝিলের আদলে দৃষ্টিনন্দন আর্চ সেতু নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলছে। উপজেলাবাসীর বহুল প্রত্যাশিত সেতুটির কাজ মন্থর গতিতে চলায় দুর্ভোগে  আছেন লক্ষাধিক জনসাধারণ । ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১.২৫ মিটার প্রস্থের এই আর্চ সেতুর  কাজ  চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার কথা।  কিন্তুু  স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ গত দেড় বছরে  সেতুটির  ৫০ ভাগ  কাজ ও সম্পন্ন হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেতুটির  নলজুর নদীর দুই তীরে দুইটি অ্যাবাটমেন্টের মধ্যে পূর্ব পাড়ের একটি অ্যাবাটমেন্টের নীচ অংশে ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। এর বিপরীতে পশ্চিম তীরের অ্যাবাটমেন্টের কাজ সবেমাত্র শুরু হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,  স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের  এ যাবৎ সবচেয়ে বড় স্থাপনা জগন্নাথপুরে নির্মাণাধীন আর্চ সেতু। সেতুটি বৃহত্তর সিলেট বিভাগের একমাত্র আর্চ সেতু। স্থানীয় সংসদ সদস্য  পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ মান্নান জগন্নাথপুর পৌরশহরে নলজুর নদীর উপর রাজধানীর হাতির ঝিলের আদলে এই দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন।  পরবর্তীতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে অনুমোদন পায়। ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি ১৩ কোটি ৪২ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে নলজুর নদীর উপর মধ্যভাগে ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১১.২৫ মিটার প্রস্থ এই আর্চ সেতুর অনুমোদন হয়। সেতুতে দুপাশে থাকবে ফুটপাত ও লাইটিং। মধ্যস্থানে কোন  পিলার থাকবেনা।  নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ফাঁক রেখে দু’পাশের দুটি অ্যাবাটমেন্টের মাধ্যমে  ইস্পাত দিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান হবে। ২০২২ইং সনের ২২ আগস্ট আর্চ সেতুটির কার্যাদেশ হলেও ৮ মাস পরে
চলতি বছরের মার্চ মাসে  কিশোরগঞ্জের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স  ‘ভাটি বাংলা এন্টারপ্রাইজ’ এ সেতুর  নির্মাণ কাজ শুরু করে।  স্হানীয় এমপি পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান ২৬ শে মার্চ আনুষ্ঠানিক ভাবে সেতুটির কাজের উদ্বোধন করেন।
টিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির ফলে
সেতুটির কাজ  ধীরগতি তে চলছে। ফলে নদীর দুপারের মানুষ চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সবধরনের যানবাহন পারাপার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মালবাহী ভারি ট্রাক না আসায় নিত্যপন্যের মূল্য ভয়াবহ আকার ধারন করেছে।
চলতি বছরের ডিসেম্বরে কাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা নির্ধারিত হয়। কিন্তু যথাসময়ে কাজ শুরু না করা, নদীতে পানি আসাসহ বিবিধ কারণে এর সময়সীমা আগা্মী বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত গড়ায়। তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, এর সময়সীমা এপ্রিল মাস পর্যন্ত বর্ধিত হলেও আশা করা যায় ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুটি দৃশ্যমান হবে।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর পৌরশহরে প্রবেশের প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম ছিল খাদ্যগুদামের সেতু।  সাবেক প্রেসিডেন্ট  এরশাদ সরকারের আমলে সুনামগঞ্জের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার মোশাহিদ আহমদ চৌধুরীর প্রচেষ্টায় খাদ্যগুদাম সংলগ্ন   নলজুর নদীর উপর খুবই মজবুত টেকসই সেতু নির্মান করা হয়। কিন্তু সেতুটি সরু থাকায় একেবারে ঝকঝকে ওই সেতুটি অপসারণ করে এখানে নির্মিত হচ্ছে আর্চ সেতু। জনসাধারণের সাময়িক সমস্যা নিরসনে নির্মাণাধীন সেতুর পাশ্ববর্তী স্থানে ডাইভারশন সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ওই সেতু ও ডাইভারশন সড়ক সরু থাকার কারণে ইতোপূর্বে দেবে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ডাকবাংলো সেতু দিয়ে মালবাহী ভারী যানবাহন  ঝুকিঁ নিয়ে চলাচল করছে।  ফলে পৌরশহরে প্রতিদিন লেগে আছে তীব্র যানজট। বিভিন্ন সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।  চরম  দুর্ভোগে রয়েছেন এলাকাবাসী ও পথচারীরা। তাই দ্রুত আর্চ সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, জবাবদিহি না থাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে মন্থরগতিতে সেতু নির্মাণের কাজ চলছে।
জগন্নাথপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সফিকুল হক  বলেন,  জগন্নাথপুর পৌরশহরে যাতায়াতে প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম ছিল খাদ্যগুদামের সেতু। ওই সেতু ভেঙে দৃষ্টিনন্দন  আর্চ  সেতু নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান  সেতুটি নির্মাণে গড়িমসি করায় জগন্নাথপুরবাসী চরম ভোগান্তিতে আছেন।
তাদের গাফিলতি ও খামখেয়ালীপনায় এলাকাবাসী খুবই কষ্টে আছেন।
প্রাক্কলন অনুযায়ী মানসম্মত নির্মান সামগ্রী দিয়ে  এই দৃষ্টিনন্দন আর্চ  সেতুটি দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতে নির্মান  করা হয়
এ ব্যাপারে মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান মহোদয়ের সদয় হস্তক্ষেপ ও উপজেলা প্রকৌশলী  মোঃ সোহরাব হোসেনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
স্টুডেন্ট কেয়ার জগন্নাথপুরের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান হিমেল বলেন, সেতুটির নির্মাণ কাজ ধীর গতিতে চলায় জরাজীর্ণ ডাকবাংলো সেতু ও বিকল্প সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এতে পৌর শহরে নিত্যনৈমিত্তিক যানজট লেগেই আছে। তাই সেতুটি দ্রুত  নির্মাণ করা জরুরী।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজার সাইফুল আলম বলেন, ‘নির্মানাধীন সেতুর পাশে বিদ্যুতের তার ও খুঁটি এবং পুরনো সেতু অপসারণ করতে সময় লেগেছে। এছাড়া বর্ষাকালে নদীতে পানি আসার কারণে কাজ বাধাগ্রস্থ হয়। তাই সেতুর কাজ শেষ করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মোঃ সোহরাব হোসেন বলেন,  অনুমোদন পাওয়ার পর চলতি বছরের মার্চ মাসে আর্চ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শুরুতেই কাজ সমাপ্তির সময়সীমা ছিল চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। কিন্তু মাটির কন্ডিশন, বর্ষাকালে নদীতে পানি আসা ও বিদ্যুৎ বিভাগের খুঁটি অপসারণ করতে কয়েক মাস সময় লেগে যায়। ব্রীজের গার্ডার, আর্চ গার্ডার, লং গার্ডার সম্পন্ন করতে আরো দু’মাস সময় লাগবে।
তিনি জানান,ইতি মধ্যে সেতুটির প্রায় ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
তাই আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে সেতুটির কাজ সম্পন্ন করার সময়সীমা বর্ধিত হয়।  তবে আশা করা যাচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাসে সেতুটি দৃশ্যমান হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কঠোর ভাবে মনিটরিং ও তদারকি করে যাচ্ছি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com