রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন
জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক:
ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্রটিকে নির্দিষ্ট দূরত্বে সেট করা হয়। এরপর সেটি লক্ষ্যবস্তু বরাবর উড়ে গিয়ে উপরে থাকতেই নিশানা স্থির করে। তারপর সাঁই করে উপুড় হয়ে পড়তে থাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে। যেন অলিম্পিক গেমে পুলে ঝাঁপ দিল কোনো ডাইভার। সঙ্গে সঙ্গে ‘তামা তামা’ হয়ে যায় নির্ধারিত নিশানা। আর উৎসস্থলে ফিরে যাওয়ার পরিবর্তে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় বিস্ফোরক ভর্তি আত্মঘাতী ড্রোনটি। এই হচ্ছে কামিকাজি ড্রোন-যা দিয়ে ইউক্রেনকে হতভম্ব করে দিচ্ছে রাশিয়া। ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, এই বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্রটির জন্ম ইরানে। তারা এটি রাশিয়াকে সরবরাহ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। আলজাজিরা। সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে নতুন করে বিমান হামলায় মারা গেছেন ২৫ জন। আহত হয়েছেন শতাধিক। কিয়েভ কর্তৃপক্ষ বলেছে, এটি প্রথম হামলার চেয়েও মারাত্মক। কারণ এসব হামলায় রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্রের পাশাপাশি ব্যবহৃত হয়েছে ইরানের তৈরি কামিকাজি ড্রোন। এই ড্রোন দিয়ে ইউক্রেনের কমপক্ষে ১০টি অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সোমবার বিস্ফোরক বোঝাই ও চালকবিহীন কামিকাজির ঝাঁক আছড়ে পড়েছে কিয়েভে। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে চারজন, ধ্বংস হয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। কিয়েভের মেয়র জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে এক তরুণ দম্পতিও ছিলেন-যারা তিন মাসের মধ্যে একটি সন্তানের প্রত্যাশায় ছিলেন। ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, তারা এদিন ৩৭টি ড্রোন আকাশেই ধ্বংস করে দিয়েছে।
নাম কেন কামিকাজি : কামিকাজি শব্দের অর্থ আত্মঘাতী। সাধারণত ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর ড্রোনগুলো আবার ঘাঁটিতেই ফিরে আসে, যদি প্রতিপক্ষ সেগুলোকে ধ্বংস না করে। কিন্তু এই ড্রোনগুলো আক্রমণের পরপরই ধ্বংস হয়। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অ্যালেক্স গ্যাটোপোলে বলেন, ‘এই অস্ত্রগুলো একটি অঞ্চলের ওপর ঘোরাফেরা করতে পারে। এগুলোকে লোটারিং যুদ্ধাস্ত্রও বলা হয়।’ তিনি জানিয়েছেন, এই ড্রোনগুলো ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মতো। তারা শত শত কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো অনেক ব্যয়বহুল। কিন্তু কামিকাজি সস্তা বলে এগুলো ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের দারুণ বিকল্প হতে পারে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া দুই হাজার ৪০০ কামিকাজি ড্রোন কিনেছে। কিন্তু এর নৌবহর দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে।
কোথা থেকে আসে : ইউক্রেন অভিযোগ করেছে, ইরান থেকে ড্রোনগুলো আমদানি করেছে রাশিয়া। ড্রোনগুলো ইরানে শহিদ-১৩৬ নামে পরিচিত। শহিদ হওয়া মানে প্রাণ দেওয়া, আর কামিকাজি মানে আত্মঘাতী হওয়া। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্ট মিখাইলো পোদোলিয়াক ইউক্রেনীয়দের হত্যার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে। ক্রেমলিন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। ইরান বলেছে, পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর উপস্থিতিই হচ্ছে যুদ্ধের মূল কারণ। পাশাপাশি রাশিয়ার অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি অস্বীকার করেছে তারা। গ্যাটোপোলোস বলেন, এ ধরনের ড্রোন রাশিয়ায় তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। অন্যদিকে, মস্কোর ড্রোনগুলো কৌশলগত দিক থেকে নিুমানের।
Leave a Reply