মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০১:৫৯ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে হারানো লাখ টাকা খুঁজে উদ্ধার করে দিল থানা পুলিশ জগন্নাথপুরে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের উদ্বোধন রানীগঞ্জ সেতুর পাশ থেকে বালু উত্তোলন- ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে প্রতিবেদন দিতে আদালতের নির্দেশ জগন্নাথপুরে ধান চাল ক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন: লটারির মাধ্যমে মনোনীত ৮১০ ভাগ্যবান কৃষক জগন্নাথপুর পৌরশহরে ৩৫ দোকানঘর  ভাড়া থানায় দিলেন ব্যবসায়ী গন জগন্নাথপুরে চুরি যাওয়া ৩টি টমটম উদ্ধার : গ্রেপ্তার ৪  জগন্নাথপুর পৌরশহরে ৫৫ দোকানঘর  ভাড়া থানায় দেওয়ার নির্দেশ পুলিশের জগন্নাথপুরে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ও নির্ধারিত তারিখে দোকানঘর  নিলাম হয়নি!   সাংবাদিক শংকর রায়ের মৃত্যু তে প্রবাসী  সাংবাদিক তৌফিক আলী মিনার এর শোক জগন্নাথপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শংকর রায় আর নেই: প্রেসক্লাবের শোক

ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী : টেনশনে আওয়ামী লীগ

ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী : টেনশনে আওয়ামী লীগ

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের বিদ্রোহীদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যারা বিদ্রোহী হবেন তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচনে তারা দলের মনোনয়ন পাবেন না। এখন এই বহিষ্কার নিয়ে দেখা দিয়েছে দোটানা। স্থানীয়ভাবে অনেক জনপ্রিয় নেতা এবার দলের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা এলাকায় আওয়ামী লীগের অবস্থান ধরে রেখেছেন। পাশাপাশি দলে তাদের অবদানও রয়েছে অনেক। তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলে তৃণমূল আওয়ামী লীগে বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।
দলের শক্তিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বহিষ্কার করা না হলে বিদ্রোহীর সংখ্যা আরও বাড়বে। দলের চেইন অব কমান্ডে ফাটল দেখা দিতে পারে। সবমিলিয়ে বিদ্রোহী ইস্যুতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে আওয়ামী লীগ।
এদিকে আগামী ১৯শে নভেম্বর দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হবে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক। ওই বৈঠকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তাদের দেয়া রিপোর্ট নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। সেখানে বিদ্রোহীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হতে পারে। দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা এখন ওই রিপোর্ট নিয়ে কাজ করছেন বলে মানবজমিনকে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান মানবজমিনকে বলেন, মনোনয়নের আগে নেতাকর্মীদের বার বার বোঝানো হয়েছে- বিদ্রোহী হলে বহিষ্কারসহ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এর পরও অনেকে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাদের বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত অটল রয়েছে। অর্থাৎ বিদ্রোহীদের বহিষ্কার করা হবে ও ভবিষ্যতে তাদেরকে আর কোনো নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে না। মনোনয়নে জনপ্রিয়তার বিষয়টি দেখা হয়নি বলে মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকে অভিযোগ করেছেন প্রসঙ্গে মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, ইলেকশন হচ্ছে একটা ডিবেটেবল বিষয়। সারা বিশ্বে নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। আমাদের দেশও এর বাইরে নয়। অর্থাৎ নির্বাচনে যারা মনোনয়ন পান তারা বলেন, মনোনয়ন সঠিক হয়েছে। আর যারা মনোনয়ন পান না তারা বলেন- সঠিক হয়নি, জনপ্রিয়তা দেখা হয়নি, স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে ইত্যাদি.. ইত্যাদি। তিনি বলেন, ১৯শে নভেম্বর দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে সাংগঠনিক সম্পাদকরা রিপোর্ট দেবেন। তখন আমরা বিদ্রোহী ও নির্বাচনের সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করবো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের অপর একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, বিদ্রোহীদের কারণে আওয়ামী লীগকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক একাধিকবার তৃণমূল পর্যায়ে বিদ্রোহী হওয়ার শাস্তির বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। কিন্তু তাতে তাদেরকে দমানো যায়নি। এখন এ বিশাল সংখ্যক বিদ্রোহীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলে আরেক বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। একই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন মানবজমিনকে বলেন, দলের পরবর্তী মনোনয়ন পাবেন না এবং দলীয় পদচ্যুত হবেন জেনেও নিজ দায়িত্বে অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হচ্ছেন এবং অনেকে নির্বাচিত হচ্ছেন। বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে ভাবিয়ে তুলেছে। আমার মনে হয়, বিষয়টি নিয়ে একটি নির্মোহ গবেষণা করা প্রয়োজন। যারা নির্বাচিত হচ্ছেন, নিশ্চয় তারা লোকালি জনপ্রিয় বা লোকাল কোনো সমীকরণে নির্বাচিত হচ্ছেন। তিনি বলেন, সব জায়গায় একরকম চিত্র নয়। সুতরাং কমন কোনো মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। একটি নির্মোহ স্টাডি করে এর থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে হবে। একই সঙ্গে সমাজে ছড়িয়ে পড়া অহিষ্ণুতা কমিয়ে এনে পরমতসহিষ্ণু একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। সবার উপরে দেশ- এই ভাবনায় সমগ্র জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারলে বাংলাদেশ আবার পথ হারাবে। দলের অপর সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন মানবজমিনকে বলেন, ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হলে সেখানে আমাদের সাংগঠনিক রিপোর্ট থাকবে। নির্বাচন, জয়লাভ, পরাজয় ও বিদ্রোহীদের বিষয়টি সেখানে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে কয়েকটি জায়গায় হয়তো আমাদের ভুল হয়েছে। সেটা হতেই পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর জরিপের ওপর ভিত্তি করে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তবে পুরো নির্বাচনটি হয়েছে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে। বিচ্ছিন্ন এবং বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘাতের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের ভোটে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে ‘নাকাল’ অবস্থার মধ্যে আওয়ামী লীগের চেয়ার?ম্যান প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৪৮৬ জন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ৩৩০ জন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। কিছু বিএনপি সমর্থিতও রয়েছে। এছাড়া জাতীয় পার্টির ১০, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চারজন এবং জেপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, খেলাফত মজলিশ ও জাসদের একজন করে প্রার্থী জিতেছেন। দুই ধাপ মিলিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ ইউপির মধ্যে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী ৭৫৩ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৪১১ জন। এদিকে সারা দেশের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ৫৬৯ জন প্রার্থী বিনা ভোটে জয়ী হতে যাচ্ছেন। এর মধ্যে ১০০ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। বাকিরা সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য। এ দফায় ১ হাজার ৪টি ইউপিতে ভোট হচ্ছে। ২৮শে নভেম্বর ভোটগ্রহণ করা হবে। গত বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। এদিনই স্পষ্ট হয়ে যায়, অনেকের চেয়ারম্যান ও সদস্য হতে ভোট লাগছে না। তৃতীয় ধাপের ভোটের আরেকটি দিক হলো- ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা কমেনি। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ১ হাজার ৬৯ নেতা অথবা কর্মী। দ্বিতীয় ধাপে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন প্রায় ৮৯৭ জন। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের পক্ষে কাজ করা নেতা-কর্মীদের দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। দলীয় নেতারা বিভিন্ন সময় কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে তাতেও কাজ হয়নি। বিদ্রোহীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তৃতীয় ধাপের ভোটেও সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে প্রচার শুরু থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত ২৭ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com