বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ০২:০৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বিএনপি সরকার গঠন করলে  প্রথম পর্যায়ে ৫০ লক্ষ পরিবার কে ফ্যামিলি কার্ড দেয়া হবে— কয়ছর এম আহমেদ হাসিনার বিচার চেয়ে ট্রাইব্যুনালে মাওলানা সাঈদীর মামলার সাক্ষী সুখরঞ্জন বালি ভোটাররা একটি সুস্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায় আছেন— কয়ছর আহমদ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন: কয়ছর এম আহমদ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে — কয়ছর এম আহমেদ শিগগিরই সরাসরি দেখা হবে: তারেক রহমান হারুন-বিপ্লবের সাত পদক বাতিল “রক্তের আখরে লেখা জুলাই বিজয় “ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও শহীদদের স্মরণে জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল জগন্নাথপুরে উপজেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন সংগঠনের জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত

খোকার জানাজায় মানুষের ঢল

খোকার জানাজায় মানুষের ঢল

জগন্নাথপুর নিউজ ডেস্ক :: একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার জানাজায় হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে। বাদ জোহর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দেশের মাটিতে এটি তার দ্বিতীয় জানাজা, প্রথমটি হয় বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়।
অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের শেষ মেয়র মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার লাশবাহী কফিন রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেয়া হলে সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীরা। এ সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে জড়ো হন কয়েক হাজার মানুষ। লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে নয়াপল্টন এলাকা।

রাজধানীর নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, কাকরাইল এলাকার সড়কে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের সমাগম। এ সময় ওই এলাকার সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার কিছু সময় আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে খোকার লাশ সেখানে নেয়া হয় নয়াপল্টনে। এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খোকাকে সর্বস্তরের জনতা শেষ শ্রদ্ধা জানান। শহীদ মিনারে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মুক্তিযোদ্ধা খোকার মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও পুষ্প অর্পণের মাধ্যমে প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় খোকার মরদেহবাহী গাড়িটি পৌঁছায়। পরে দক্ষিণ প্লাজায় অস্থায়ীভাবে স্থাপিত মঞ্চে মরদেহের কফিনটি রাখা হয়। সেখানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজার আগে বাবার রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া চান বড় ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব হয়েছেন মশিউর আলম রাঙ্গা, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, এলডিপির মহাসচিব ড. রেদওয়ান আহমেদ খোকার জানাজায় উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি নেতাদের মধ্যে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, জমিরউদ্দিন সরকার, এর মোরশেদ খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, জয়নুল আবদীন, ফজলুল হক মিলন প্রমুখ জানাজায় অংশ নেন।

এর আগে সাদেক হোসেন খোকার লাশ আজ সকাল ৮টা ২৮ মিনিটে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে।

খোকার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু তার মরদেহ গ্রহণ করেন। বিমানবন্দর থেকে খোকার মরদেহ জাতীয় সংসদ ভবনে নেয়া হয়। লাশবাহী গাড়িতে ছিলেন মির্জা আব্বাস।

ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার প্রথম জানাজা জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সর্বস্তরের বাংলাদেশিরা অংশ নিয়েছেন। জানাজা শেষে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।

বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় তার পরিবার।

সাদেক হোসেন খোকা সোমবার বেলা ১টা ৫০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মারা যান। ক্যান্সারে আক্রান্ত খোকা প্রায় পাঁচ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাসিত ছিলেন।

সবশেষ ১৮ অক্টোবর নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে ভর্তি হন খোকা। গত সোমবার তার শ্বাসনালি থেকে টিউমার অপসারণ করা হয়। নিউইয়র্ক সময় রাত ২টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় সোমবার বেলা ১টা ৫০ মিনিটে) তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালে সাদেক হোসেন খোকা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন গেরিলা যোদ্ধা। ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম সাদেক হোসেন খোকা বিএনপি থেকে এমপি নির্বাচিত হন। তার দল সরকার গঠন করলে তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালেও তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। পরে তাকে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী করা হয়। ২০০১ সালে তার দল সরকার গঠন করলে তিনি মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। ২০০২ সালে তিনি অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হন।

মৃত্যুর আগে বারবার দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছিলেন খোকা। সবশেষ হাসপাতালে ভর্তির আগে বন্ধু বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান টুকুকে টেলিফোনে বলেছিলেন, জীবনবাজি রেখে যে দেশ স্বাধীন করেছিলাম, সে দেশের মাটিতে ফিরতে পাব কিনা আল্লাহ জানেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com